Changing photo and signature of NID 2025 । জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তনের নতুন পদ্ধতি কি?
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) কার্ডের ছবি এবং স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক নাগরিকদের জন্য একটি সরলীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীর জন্য আবেদনকারীকে সশরীরে তাঁর নিজ এলাকার উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে উপস্থিত হতে হবে।
📸 পরিবর্তনের প্রক্রিয়া ও আবেদনের ধাপসমূহ:
আবেদন: ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তনের জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে সংশোধন ফরম-২ এর মাধ্যমে আবেদন জমা দিতে হবে।
ফি জমা দান: এই সংশোধনের জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি বাবদ ২৩০/- টাকা প্রদান করতে হবে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি প্রদান: ফি জমার প্রক্রিয়া এখন সম্পূর্ণভাবে মোবাইল ব্যাংকিং নির্ভর করা হয়েছে। নাগরিকগণ বিকাশ বা রকেট এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে “NID Info Correction” অ্যাপ্লিকেশন টাইপে এই ফি জমা দিতে পারবেন। উল্লেখ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সংক্রান্ত কোনো ফি এখন আর সরাসরি চালানের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় না।
সরাসরি ছবি ও স্বাক্ষর গ্রহণ: আবেদন জমা হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে আবেদনকারীর সরাসরি ছবি তোলা হবে এবং স্বাক্ষর গ্রহণ করা হবে। এই তথ্যগুলো অনুমোদনের জন্য সার্ভারে প্রেরণ করা হবে।
📜 অনুমোদন ও কার্ড সংগ্রহ:
জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন সংক্রান্ত আবেদনগুলো “খ” ক্যাটাগরির সংশোধন হিসেবে বিবেচিত হয়। এই কারণে, আবেদনটি সাধারণত সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে থাকে।
অনুমোদন বার্তা: আবেদনটি অনুমোদিত হয়ে গেলে আবেদনকারীকে এসএমএস-এর মাধ্যমে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
কার্ড সংগ্রহ: অনুমোদন পাওয়ার পর নাগরিকগণ অনলাইনে NID কার্ডের কপি ডাউনলোড করতে পারবেন অথবা সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস থেকে নতুন ছবি সংবলিত লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
এই নতুন পদ্ধতিটি নাগরিকদের সহজে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হালনাগাদ করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ছবি পরিবর্তন করা যায় না?
না, জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) ছবি এবং স্বাক্ষর পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াটি অনলাইনে করা যায় না। আইন অনুযায়ী এই পরিবর্তনটি করার জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই:
১. সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে। ২. সেখানেই তাদের সরাসরি ছবি তোলা হবে এবং স্বাক্ষর নেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপগুলো বাধ্যতামূলক কারণ ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বায়োমেট্রিক সংশোধন, যা সরাসরি নির্বাচন অফিসের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
🗞️ জাতীয় পরিচয়পত্র (NID): নতুন ভোটার নিবন্ধন, তথ্য ও ছবি সংশোধন, এবং কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয়
জাতীয় পরিচয়পত্র (ন্যাশনাল আইডি কার্ড) সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা, যেমন নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধন, কার্ডের তথ্য সংশোধন, এবং হারানো কার্ড উত্তোলন প্রক্রিয়া সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে। আগ্রহী নাগরিকেরা অনলাইন এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে আবেদন করে এই সেবাগুলো নিতে পারেন।
১. 🗳️ নতুন ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া
১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নতুন ভোটার, প্রবাসী বাংলাদেশী এবং তালিকা থেকে বাদ পড়া ভোটারগণ এই প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন করতে পারবেন।
আবেদনের ধরণ: অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সঠিকভাবে ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
ধাপসমূহ:
ধাপে ধাপে সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
নিজের পূর্ণনাম ছাড়া সকল তথ্য বাংলায় ইউনিকোডে পূরণ করতে হবে।
ফর্ম পূরণের পর পিডিএফ ফাইল তৈরি করে সেটি প্রিন্ট করতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
তথ্য যাচাই এবং ঠিকানা যাচাইয়ের পর কার্ড তৈরি হলে রশিদ জমা দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করা যাবে।
প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী: জন্ম নিবন্ধন সনদ, এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা পাসের সনদ (যদি থাকে), ঠিকানার প্রমাণ (ইউটিলিটি বিলের কপি/বাড়ি ভাড়ার রশিদ/হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ), নাগরিক সনদ, বাবা-মা এবং বিবাহিত হলে স্বামী/স্ত্রীর NID কার্ডের ফটোকপি, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, টিন নম্বর (যদি থাকে)।
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা: আপনি ইতোমধ্যে ভোটার হয়ে থাকলে পুনরায় আবেদন করা দন্ডনীয় অপরাধ।
২. 🛠️ জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সংক্রান্ত
কার্ডের তথ্য সংশোধনের জন্য এনআইডি রেজিস্ট্রেশন উইং বা উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে এবং সংশোধনের পক্ষে পর্যাপ্ত উপযুক্ত দলিলাদি সংযুক্ত করতে হবে। সকল সংশোধনের রেকর্ড সেন্ট্রাল ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য অন-লাইনে আবেদন করতে হবে এবং প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে (যদি পূর্বে করা না থাকে)।
প্রধান প্রধান সংশোধনের তথ্য ও প্রয়োজনীয় দলিল:
| সংশোধনের বিষয় | প্রক্রিয়াকরণ স্থান | প্রয়োজনীয় দলিলাদি (ক্ষেত্রবিশেষে) |
| ছবি পরিবর্তন (অস্পষ্টতা) | নিজে সরাসরি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে উপস্থিত হয়ে আবেদন করতে হবে। | – |
| নামের বানান সংশোধন | NID উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিস | এসএসসি/সমমান সনদ, জন্ম সনদ, পাসপোর্ট, নিকাহনামা, পিতা/স্বামী/মাতার NID-এর সত্যায়িত কপি। |
| বয়স/জন্ম তারিখ পরিবর্তন | NID উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিস | এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সনদের সত্যায়িত ফটোকপি (এসএসসি না থাকলে সঠিক বয়সের পক্ষে সকল দলিল, যা তদন্ত ও ডাক্তারি পরীক্ষা সাপেক্ষে সংশোধন হতে পারে)। |
| পিতা/মাতার নাম সংশোধন | NID উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিস | এসএসসি/এইচএসসি বা সমমান সনদ (যদি নাম উল্লেখ থাকে), পিতা, মাতা, ভাই, বোনের NID-এর সত্যায়িত কপি। |
| পিতা/মাতাকে ‘মৃত’ উল্লেখ | NID উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিস | মৃত সনদ দাখিল করতে হবে। |
| বিয়ের পর স্বামীর নাম সংযোজন | NID উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিস | নিকাহনামা ও স্বামীর আইডি কার্ডের ফটোকপি। |
| বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্বামীর নাম বাদ | NID উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিস | বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত দলিল (তালাকনামা)। |
| ঠিকানা পরিবর্তন/সংশোধন | বর্তমানে বসবাসরত এলাকার উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস | আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে আবেদন (ফর্ম ১৩), অথবা সাধারণ সংশোধনের আবেদন ফরমে ( বানানগত ভুলের জন্য)। |
| রক্তের গ্রুপ অন্তর্ভুক্ত বা সংশোধন | NID উইং/উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিস | রক্তের গ্রুপ নির্ণয়কৃত ডায়াগনোস্টিক রিপোর্ট। |
স্বাক্ষর পরিবর্তন: নতুন স্বাক্ষরের নমুনাসহ গ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র সংযুক্ত করে আবেদন করতে হবে। স্বাক্ষর একবারই পরিবর্তন করা যাবে।
তথ্য সংশোধনের সীমাবদ্ধতা: এক তথ্য শুধুমাত্র একবার সংশোধন করা যাবে (যুক্তিযুক্ত না হলে সংশোধন গ্রহণযোগ্য হবে না)।
৩. 💳 হারানো কার্ড উত্তোলন ও অন্যান্য সাধারণ জিজ্ঞাসা
হারিয়ে যাওয়া কার্ড উত্তোলন: নিকটতম থানায় জিডি করে জিডির মূল কপিসহ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে বা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে আবেদন করতে হবে।
হারানো ও সংশোধন: হারানো ও সংশোধন একই সাথে সম্ভব নয়। আগে হারানো কার্ড উত্তোলন করতে হবে, পরে সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে।
কার্ডে ইচ্ছাকৃত ভুল তথ্য: ইচ্ছাকৃত ভুল তথ্য দিলে জেল বা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হতে পারে।
NID নম্বরের ভিন্নতা: ২০০৮ সালের পর থেকে প্রিন্ট বা পুনঃতৈরি হওয়া সকল কার্ডের নম্বর ১৭ ডিজিটের হয়ে থাকে।
কার্ড সংগ্রহ: যে এলাকায় ভোটার রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে সেই এলাকার উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস থেকে ID Card সংগ্রহ করা যাবে।
ভবিষ্যতের কার্ডের মান: আগামীতে স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদানের কার্যক্রম চলমান আছে, যা উন্নত ও আধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ হবে।



