নৈমিত্তিক । অর্জিত । মাতৃত্বকালীন

Earn Leave 2025 । সরকারি কর্মচারীদের ছুটি (পূর্ণ গড় বেতনে এবং অর্ধ গড় বেতনে) কি?

সকল স্থায়ী (পার্মানেন্ট) সরকারি কর্মচারী নিম্নবর্ণিত রূপে পূর্ণ গড়বেতনে অর্জিত ছুটি ভোগ করিতে পারিবেন: (i) কর্তব্য কর্মে অতিবাহিতকালের ১/১১ ভাড় হারে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি অর্জিত হইবে এবং সর্বোচ্চ ৪ (চার) মাস পর্যন্ত এই ছুটি সঞ্চিত থাকিবে। এই চারি মাসের অতিরিক্ত অর্জিত ছুটি হিসাব ছুটি খাতে পৃথকভাবে রাখা হইবে। ব্যাখ্যা: প্রেসক্রাইবড লীভ রুলস এর ইংরেজী ভাষা এবং সংশোধনী বই এর শেষে পরিশিষ্ট আকারে দেওয়া আছে। এই জমাকৃত ছুটি হইতে চিকিৎসা প্রত্যয়নপত্র সাপেক্ষে, তীর্থযাত্রা, শিক্ষা অথবা চিত্তবিনোদন ছুটির জন্য বাংলাদেশ, বার্মা, শ্রীলংকা ও ভারতের বাহিরে ছুটি ভোগকালে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাইবে-Earn Leave 2025

(ii) পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি: ৪ (চার) মাসের অধিক ছুটি এক সংঙ্গে ভোগ করা যাইবে না। তবে চিকিৎসা প্রত্যয়নপত্র সাপেক্ষে অথবা তীর্থ যাত্রার্থে শিক্ষা অথবা চিত্তবিনোদনের জন্য বার্মা, শ্রীলংকা ও ভারতের বাহিরে ছুটির ক্ষেত্রে এই সময় সীমা ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত হইতে পারে।

দৃষ্টান্ত: হজ্বব্রত পালনার্থে পান্নু নামক জনৈক সরকারী কর্মচারী ৬ (ছয়) মাসরে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটির আবেদন করিলে, তিনি এই ছুটি পাইবার উপযুক্ত বিবেচিত হন।

(iii) অর্ধ গড় বেতনে ছুটিঃ কর্তব্যকর্ম কালের ১/১২ ভাগ হারে অর্ধগড় বেতনে ছুটি অর্জিত হইবে এবং এই ছুটি সঞ্চয়ের কোন উর্ধ্বসীমা নাই। চিকিৎসা প্রত্যয়পত্রের সমর্থনে ছুটির ক্ষেত্রে অর্ধ বেতনের ছুটিকে পূর্ণ বেতনের ছুটিতে পরিবর্তন করা যাইতে পারে। দুইদিন অর্ধগড় বেতন ছুটির পরিবর্তে একদিন পূর্ণ গড় বেতনের ছুটিতে পরিবর্তনের হার হিসাবে গণ্য হইবে। এইরূপ পূর্ণ বেতনের (পরিবর্তিত) ছুটি সর্বোচ্চ ১২ (বার) মাস পাওয়া যাইতে পারে।

দৃষ্টান্ত: জনাব মজিবুর রহমান চিকিৎসা প্রত্যয়ন পত্র সাপেক্ষে ৬ (ছয়) মাসের ছুটি গ্রহণ করিয়াছেন। তাহার পূর্ণ গড় বেতনের ছুটির খাতে ৩ (তিন) মাস ছুটি জমা আছে। তিনি অর্ধগড় বেতনের ৬ (ছয়) মাস ছুটির পরিবর্তে অতিরিক্ত তিন মাস পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি পাইতে পারেন, যদি ৬ (ছয়) মাস অর্ধ গড় বেতনে ছুটি প্রাপ্য থাকে।

নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯

অর্জনকৃত ছুটি বলতে একজন সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদকালে কাজ করার বিনিময়ে জমা হওয়া ছুটি বোঝানো হয়। বাংলাদেশে এই ছুটি ‘বেতনসহ ছুটি’ বা ‘Earned Leave’ হিসেবে পরিচিত। এটি চাকরিজীবীর অধিকার এবং এর জন্য কোনো বেতন কাটা হয় না।

কীভাবে অর্জিত ছুটি গণনা করা হয়? একজন সরকারি কর্মচারী প্রতি ১১ দিন কর্মদিবসের জন্য ১ দিন করে অর্জিত ছুটি পেয়ে থাকেন। এই ছুটি সাধারণত চাকরিজীবীর ছুটির অ্যাকাউন্টে জমা হয়। অর্জিত ছুটি মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: একজন কর্মচারী একবারে সর্বোচ্চ ১২০ দিনের অর্জিত ছুটি ভোগ করতে পারেন। বিশেষ পরিস্থিতিতে (যেমন- বিদেশে চিকিৎসা বা শিক্ষা) সরকার চাইলে এই ছুটির মেয়াদ বাড়াতে পারে। একজন কর্মচারী তার চাকরিজীবনে সর্বোচ্চ ১৮ মাস বা ৫৪০ দিন পর্যন্ত অর্জিত ছুটি জমা রাখতে পারেন। এর বেশি হলে অতিরিক্ত ছুটি বাতিল হয়ে যায়।

অর্জিত ছুটি কেন গুরুত্বপূর্ণ? বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যের জন্য একজন কর্মচারী দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার পর তার শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামের জন্য এই ছুটি নিতে পারেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পরিবারের জরুরি প্রয়োজনে, যেমন- অসুস্থতার কারণে বা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এই ছুটি ব্যবহার করা যায়। অবসরের পর নগদকরণ চাকরি থেকে অবসরের সময়, যদি কোনো কর্মচারীর জমা হওয়া অর্জিত ছুটি থাকে, তবে তিনি সেই ছুটির সমপরিমাণ অর্থ পেতে পারেন। এটি ‘ছুটি নগদায়ন’ (Leave Encashment) নামে পরিচিত।

অর্জিত ছুটির জন্য কি নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করতে হয়? আবেদনকারীকে অবশ্যই তার ছুটি মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে। ছুটি মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে কোনো কর্মচারীর ছুটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। অর্জিত ছুটি মঞ্জুর করার জন্য আবেদনকারীর ছুটির অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত ছুটি জমা আছে কিনা, তা যাচাই করা হয়। সংক্ষেপে, অর্জিত ছুটি হলো একজন সরকারি কর্মচারীর চাকরির একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা, যা তাকে কাজ করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন ও স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।