সরকারি চাকুরিজীবিদের মধ্যে কাজ/কর্ম ফাঁকি দেওয়ার একটি প্রবনতা দেখা যায়। সুযোগ পেলেই একটু অফিস ফাকিঁ দিয়ে থাকি আমরা। কিভাবে আপনি ভাল ফাকিবাজ হয়ে উঠতে পারবেন সে নিয়েই আলোচনা করবো-সরকারি অফিস ফাঁকির ট্রিকস ২০২৪
সরকারি কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে? সত্যিকার অর্থে সরকার অফিসে কিছু কর্মচারী সারাদিন কাজ করে আর কিছু কর্মচারী সারাদিন এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ায়। যারা কাজ করেন ভুল তাদেরই হয়, যারা ঘুরে বেড়ান কাজ না করে এ টেবিল ওটেবিল এ আড্ডায় মত্ত তাদের আর ভুল কি কাজই তো করে না তারা। এতো কঠোর আইন থাকলেও কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের কর্ম ফাকিঁর কিছু কৌশল রয়েছে।
সব বস কি তেল মারা পছন্দ করে? হ্যাঁ। মানুষ মাত্রই চায় কেউ তাকে খুব গুরুত্ব দিক এবং ইয়েস বস ইয়েস বস করুন। এমন অফিস প্রধান খুব কমই পাবেন যারা তেল মারা পছন্দ করে না। অফিসের বস কোন দিকে গেলে পিছনে পিছনে দু/চারজন দৌড়াক এটি সব বসই চায়। বিশেষ করে অফিস প্রধান চায় কর্মচারীগণ স্যার স্যার বলে চাটুকারিতায় নুয়ে পড়ুক। এমন বস প্রায় ৯৮% ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই কাজ থেকে দূরে থাকুন বা সবর্দা তৈল মর্দন করুন। বেসরকারি অফিস শুধু তৈল মর্দন নয় বরং কাজও করতে হয় কিন্তু সরকারি অফিসে শুধু তৈল মর্দন করেই বছরের পর বছর পার করে দেয়া যায়।
অফিসে কে বেশি বিপদে পড়ে? সরকারি অফিসে সবচেয়ে বেশি যারা কাজ করেন তারাই বিপদে পড়েন। সৎ ব্যক্তিগণও ঝামেলায় পড়েন। অফিসের বেশিভাগ কাজ যিনি করবেন তিনি যেমন বকা ঝকা সহ্য করবেন। তেমনি ভুলও বেশি হবে। আপনি মাসে ৫টি কাজ করবেন তবে সঠিক এবং শুদ্ধভাবে করতে পারবেন কিন্তু যদি ৫০টি কাজ করেন সেখানে ২টি ভুল হবে। ঐ দুটি ভুলের জন্যই ক্ষমা পাবেন না। অন্য দিকে কিছু লোক গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরবে এবং বসকে তৈল মেরে ঘুরবেন তারা সব সময়ই বস এর প্রিয় লোক হিসেবে চিহ্নিত থাকবেন।
দায়িত্ব পালনে অবহেলা কৈফিয়ত তলব? হ্যাঁ। কাজ না করলে কৈফিয়ত তলব করতে পারেন বস
সরকারি অফিসে অলস সময় কাটানোর পদ্ধতি ২০২৪ । আসুন ফাঁকি দেয়ার কৌশলগুলি বিস্তারিত জেনে নিই
- ১। ছুটি কাটিয়ে এসে অসুস্থ্যতার সার্টিফিকেট দাখিল করে অর্জিত ছুটির আবেদন করুন।
- ২। সুযোগ পেলেই নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে বার্ষিক ২০ দিন ছুটি কাটিয়ে ফেলুন।
- ৩। গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব থেকে দূরে থাকুন।
- ৪। যতদূর সম্ভব বস থেকে দূরে থাকুন।
- ৫। কোন ভাবেই দায়িত্ব কাঁধে নিবেন না।
- ৬। আর যাই হোক সফলভাবে কোন কাজই সম্পন্ন করতে যাবেন না।
- ৭। আগ বাড়িয়ে বলবেন না যে, এই বা সেই বা ঔই কাজটি আপনি করতে পারেন।
- ৮। লাম্পগ্র্যান্ট ১৮ মাস এবং পিআরএল ১২ মাস মোট ৩০ মাস ছুটি জমা রেখে সব অর্জিত ছুটি হিসাব করে কাটিয়ে ফেলবো।
- ৯। নৈমিত্তিক ছুটিগুলো সরকারি বা সাপ্তাহিক ছুটির সাথে সংযুক্ত করে নিয়ে পুরো ২০ দিনই কাটিয়ে দিবো।
- ১০। অফিসে প্রতিদিন আসতে হয় এমন কোন কর্তব্যই সঠিক ভাবে পালন করতে যাবো না।
- ১১। না হয় দু’একটি নোট খেলাম, তবু কাজের প্রতি সিরিয়াস হবো না।
একটি কাজ নিয়ে বসে থেকে সময় পার করে দিতে হবে?
হ্যাঁ। বস কোন কাজ দিলেই সেই একটি কাজ দিয়েই দিন পার করে দিবেন, কারণে অকারণে ছুটিতে কাটাতে থাকবেন, কেউ কোন কাজ দিলেই বলবেন, “পারি না”। ব্যাস হয়ে গেল, “পারি না” শব্দ দুটির চেয়ে বড় কোন অজুহাত এবং হাতিয়ার আর কিছু নেই। বাবু সেজে অফিসে ঘুরে বেড়াবেন আর যাই হোক বসের সামনে পড়লে প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকবেন। চেষ্টা করবেন বসের সামনে না যেতে। এ ভাবেই আপনি ধীরে ধীরে মস্তবড় ফাঁকিবাজ হয়ে যাবেন। চেষ্টা করুন এ কাজে ব্যার্থ হবেন না নিশ্চয়ই।
কাজে ফাঁকি দেওয়া কি ভাল কাজ? না। অবশ্যই না। ফাঁকিবাজ হওয়া মোটেই ভাল কিছু নয়, একদিন হয়তো নিজের কাছেই ধরা খাবেন। সেদিন হয়তো আপনার মনে হবে কাজ না শিখে ভুল করেছেন। সেদিন হয়তো আর নতুন পথ খুজে পাবেন না। সেই রকম কর্মকর্তার পালায় পড়ে হয়তো প্রতিদিনই আপনাকে বকাঝকা খেতে হবে। হয়তো প্রতিদিনই আপনি অপমান অপদস্ত হবেন কাজ না জানার কারণে। তখন না হয় মনে হতেই পারে, বছরের পর বছর কাজ না করেই আপনি মাইনে নিয়েছেন। আপনার আয় অর্থাৎ বেতন ভাতা হালাল হয়নি। ধ্যাত, বাদ দিন এগুলো একজন ফাঁকি বাজের এই কথাগুলো মনে করা ঠিক হবে না।