সরকারি কর্মচারীদের দাবী দাওয়া নিয়ে আগামী ৩০/০৮/২০২৪ খ্রি: তারিখে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালনের ঘোষনা ছিল। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে গুরুত্ব এবং বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় তা বাতিল করা হয়েছে-সরকারি কর্মচারীদের ধর্মঘট স্থগিত ২০২৪
সরকারি কর্মচারীদের কর্মসূচী বাতিল? হ্যাঁ। গত ২৬/০৮/২০২৪ রোজ সোমবার বিকাল ৫ ঘটিকায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে জোটের সংগঠন সমূহের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সংগঠন ঘোষিত বেতন বৈষম্য নিরসন সহ ৭ দফা দাবিতে ৩০/০৮/২০২৪ তারিখের অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠান কর্মসুচির বিষয় আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে সিদ্ধান্তক্রমে বাতিল করা হয়েছে নতুন এ কর্মসূচী।
দাবী কি তাহলে লিখিত ভাবে জানানো হবে? হ্যাঁ। আলোচেনা শেষে সকল নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে- বাংলাদেশে বর্তমান আকস্মিক বন্যার ক্রমানবতির কারনে মানবিক দিক বিবেচনায় ও বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষনে সকল ক্ষেত্রে যৌক্তক দাবি দাওয়া লিখিতভাবে সরকারের কাছে উপস্থাপনের আহবানে শ্রদ্ধার সাথে সাড়া দিয়ে আগামী ৩০/০৮/২০২৪ তারিখের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। তবে বেতন বৈষম্য নিরসন সহ ৭ দফা দাবি দাওয়া লিখিতভাবে সরকারের কাছে উপস্থাপনের কাজ চলমান থাকবে।
বন্যার কারণের কি কর্মসূচী বাতিল? হ্যাঁ। এছাড়া সভায় বন্যার্তদের সহায়তায় সকলকে সহযোগিতা চলমান রাখার আহবান জানানো হয়। একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তি কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে। ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে কর্মচারীরা জমায়েত হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। অবস্থান কর্মসূচী বাতিল ঘোষনা ২০২৪
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ । ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকুরিজীবী ফোরাম সম্মিলিত সিদ্ধান্ত
সরকারি কর্মচারীদের দাবিগুলো ২০২৪ । তাদের ৭ দফা দাবিগুলোর মধ্যে কি কি আছে?
- দাবীনামা ০১: বৈষম্যহীন ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষে পে কমিশন গঠক করতে হবে । পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে । ইতোমধ্যে যাদের মূল বেতন শেষ ধাপে উন্নীত হয়েছে তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে । বেতন স্কেলের বৈষম্য নিরসনের জন্য ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে ।
- দাবীনামা ০২: সচিবালয়ের ১৯৯৫ সালের জারীকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সকল অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধান সহকারী, উচ্চমানসহকারী ও হিসাবরক্ষক এবং ষাটলিপিকারসহ সমপদগুলির পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করে যথাক্রমে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নাম করনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করন করতে হবে এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রয়ন করতে হবে।
- দাবীনামা ০৩: ২০১৫ সালে পে-স্কেলের গেজেটে হরণকৃত ৩ টি টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল এবং সকল স্বায়তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাচ্যুইটির পাশাপাশি পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
- দাবীনামা ০৪: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ । আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিলপূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে।
- দাবীনামা ০৫: ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে, অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের বিচার বিভাগীয় কর্মচারী হিসেবে গণ্য করতে হবে, এছাড়া টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের টেকনিক্যাল পদ মর্যাদা দিতে হবে।
- দাবীনামা ০৬: বাজারমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মূদ্রস্ফীতি বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করে দেয় সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ, ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের রেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
- দাবীনামা ০৭: উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত পদের পদধারীদের প্রকল্পের চাকুরীকাল গণনা করে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড প্রদান করার অবকাশ নেই মর্মে নং : অম/অবি (বাস্ত- ৪)/বিবিধ-২০ (উঃস্কেঃ/০৭/৪৭ তারিখঃ ২৪-০৩-২০০৮ খ্রিঃ যোগে অর্থ মন্ত্রনালয় হতে জারীকৃত বৈষম্য মূলক আদেশ বাতিল করতে হবে ।
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে কি বৈষম্য রয়েছে?
২০১৫ সালে প্রদত্ত ৮ম পে-স্কেলের সংশোধনসহ বেতন বৈষম্য নিরসন করে গ্রেড অনুযায়ী বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে। (ILO চুক্তি অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করতে হবে)। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল পদে পদোন্নতি বা ০৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। (ব্লক পোস্ট নিয়মিতকরণ করতে হবে) টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড পুর্ন:বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা বজায় রাখতে হবে। সচিবালয়ের ন্যায় পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে। সকল ভাতা বাজার চাহিদা অনুযায়ী সমন্বয় করতে হবে। নিম্ন বেতনভোগীদের জন্য রেশন, শতভাগ পেনশন চালুসহ পেনশন গ্র্যাচুইটি হার এক টাকা সমান পাঁচশত টাকা করা কাজের ধরন অনুযায়ী পদের নাম ও গ্রেট একীভূত করা। যানবাহন চলাচলে কোন রকম বিঘ্ন না ঘটিয়ে যে, এত বড় মানববন্ধব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে পালন করা হবে তা সরকারি কর্মচারীগণ বুঝিয়ে দিয়েছেন।
সূত্র: ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম