ডিজিটাল রেকর্ড আদালতে গ্রহনযোগ্য হইবে – বিচার ব্যবস্থায় একটি নতুন যুগের সূচনা হলো। ইলেকট্রনিক্স রেকর্ড (কল রেকর্ড, CCTV Footage) এবং ডিজিটাল ডেটা আদালতে গ্রহণযোগ্য সাক্ষ্য হিসাবে বিবেচিত হবে।

Expert Opinion নিয়েও ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। আশা করি, এই সংশোধনীর ফলে অনেক সত্য ঘটনা উন্মোচিত করা যাবে এবং বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার পাওয়া সহজ হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের আইন আদালতেও এখন মোবাইল ফোন, সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও রেকর্ড আদালতে প্রমাণ হিসেবে দাখিল করা যাবে।

বাংলাদেশে ডিজিটাল বা অডিও-ভিডিও সাক্ষ্যের সাক্ষ্যগত মূল্য নির্ধারণে এখনও সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন হয়নি। যাই হোক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-২০১৮ এর মতো কিছু স্পেশাল আইন ইতোমধ্যে প্রণীত হয়েছে, যা কিছুটা হলেও স্বস্তির। তবে বর্তমানে এভিডেন্স আইন ১৮৭২ সংশোধন করার ফলে এখন আদালতে অডিও ভিডিও আদালতে গ্রহণযোগ্য প্রমানক হিসেবে দাখিল করা যাবে।

বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতির ফলে মানুষের জীবনের বড় একটি অংশ দখল করে নিয়েছে প্রযুক্তি। মানুষ দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সকল কাজেই প্রযুক্তির ব্যবহার করে। এমনকি মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অপরাধ ঘটছে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে সুদক্ষ অপরাধীরাও যেকোনো অপরাধ বা হত্যাকাণ্ড করার সময় নিজের অজান্তেই রেখে যাচ্ছে অপরাধের নানা প্রমাণ সেটা অডিও, ভিডিও, ছবিও হতে পারে। সম্প্রতি আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও এমন হয়েছে। খুনিদের অজান্তেই সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে তাদের খুনের দৃশ্য। শুধু আবরার নয়, বর্তমানে এমন প্রচুর অপরাধ ঘটছে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে। যেগুলোর সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়ে যাচ্ছে সেই ইন্টারনেট ও সংশ্লিষ্ট ডিভাইসগুলোতেই। যেমন— কোনো ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি বা চাঁদার জন্য ভীতি প্রদর্শন করে তাহলে সেটা দণ্ডবিধির অধীনে গুরুতর অপরাধ। আর কেউ যদি এই অপরাধগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে, ই-মেইল বা মোবাইলের মাধ্যমে ঘটিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে সংশ্লিষ্ট স্ক্রিনশট কিংবা মোবাইলের অডিও রেকর্ড, সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও, ইলেকট্রনিক মেইল, সোস্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন কমেন্টস, ডিজিটাল সিগনিচার, মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড, টেক্সট রেকর্ড, এটিএম ট্রান্স্যাকশন লগ, ওয়ার্ড প্রসেসিং ডকুমেন্ট, ইন্টারনেট ব্রাউসার হিস্টোরি, গ্লোবাল প্রসেশনিং সিস্টেম ট্র্যাক, কম্পিউটার ব্যাকআপ প্রভৃতি। কিন্তু প্রযুক্তিগত এসব প্রমাণের বিষয় সম্পর্কে সাক্ষ্য আইনে কোনো সুস্পষ্ট উল্লেখ না থাকায় এসব জিনিস সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণে বিচারক ও আইনজীবীকে গলদঘর্ম হতে হয়। অনেক সময় আইনের দোহাই দিয়ে এগুলো তারা সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণও করে না। এতে করে অনেক ক্ষেত্রেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বাধাগ্রস্ত হয়। এখন থেকে আর আদালতকে ফাকিঁ দেওয়ার সুযোগ নেই।

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। এ সময় আসামির পক্ষে হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক দাবি করেন, ‘সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী আদালতে অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং কোনো সাক্ষ্য হতে পারে না।’

ডিজিটাল রেকর্ড আদালতে গ্রহনযোগ্য হইবে / আদালতে অডিও ভিডিও রেকর্ড গ্রহণযোগ্যতা পেল।

Evidence (Amendment) Act 2022

Evidence (Amendment) Act 2022 । কল রেকর্ড, CCTV Footage এবং ডিজিটাল ডেটা আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে

Evidence (Amendment) Act 2022 এর অনুচ্ছেদ গ সন্নিবেশিত হইবে।

যে সকল প্রমানক এই সংশোণীর আওতায় গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হইবে।

  1. Digital Signature
  2. Digital Record
  3. Chart, Maps and Digital Record
  4. Digital record in Megnatic Media
  5. Pendrive Information

পাশ্ববর্তী ভারতে কি ডিজিটাল রেকর্ড আদালতে গ্রহণযোগ্য?

হ্যাঁ। অবশ্যই। ভারতে ডিজিটাল রেকর্ড গ্রহণযোগ্য আইন পাশ হয়েছে। তবে বাংলাদেশে এ আইন সংশোধন করার ফলে বিচার কার্য আরও সহজ করা হয়। তবে সুক্ষ্ম বিচার কার্য পরিচালনার দ্রততর ও সহজতর হল।

ভিডিও ফুটেজ সাক্ষ্য কি না ?

বরগুনার প্রকাশ্যে কুপিয়ে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হওয়ার প্রেক্ষিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছে শুধুমাত্র এই ভিডিও ফুটেজ এর উপর ভিত্তি করে বিচার করে আসামিদের সাজা দেওয়া যাবে কিনা।  বিভিন্ন পোস্টে দেখছি অনেকেই আন্দাজে আবেগ তাড়িত হয়ে ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে বিচার করে সাজা দেওয়ার কথা বলছেন ৷ দায়রা আদালত যে সাক্ষ্য আইনের ভিত্তিতে মামলা বিচার করে থাকে এবং ওই সাক্ষ্য আইনে সাক্ষ্যের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেই সংজ্ঞা অনুসারে ভিডিও ফুটেজ সাক্ষীর মধ্যে পড়ে না ৷ তবে এখন নতুন আইন জারির ফলে ভিডিও ফুটেজ গ্রহণযোগ্য হবে।

Evidence (Amendment) Act 2022 । কল রেকর্ড, CCTV Footage এবং ডিজিটাল ডেটা আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে: ডাউনলোড