বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

সরকারি বেতনে বৈষম্যের ঠাই নাই ২০২৫ । গ্রেড ব্যবধান নিম্নগ্রেডে ৪.২৫ উচ্চ গ্রেড ২০.৪ % তা হবে না

আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব সরকারি কর্মকর্তা বনাম কর্মচারীদের মধ্যে যে বৈষম্য বিরাজমান তা নিয়ে। ১৯৭৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পে স্কেল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ১৯৭৩ থেকে বর্তমান পে স্কেল পর্যন্ত গ্রেড ০১-২০ পর্যন্ত প্রতিটি পে স্কেলে বৈষম্য বাড়তে বাড়তে চরম পর্যায়ে এসে পৌছেছে-সরকারি বেতন বৈষম্যে ঠাই নাই ২০২৫ 

পে স্কেল ২০১৫ তে কি বৈষম্য রয়েছে?

২০১৫ সালের পে স্কেলে সুক্ষ্ন কারচুপির মাধ্যমে ১১-২০তম গ্রেডের সকল কর্মচারীদের ঠকানো হয়েছে। কর্মকর্তাদের বেতন ১৬০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৮০০০ টাকা করা হয়েছে। যেখানে কর্মচারীদের বেতন ৮২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২৫০০ টাকা করা হয়েছে। ১০ম-১ম গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে ৬২০০০ টাকা। অপর দিকে ১১তম-২০তম গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪২৫০ টাকা। বাংলাদেশসহ ৫টি দেশের পে-স্কেলের তুলনামূলক আলোচনা।

সরকারি চাকরি সোনার হরিণ? আমরা যারা সরকারি চাকরি করি তাদের মধ্যে ১০-২০ তম গ্রেডে কর্মচারীগণ কোন রকম চিন্তা ভাবনা ছাড়াই চাকরি করি। বেতন বৈষম্য দেখলে আপনি আতকে উঠবেন। সৈরাচারি বেতন ব্যবস্থা আমলা তান্ত্রিক জটিলতার কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য দেশের সাথে একটি তুলনামূলক আলোচনা করবো। এ সোনার হরিণ যারা আকড়ে ধরে আছে তারা এখন অসহায়।

বড় বৈষম্যটা কোথায়?  শতাংশে দেখলে বুঝা যায় বৈষম্যটা। কর্মকর্তাদের জন্য ১২৫০০ থেকে ৭৮ হাজার পর্যন্ত শুধুমাত্র মূল বেতনে ১০তম -১ম গ্রেডে প্রতি ধাপে প্রায় ২০.৪ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল বেতনে ২০.০৪% বেতন প্রতি প্রমোশন এ বৃদ্ধি পায়। গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি ২০% এর অধিক হওয়ায় বার্ষিক ৫% ইনক্রিমেন্ট বা যে কোন প্রকার ফিক্সেশনের তাদের আর্থিক সুবিধা বেশি হয়ে থাকে ফলে তারা প্রমোশনে অনুপ্রাণিত হন। নবম পে স্কেলের সর্বশেষ খবর । কবে দিবে পে স্কেল?

কর্মচারীদের গ্রেড ব্যবধান জানেন? কর্মচারীদের জন্য ৮২৫০ থেকে ১২০০০ হাজার পর্যন্ত শুধুমাত্র মূল বেতনে ১১তম -২০তম গ্রেডে প্রতি ধাপে প্রায় গড়ে ৪.২৮ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল বেতনে ৪.২৮% বেতন প্রতি প্রমোশন এ বৃদ্ধি পায়। গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি ৪.২৮% এর অধিক হওয়ায় বার্ষিক ৫% ইনক্রিমেন্ট বা যে কোন প্রকার ফিক্সেশনের তাদের আর্থিক সুবিধা খুবই নগন্য ফলে তারা প্রমোশনে অনুপ্রাণিত হন না বরং বদলিজনিত বিরম্বনায় পড়ে।

সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে গ্রেড ব্যবধান গড়ে ৪.২৮% অন্যদিকে কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে গ্রেড ব্যবধান ২০.৪% এটি খুবই বৈষম্য হয়েছে

এ সংক্রান্ত বৈষম্যের তালিকাটির JPG ফরমেট সংগ্রহে রাখতে পারেন: ডাউনলোড

মূল্যস্ফিতির সাথে বেতন বৃদ্ধি সমন্বয় হচ্ছে না কেন?

দেশের বাজারে পন্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। তাছাড়া রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমদানি রপ্তানিতে বিশ্বব বাজার সহ আমাদের দেশেও ভাটা পড়েছে। চলতি অর্থ বছরেও দেশের বাজারে মূল্যস্ফিতি ১০.১৮ ছাড়িয়েছে। প্রতিবছর ৫% হারে সরকারি কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়। সে হিসাবে দেখা যাবে যে, প্রতি বছর যে হারে মূল্যস্ফিতি বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় সেই হারে বেতন বৃদ্ধি হয়না। তাই দ্রব্য মূল্যের সাথে বেতন ভাতাদি এখন সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাছাড়া চলতি বছর দ্রব্যমূল্য ১৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পে স্কেল জারি হওয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ১১-২০ গ্রেড ভূক্ত কর্মচারীগণ মাস চালাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে, কেউ কেউ ঋণের পথ বেছে নিচ্ছে ফলে ধার দেনার বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। অপর দিকে যাদের সামান্য সঞ্চয় ছিল তারা ইতোমধ্যে তা ব্যয় করে বসেছে। মহার্ঘ ভাতা ২০২৪ । এটি পে স্কেল অন্তবর্তীকালীন সময়ে প্রদান করা হয়

সরকার কি ৯ম পে স্কেল দিবে?

হ্যাঁ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নবম পে কমিশন গঠন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই কমিশন গঠন করেছে। সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন পে স্কেল বা বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়, তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে দাবি উঠেছিল। নতুন গঠিত এই কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান। কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতেই নতুন বেতন কাঠামো অর্থাৎ ৯ম পে স্কেল কার্যকর করা হবে। সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যাশা হলো, নতুন পে স্কেলে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন ও অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। özellikle, নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন নিয়ে বিশেষ নজর দেওয়ার আশা করা হচ্ছে। তাই, সরকার নবম পে স্কেল দেবে কিনা, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এই কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করছে। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সরকার তা পর্যালোচনা করে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করবে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

5 thoughts on “সরকারি বেতনে বৈষম্যের ঠাই নাই ২০২৫ । গ্রেড ব্যবধান নিম্নগ্রেডে ৪.২৫ উচ্চ গ্রেড ২০.৪ % তা হবে না

  • রাবিয়া খান

    এর প্রতিকার কি নেই কোন?

  • সবাই কাজ বন্ধ করে বসে থাক ,বৈষম্য দূর হবে

  • চেষ্টা যতটুকু অব্যাহত আছে তা হেলাফেলা করার মত নয়।

  • আফরোজ জাহান

    একই দ্রব্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী বাজার থেকে একই মূল্যে ক্রয় করে। তাহলে এই দুর্মূল্যের বাজারে বেতনের প্রকট বৈষম্য থাকলে কর্মচারীদের জীবনযাপন কি সবসময়ই বৈষম্যমূলকই হবে? তাদের সন্তানরাও কি ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ পাবে না?
    দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্রে আজীবন কি কর্মচারীরা গোলকধাঁধার মতন ঘুরপাক খেতেই থাকবে??

  • আমলাতান্ত্রিক বাংলাদেশে অবহেলিত সরকারি কর্মচারীগণ। কোন গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের বৈষম্য আছে বলে আমার মনে হয় না। কর্মচারীগণ গোলাম আর কর্মকর্তাগণ মালিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *