বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

অযৌক্তিক ভাতা বহাল আজও ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীগণ ১৫ বছর ধরে ০৫ টাকা/ঘন্টা ভাতা পায়?

সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের কিছু ভাতা রয়েছে যা আজ মূল্যহীন হয়ে পড়েছে-কেউ কেউ এসব ভাতা নিতে আগ্রহী নয়-সরকার দীর্ঘ সময় হলেও এসব ভাতা পুন:নির্ধারণ করেনি বা এসব ভাতার নির্ধারণের জন্য কোন মা -বাপ নেই–অযৌক্তিক ভাতা বহাল আজও ২০২৫

সরকারি অফিসে বন্ধের দিনে কাজ করলে ভাতা পাওয়া যায়? হ্যাঁ। ছুটির দিন ৩ ঘণ্টা কাজের জন্য পনেরো টাকা টিফিন ভাতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ টাকা। অর্থ বিভাগ থেকে ২০০৮ সালে ৬ নভেম্বর ছুটির দিনে ৩ ঘণ্টা দায়িত্ব পালনের জন্য পনেরো টাকা এবং ৩ ঘণ্টার বেশি সময় কাজের জন্য বিশ টাকা টিফিন ভাতা নির্ধারণ করে আদেশ জারি করা হয়। বিগত ১৫ বছরে এ ভাতা বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সরকারি পোষাক ধোয়ার ভাতা দেয়? হ্যাঁ। ২০১৫ সালে একজন কর্মচারীকে মাসে একশ টাকা ধোলাই ভাতা দিয়ে আদেশ জারি করে অর্থ বিভাগ। তখন সব ধরনের সাবান এবং ডিটারজেন্টের মূল্য বর্তমান মূল্যের অর্ধেকেরও কম ছিল। বর্তমানে সবচেয়ে কম মূল্যের প্রতি কেজি ডিটারজেন্ট ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেখানে এই ১০০ টাকা দিয়ে সারা মাসের কাপড় কিভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব সেটি বড় প্রশ্ন। তাই এই ভাতাটিও খুব দ্রুত পুন: নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

মাত্র ৩৪ টাকায় অপ্যায়ন কিভাবে সম্ভব? সরকারি অফিসের সভার আপ্যায়নে জনপ্রতি ব্যয় হয় ৪০ টাকা। এ ৪০ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। ফলে আপ্যায়নের জন্য মূলত ব্যয় হয় মাত্র ৩৪ টাকা। বার্ষিক ৬০ ঘন্টা সরকারি কর্মচারীদের ট্রেনিং দিতে হয় এবং বিভিন্ন সভা সেমিনারে অংশগ্রহণ করতে হয়। এসব ট্রেনিং, সভা সেমিনারে এই সময়ে ৩৪ টাকায় কোন মানসম্মত আপ্যায়ন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এই ভাতাদিও জলতি পুন:নির্ধারণের দাবি রাখে।

শিক্ষা ও চিকিৎসা ভাতা খুবই অপ্রতুল? হ্যাঁ। শিক্ষা সহায়ক ভাতা হিসাবে মাসে এক সন্তানের জন্য পাঁচশ এবং ২ সন্তানের জন্য এক হাজার টাকা পাচ্ছেন কর্মচারীরা। বর্তমান শিক্ষা উপকরণের মূল্যের তুলনায় এ খাতের ভাতা খুবই সামান্য। সচিব থেকে অফিস সহায়ক পর্যন্ত সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী মাসিক এক হাজার পাঁচশ টাকা চিকিৎসা ভাতা পাচ্ছেন। বর্তমানে এ টাকায় ওষুধ ক্রয় ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো এখন প্রায় অসম্ভব। এই সব ভাতা দিয়ে ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করানো যেমন অসম্ভব হয়ে পড়েছে ঠিক চিকিৎসা ভাতা নিয়ে হসপিটালে যাওয়াটা বোকামি বটে।

০১ ঘন্টা কাজের জন্য ৫ টাকা টিফিন ভাতা খুব হাস্যকর ভাতা ২০২৫/ কোন উপসচিব বা যুগ্ম সচিবের এই ভাতাটি পুন: নির্ধারণের সময় হয়ে উঠেনি

যে সকল দপ্তরে অধিকার ভাতা বরাদ্দ নেই সেই সকল দপ্তরের ক্ষেত্রে প্রতি ৩ ঘন্টার জন্য ১৫ টাকা টিফিন ভাতা প্রদানের বিধান রয়েছে। এসব ভাতা বেশির ভাগ কর্মচারী গ্রহণ করে না বরং ফ্রিতে কর্মঘন্টা ব্যয় করছে।

Caption: Tiffin vata for extra work

অযৌক্তিক ভাতা ২০২৫ । যা পুন:নির্ধারণ করা খুবই যৌক্তিক হয়ে পড়েছে

  1. ৩ ঘণ্টার বেশি সময় কাজের জন্য ২০ টাকা টিফিন ভাতা।
  2. একজন কর্মচারীর দিনে টিফিন ভাতা ৯ টাকা (মাসিক ২০০ টাকা)।
  3. সাড়ে ১৩ টাকা অফিসে যাওয়া-আসার ভাতা (মাসিক ৩০০ টাকা)
  4. মাসে ১০০ টাকা ধোলাই ভাতা।
  5. ৫০০ টাকা শিক্ষা ভাতা।
  6. ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা।
  7. সভা /মিটিং এ জনপ্রতি ৩৪ টাকা আপ্যায়ন ভাতা।

টিফিন ভাতা প্রতিদিন ১৩ টাকা?

জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ কার্যকর হওয়ার পর ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের মাসে ২০০ টাকা টিফিন ভাতা দেওয়া হয়। প্রতিদিন গড়ে একজন কর্মচারী নয় টাকা নয় পয়সা টিফিন ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু এ টাকায় বর্তমানে কোনো টিফিনই পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে অতিসাধারণ মানের একটি কলাও দশ টাকা বিক্রি হয়। ২০১৫ সালে টিফিন ভাতা ও যাতায়াত ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ করে আদেশ জারি করে অর্থ বিভাগ। গেল নয় বছরে এ ভাতা বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। এখন একটি চা খেতে ১০-২০ টাকা খরচ হয় সেখানে কিভাবে আজও মাসিক ২০০ টাকা টিফিন ভাতা কার্যকর থাকে সেটি খুবই নেক্কারজনক ব্যাপার। এ ভাতাটি সরকারি কর্মকর্তা/আমলার পান না বলেই হয়তো আজও কোন সচিব উপসচিব নজর দেয়নি।

   
   
   

প্রতিদিন যাতায়াতে ১৩ টাকা?

সরকারি কর্মচারীদের বাসা হতে কর্মস্থলে যাতায়াত বাবদ ১১ থেকে ২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীরা যাতায়াত ভাতা পান তিনশ টাকা। তবে পৌরসভার বাহিরে হলে এ ভাতা পাবেন না। কর্মস্থলে যাওয়া-আসায় (২২ দিনে মাসে) প্রতিদিন গড়ে পাচ্ছে ১৩ টাকা ৬৩ পয়সা। বর্তমানে অতি সাধারণ মানের গণপরিবহণের ভাড়াও এরচেয়ে অনেক বেশি। যে হারে ডিজেল ও তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে সে হারে বেড়েছে গাড়ি ভাড়া এখন ২০ টাকার নিচে কোন রিক্সা ভাড়াই না এবং গণ পরিবহনের ভাড়া দিতেই পকেট খালি হয়ে যায় সেই বাজারে মাসিক ৩০০ টাকা যাতায়াত বা পরিবহন ভাতা খুবই হাস্যকর।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *