সরকারি কর্মচারীগণ ৬ দফা দাবী আদায়ে সমাবেশের শেষ পর্যায়ে জলকামানের মুখে ঘোষিত কর্মসূচী মোতাবেক ১৬-২২ তারিখ পর্যন্ত অফিস লিফলেট বিতরণ করা হবে-দাবী আদায় না হলে ২৩-২৮ তারিখ পর্যন্ত উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় কর্মকর্তার দাবী স্মারকলিপি প্রদান করা হবে এবং ১ মার্চ হতে পালিত হতে কর্মবিরতি কর্মসূচী–সরকারি কর্মচারীদের মহাসমাবেশ ২০২৫
সমাবেশ কখন শুরু হয়? বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ এর উদ্যোগে বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল ঘোষনাসহ ৭ দফা দাবী বাস্তবায়ন না করে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান কমিটির গড়িমশির প্রতিবাদে ও মুদ্রাস্ফীতির সাথে সংগতি রেখে বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি বাস্তবায়নের লক্ষে বর্তমান সময়ের সাথে সংগতি রেখে বাড়ী ভাড়া ভাতা, রেশনিং পদ্ধতি চালু, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, যাতায়াত ভাতা ও টিফিন ভাতাদি প্রদানের দাবিতে অদ্য ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি. রোজ-শুক্রবার, সকাল ০৯.০০ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকায় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা কি এসেছিলেন? মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মোঃ লুৎফর রহমান, সমন্বয়ক ও সভাপতি, ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকুরিজীবি ফোরাম, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মাহমুদুর রহমান মান্না, সভাপতি, নাগরিক ঐক্য, জনাব জোনায়েদ সাকী, প্রধান সমন্বয়কারী, গণ-সংহতি আন্দোলন, জনাব নুরুল হক নূর, সভাপতি, গণ অধিকার পরিষদ। মহাসমাবেশে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ ওয়ারেছ আলী, মুখ্য সমন্বয়ক ও সভাপতি-বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন। গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন জনাব মোঃ ইব্রাহীম খলিল, সমন্বয়ক ও সভাপতি, বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতি। দাবীনামা উপস্থাপন করেন জনাব খায়ের আহম্মেদ মজুমদার, সমন্বয়ক ও সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন। কর্মসূচী ঘোষণা পাঠ করেন জনাব মোঃ হালজার রহমান, সমন্বয়ক ও মহাসচিব, বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতি।
সরকারি কর্মচারী পরিষদের কে কে উপস্থিত ছিলেন? সমন্বয়ক মোঃ মাহমুদুল হাসান ও আসাদুল ইসলাম এর উপস্থাপনার মহাসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ রফিকুল আলম, সমন্বয়ক ও সভাপতি, বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড সরকারি কর্মচারী সমিতি, জনাব জিয়াউল হক, সমন্বয়ক ও সভাপতি, সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদ ও জনাব মোঃ সেলিম মিয়া, সমস্বয়ক ও সভাপতি, বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন। সর্বজনাব মোঃ শওকত ইসলাম সবুজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন, শাজাহান সিরাজ সম্মার্ট, ১৭-২০ কর্মচারী সমিতি। এছাড়াও শেখ মুহাম্মদ সরোয়ার মোর্শেদ, মোঃ রুহুল আমিন, ৩য় শ্রেণী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মোঃ শফিকুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ আলী, সারোয়ার হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, তারিকুল ইসলাম, আসিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, অরেক মাহমুদ, খাদিজা খানম, ওবায়দুর রহমান, মোঃ মনির হোসেন বাবু (আরকাইভ), মাহবুব হক তালুকদার, মোঃ আরিফুল ইসলাম, রায়হান উদ্দিন চৌধুরী তাপস কুমার শাহা, মজিবুর রহমান, মোঃ আনোয়ার হোসেন, মঞ্জুরী কমিশন, আফরোজ আলী, কায়সার হোসেন, সেলিম রেজা, ফরিদ আহমেদ, তারেক হাসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোঃ শফিকুল ইসলাম, আশফাকুল আশেকীন, ফজলুল হক, খোরশেদ আলম মেয়াজী, রাজু আহমেদ, আনিসুল আলম রানা, মাজেদুল ইসলাম, মিরাজ শরীফ, বেলাল হোসেন, শাহিনুর রহমান, আদিয়া খাতুন, আমিনা খাতুন, মোঃ মনিরুল ইসলাম,, নাসির উদ্দিন, রাশেদুল ইসলাম, মোঃ আঃ রহিম, ১৭-২০সহ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
একটাই মহার্ঘ্য ভাতা নয়, পে স্কেল চাই । সমাবেশ শাহবাগে গেলে পুলিশি জলকামানের মুখে পড়ে সরকারি কর্মচারীগণ
১১-২০ গ্রেডের বঞ্চিত কর্মচারীগণ তাদের ৬ দফা দাবী প্রধান উপদেষ্টার নিকট পৌছে দিতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে এবং সেখানেই চূড়ান্ত পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।
Caption: Mohasomabesh
সরকারি কর্মচারীদের মহাসমাবেশ ২০২৫ । ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা কার্যকরসহ অতিদ্রুত বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষে পে-কমিশন গঠনসহ ৭ দফা দাবীতে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
- বৈষম্য বিরোধী বর্তমান সরকারের সময় কর্মচারীদের মধ্যে বৈধন্য মেনে নেয়া যায় না। দ্রব্য-মূল্যের লাগামহীন উদ্ধোগতি ও পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার প্রাপ্ত বেতনের অর্থ দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না।
- ৫ বছর পর পর পে-স্কেল প্রদানের। প্রথা চালু। থাকলেও ২০১৫ সালের। ৮ম পে-স্কেল প্রদানের পর দীর্ঘ ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এ পর্যায়ে কর্মচারিদের ৯ম পে-স্কেলসহ অতদির অসংগতি দূর করার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
- একইসাথে অনতিবিলম্বে সকল দপ্তর অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন করে বেতন ও পদবী বৈষম্য দুর করে পূর্বের ন্যায় টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পূনর্বহালসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করার জন্য মাননীয় উপদেষ্টার কাছে জোর দাবি জানানো হয়।
- অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় যেখানে গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারি ভাইদের বেতন ২০২৩ সালে ৮,০০০/- থেকে উন্নীত করে ১২,৫০০/- করা হয়েছে ও বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৯% করা হয়েছে। পক্ষান্তরে সরকারি কর্মচারীদের সর্বনিম্ন গ্রেডে ৮২৫০/- টাকা ও বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫% যা অত্যন্ত অমানবিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
মহার্ঘ ভাতা স্থগিত কি যৌক্তিক?
বাংলাদেশ সরকারী কর্মচারী দাবী আদায় ঐক্য পরিষদের ৭ দফা দাবীব্যস্তবায়নের জন্য সংগঠনের ব্যানারে ২০১৯ সন থেকে সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, বিভাগীয় সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। সর্বশেষ ২৬ মে ২০২৩ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আওয়ামী সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, আমলা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও মাধ্যমে জোরপূর্বক মহাসমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করতে বাধ্য করেন। এর পর আমাদের বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধির সকল আশাকে নিরাশায় পরিণত করে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ৫% বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়। সরকারের এ ঘোষণায় প্রজাতন্ত্রের ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারির চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হন। সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ৫% বিশেষ সুবিধা বর্তমান বাজার ব্যবস্থার সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাছাড়াও আমাদের সংগঠনের দাবি ছিল কর্মচারি অংগনে বৈষম্য দূর করা। কিন্তু তা না হয়ে প্রদের ৫% বিশেষ সুবিধায় ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের বৈষম্য আরও বৃদ্ধি হয়েছে। ১১-২০ গ্রেডের অধিকাংশ কর্মচারিদের সাবুলা বেতন ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকার নীচে, তাদের আগামী ৪/৫ বছরেও বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১০০০/-(এক হাজার) টাকার উর্দ্ধে উঠবে না অথচ ১ম-৯ম গ্রেডের কর্মচারিদের এ সুবিধা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আমরা এ ধরণের বিশেষ সুবিধা চাইনি। বর্তমান বৈষম্য বিরোধী সরকার ক্ষমতার আসার পর আমরা আশায় বুক বেধে ছিলাম সরকার আমাদের বেতন বৈষম্য দূর করবে। এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা আমাদের বৈষম্যসমূহ তাঁর কাছে স্মারকলিপির মাধ্যম উপস্থাপন করেছিলাম। এর প্রেক্ষিতে সরকার মহার্ঘ্য ভাতা প্রণয়নের অন্য কমিটি গঠন করেন, এ কারণে বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি দেখা দেয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সরকার মহার্ঘ্য ভাতা থেকে সরে আসায় আমরা চরমভাবে হতাশা ও আরও বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
সরকারি কর্মচারীদের ৬ দফা দাবী
দাবীনামা-১: পে-কমিশন গঠন পূর্বক বৈষম্য মুক্ত ৯ম পে স্কেল ঘোষনার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারন ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে, পে-কমিশনে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারি প্রতিনিধি রাখতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য নূন্যতম ৬ হাজার টাকা মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে। | দাবীনামা-২: যে সকল কর্মচারী নিজ গ্রেডের বেতন বৃদ্ধির শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে তাদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে। | দাবীনামা-৩: টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, বেতন জ্যৈষ্ঠতা পূর্ণবহাল, ব্লক পোষ্ট নিয়মিতকরণ সহ সকল পদে পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। |
দাবীনামা-৪ : বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ ও ১১-২০ গ্রেডের চাকুরিজীবীদের রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন অথবা ন্যায্য মূল্যে সরকারি ভাবে পন্য সরবরাহ করতে হবে। | দাবীনামা-৫: সকল সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর, অধিদপ্তরে কাজের ধরন অনুযায়ি পদনাম ও গ্রেড পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে। | দাবীনামা-৬: সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের গ্রাচ্যুয়িটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তন সহ বিদ্যমান গ্রাচ্যুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচ্যুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ অতঃপর করতে হবে। |