প্রশিক্ষণ । সংযুক্তি । উচ্চশিক্ষা। প্রেষণ

Internship Policy 2024 । যে কোন নাগরিক সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করতে পারবে?

বাংলাদেশের সংবিধান-এর ১৭(খ) অনুচ্ছেদ-অনুযায়ী সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সংগতিপূর্ণ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছা প্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ-এর মাধ্যমে দেশের যুবসমাজকে যোগ্যতাসম্পন্ন করিয়া গড়িয়া তুলিতে এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে-Internship Policy 2024

ইন্টার্নশিপ কি? – ‘ইন্টার্নশিপ’ অর্থ নির্দিষ্ট সময়ে বা খণ্ডকালীন একটি প্রতিষ্ঠানের সহিত যুক্ত থাকিয়া, সেই প্রতিষ্ঠানের কাজ সম্পর্কে ধারণা অর্জন বুঝাইবে। ‘ইন্টার্ন’ অর্থ ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহণকারী। ‘ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী সংস্থা/প্রতিষ্ঠান’ অর্থ ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী সরকারি/ আধাসরকারি/ স্বায়ত্তশাসিত কিংবা অন্য কোনো প্রকার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, যাহা ইন্টার্নশিপ প্রদান করে। ‘সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়’ অর্থ ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়। ‘সুপারভাইজার’অর্থ একজন ইন্টার্নের ইন্টার্নশিপ সংশ্লিষ্ট কার্যাবলির তদারকি কর্মকর্তা। ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ অর্থ ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০’ এ বর্ণিত সংজ্ঞাকে বুঝাইবে।

কেন ইন্টার্নশিপ করতে হয়? ব্যাবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও অভিজ্ঞ মানবসম্পদ সৃষ্টি হয়। পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের সহিত কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানো হয়।  সরকারি দপ্তরের কাজের সহিত পরিচিত হইয়া ভবিষ্যতে প্রজাতন্ত্রের সেবায় নিয়োজিত হইতে উৎসাহ প্রদান করা হয় এতে করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হয়।

কোন কোন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন করা যাবে? এই নীতিমালা বাংলাদেশের সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হইবে। বিশ্ববিদ্যালয় হইতে স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বাংলাদেশের নাগরিক এই ইন্টার্নশিপ-এর আওতায় থাকিবে। বিশ্ববিদ্যালয়/সমমানের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসাবে পরিচালিত ইন্টার্নশিপ এই নীতিমালার আওতাভুক্ত হইবে না। সামরিক/বেসামরিক/আধাসামরিক সকল প্রকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, সরকার কর্তৃক ঘোষিত কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন (কেপিআই) স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কর্মে ইন্টার্নশিপ প্রদান করা যাইবে না।

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে আলাদা অর্থনৈতিক কোড সৃজন করিবে। ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ অর্থ বিভাগের অনুমোদন/বাজেট বরাদ্দ থাকা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক কোড হইতে ইন্টার্নশিপ-এর যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করিবে।

ইন্টার্নশিপ-এর মেয়াদকাল সর্বনিম্ন ৩ (তিন) হইতে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত হইতে পারিবে যাহা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করিবে।

যে কোন নাগরিক সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশীপ করতে পারবে?

ইন্টার্নশিপ নীতিমালা, ২০২৩

Internship Policy 2024 । ইন্টার্ন বাছাইয়ের ভিত্তি ও প্রক্রিয়া কি?

  1. মেধার ভিত্তিতে;
  2. বিষয় সংশ্লিষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত); এবং
  3. আবেদনকারীর ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্র বাছাইয়ের প্রেক্ষাপট এবং এক্ষেত্রে তাহার সম্ভাব্য অবদানের বর্ণনার ভিত্তিতে।
  4. সুষম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিম্নবর্ণিত ধাপগুলি অনুসরণপূর্বক ইন্টার্ন বাছাই করিতে হইবে: এই নীতিমালার আলোকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় তাহার ও তাহার অধীন দপ্তর/সংস্থা/ প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্র বিবেচনায় প্রত্যেক অর্থ বছরের জন্য ইন্টার্নশিপের সুযোগের সংখ্যা নির্ধারণ করিবে;
  5. দপ্তর/ সংস্থা/ বিদ্যমান সুযোগের বিপরীতে ইন্টার্নশিপ প্রদানের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়া বহুল প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে;
  6. ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী সংস্থা/প্রতিষ্ঠান ইন্টার্ন বাছাইপূর্বক নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বরাবর মনোনয়নের অনুমতি গ্রহণ করিবে;
  7. বিজ্ঞপ্তিতে অন্যান্য তথ্যের সহিত ইন্টার্নশিপের স্থান, সংখ্যা, মেয়াদকাল, বিশেষ দক্ষতা, ভাতা (যদি থাকে), বাছাই প্রক্রিয়া প্রভৃতি বিষয় উল্লেখ করিতে হইবে;
  8. ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ৩-৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠন করিবে; বাছাই কমিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রয়োজনের বিষয় বিবেচনা করিয়া বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নির্ধারণপূর্বক ইন্টার্ন বাছাই করিবে; এবং
  9. নারী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর আবেদনকারীগণকে এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করিতে হইবে।

ইন্টার্নশীপে অংশগ্রহণে আবেদনকারীর যোগ্যতা কি লাগবে?


ইন্টার্নশিপ প্রার্থীর আবেদন করিবার যোগ্যতা হিসেবে প্রার্থীকে বাংলাদেশের নাগরিক হইতে হইবে।  প্রার্থীকে কমপক্ষে স্নাতক/সমমানের ডিগ্রিধারী হইতে হইবে (অবতীর্ণ প্রার্থীসহ)।  স্নাতক/স্নাতকোত্তর/সমমানের ডিগ্রি অর্জনের ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে আবেদন করিতে হইবে এবং একজন প্রার্থী একবার সরকারি অফিসে ইন্টার্নশিপ করিতে পারিবে।

ইন্টার্নশিপ-এর ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা কি কি?  ইন্টার্ন প্রতিমাসে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ ভাতা প্রাপ্য হইবে। ক্রমিক ‘ক’ এ বর্ণিত ভাতা ব্যতিরেকে ইন্টার্ন অন্য কোনো ভাতা/সুবিধা প্রাপ্য হইবে না। ভাতা প্রাপ্তির প্রাক্কালে প্রতিমাসে ইন্টার্নকে তাহার সন্তোষজনক কর্মকালের বিষয়ে সুপারভাইজারের নিকট হইতে প্রত্যয়ন সংগ্রহ করিতে হইবে। ইন্টার্নশিপ চলাকালীন ইন্টার্ন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে কর্মে নিযুক্ত রয়েছে মর্মে কোনোরূপ প্রত্যয়ন প্রাপ্য হইবে না; সফলভাবে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করিবার পর ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হইতে সনদ প্রাপ্য হইবে। ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করা কোনোভাবেই কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী, অস্থায়ী বা অন্য কোনো প্রকার চাকরির ক্ষেত্রে প্রাধিকার/অগ্রাধিকার হিসাবে গণ্য হইবে না।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *