বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

দৈনিক শ্রমিকদের বেতন ২০২৫ । সরকারি অফিসের শ্রমিকের চেয়ে কর্মচারীর বেতন কম পায়?

সরকারি কর্মচারীদের বেতন ২০১৫ সালের আদেশ অনুসারে এখনও নতুন যোগদানকারীদের প্রদান করা হয়-শ্রমিকের মজুরি ২০২৫ সালের মে মাসে পুন:নির্ধারিত হয়েছে কিন্তু ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন পুন:নির্ধারিত হয়নি অদ্যবধি-আগামী ৬ মাসের মধ্যে পে কমিশন প্রতিবেদন দাখিল করলে ৯ম পে স্কেল ঘোষিত হবে – দৈনিক শ্রমিকদের বেতন ২০২৫

নিম্ন গ্রেডের একজন সরকারি কর্মচারীর মাসিক বেতন কত? বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের বেতন নির্ধারণ করা হয় ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী। এই বেতন স্কেলে ২০টি গ্রেড রয়েছে। সর্বনিম্ন গ্রেড হল ২০তম এবং সর্বোচ্চ গ্রেড হল প্রথম। ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী, সর্বনিম্ন গ্রেড (২০তম গ্রেড) এর একজন সরকারি কর্মচারীর মূল বেতন শুরু হয় ৮,২৫০ টাকা থেকে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া বিশেষ সুবিধা, মহার্ঘ ভাতা এবং অন্যান্য ভাতা যোগ হয়ে এই বেতন বৃদ্ধি পায়। যেমন, একজন ২০তম গ্রেডের কর্মচারীর মাসিক বেতন সাধারণত নিম্নরূপ হতে পারে: মূল বেতন: ৮,২৫০ টাকা। কর্মস্থল অনুযায়ী মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ (যেমন: ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৬৫% বা ৫,৬০০ টাকা)। চিকিৎসা ভাতা: ১,৫০০ টাকা (নির্ধারিত)। প্রতি সন্তানের জন্য ৫০০ টাকা হারে, সর্বোচ্চ ১,০০০ টাকা। যাতায়াত ভাতা: ৩০০ টাকা। টিফিন ভাতা: ২০০ টাকা। এই সকল ভাতা এবং বিশেষ সুবিধা যোগ করলে একজন সর্বনিম্ন গ্রেডের সরকারি কর্মচারীর মাসিক মোট বেতন প্রায় ১৭,৯৫০ টাকার কাছাকাছি হতে পারে। তবে উপজেলার ক্ষেত্রে ১৫-১৬ হাজার টাকা বেশি সব মিলিয়ে পাওয়া যায় না।

সরকারি অফিসের শ্রমিকের দৈনিক মজুরি কত? সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিকদের মজুরি হার সম্প্রতি বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন এই হার ১ জুলাই, ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে। এই মজুরির হার স্থানভেদে ভিন্ন হয় এবং এটি “দৈনিক ভিত্তিক সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫” অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, দৈনিক মজুরি হার নিম্নরূপ ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায়: ৮০০ টাকা। বিভাগীয় শহর এবং অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায়: ৭৫০ টাকা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে: ৭০০ টাকা। এই মজুরি হার দক্ষ ও অদক্ষ উভয় ধরনের শ্রমিকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এর আগে, বিভিন্ন অঞ্চলে মজুরি ছিল যথাক্রমে ৬০০-৫৭৫ টাকা, ৬০০-৫৫০ টাকা এবং ৫৫০-৫০০ টাকা। নতুন নীতিমালায় মাসিক ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং একজন শ্রমিককে মাসে ২২ দিনের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগ করা যাবে না।

সরকারি অফিসের শহরের একজন শ্রমিক মাসে সর্বোচ্চ কত টাকা পায়? সাম্প্রতিক নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি অফিসের দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের মাসিক আয়ের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া “দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫” অনুযায়ী, শ্রমিকদের নিয়োগ এবং বেতন নির্ধারণের কিছু নতুন শর্ত রয়েছে। শহরের একজন শ্রমিক, যেমন ঢাকা বা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কর্মরত, দৈনিক সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা মজুরি পাবেন। এই নীতিমালা অনুযায়ী, একজন শ্রমিককে মাসে ২২ দিনের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগ করা যাবে না। সুতরাং, একজন শহরের শ্রমিক মাসে সর্বোচ্চ যে আয় করতে পারেন তা হলো: ৮০০টাকা(দৈনিকমজুরি)×২২দিন=১৭,৬০০টাকা।  অতএব, একজন সরকারি অফিসের শহরের শ্রমিক মাসে সর্বোচ্চ ১৭,৬০০ টাকা আয় করতে পারেন। উল্লেখ্য, এটি শুধুমাত্র দৈনিকভিত্তিক সাময়িক শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য, যাদের মাসিক বেতন স্কেলে নিয়োগ দেওয়া হয় না।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতা ২০২৫ / জরুরি ভিত্তিতে ৯ম পে-স্কেল দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে

সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন এবং অন্যান্য ভাতার পরিমাণ সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিবর্তন হতে পারে। এছাড়াও, নবম পে স্কেল নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে বেতন কাঠামো এবং গ্রেড সংস্কারের প্রস্তাব রয়েছে। নতুন স্কেল কার্যকর হলে বেতন কাঠামোতে পরিবর্তন আসবে।

Caption: Pay Structure of Staff VS Labour Bangladesh

সরকারি কর্মচারী (পে স্কেল ২০১৫) বনাম সরকারি শ্রমিক (দৈনিক ভিত্তিক) ২০২৫ । অফিস যে যদি হিসাব ধরা হয় ৮২৫০/২২ দিয়ে ভাগ দিলে ৩৭৫ টাকা দৈনিক বেতনের কামলা কি সরকারী কর্মচারী?

  1. মূল বেতন ৮২৫০ টাকা। বাড়ি ভাড়া ৪৫০০ টাকা। চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা। টিফিন ২০০ টাকা। বিশেষ সুবিধা ১০০০ টাকা। সর্বমোট মাসিক বেতন = ১৫,৪৫০ টাকা।
  2. দক্ষ শ্রমিক দৈনিক ৮০০ টাকা। মাসে সর্বোচ্চ ২২ দিন ডিউটি করানো যাবে। মাসিক ভিত্তিতে খাটানো যাবে। সর্ব সাকুল্যে পায়। ৮০০ *২২ = ১৭৬০০ টাকা। সর্বমোট মাসিক মজুরি ১৭,৬০০ টাকা।

পার্থক্য শুধু শ্রমিক অন্যান্য সুবিধা পায় না?

হ্যাঁ। কোনো নির্দিষ্ট ভাতা নেই তারা বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত বা অন্যান্য নিয়মিত ভাতা পান না। উৎসব ভাতা নেই  তাদের জন্য কোনো উৎসব ভাতা বা নববর্ষ ভাতা প্রযোজ্য নয়। চাকরির অনিশ্চয়তা তাদের চাকরি স্থায়ী নয় এবং যেকোনো সময় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে তাদের নিয়োগ বাতিল হতে পারে। পেনশন নেই অবসর গ্রহণের পর কোনো পেনশন সুবিধা পান না। পদোন্নতি নেই তাদের কোনো পদোন্নতির সুযোগ নেই। প্রভিডেন্ট ফান্ড নেই তাদের জন্য কোনো প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা নেই। দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকদের বেতন প্রতিদিন যদি ৮০০/- করে হয় তাহলে- আমার আপনার (যারা বর্তমানে ১১ হতে ২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী আছি বেতন দৈনিক কত টাকা করে পাই অনেক কর্মচারীকে ভাবিত করে তোলে যে জাতীয় বেতন কাঠামো কিভাবে মজুরি হতে কম হয়?

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *