নৈমিত্তিক । অর্জিত । মাতৃত্বকালীন

গড় বেতনে অর্জিত ছুটির হিসাব ২০২৫ । শিক্ষানবিশকালে গড় বেতনে ছুটি কাটানো যায়?

শিক্ষানবিশকালে (প্রবেশনারি পিরিয়ডে) গড় বেতনে ছুটি কাটানো যেতে পারে না- শিক্ষানবিশকালে অর্জিত ছুটি (Earned Leave) জমা হয় এবং এটি গড় বেতনে (full average salary) অথবা অর্ধ গড় বেতনে (half average salary) ভোগ করা যেতে পারে যদি কর্তৃপক্ষ সদয় হয়– গড় বেতনে অর্জিত ছুটির হিসাব ২০২৫

শিক্ষানবিশকালে গড় বেতনে ছুটি কাটানোর নিয়ম কি? নৈমিত্তিক ছুটি কাটাতে পারবেন। কর্তৃপক্ষ চাইলে অর্জিত ছুটিও নিতে পারবেন তবে এটি বিধি সম্মত হবে না। সরকারি কর্মচারী চাকরিরত অবস্থায় প্রতি ১১ কর্মদিবসের জন্য ১ দিন গড় বেতনে এবং প্রতি ১২ কর্মদিবসের জন্য ১ দিন অর্ধ গড় বেতনে ছুটি জমা করতে পারেন। শিক্ষানবিশকালে অর্জিত ছুটি জমা হতে থাকে এবং এই ছুটি শিক্ষানবিশকাল শেষ হওয়ার পরেও ব্যবহার করা যেতে পারে। শিক্ষানবিশকালে বা শিক্ষানবিশকাল শেষে গড় বেতনে বা অর্ধ গড় বেতনে ছুটি ভোগ করা যেতে পারে। ছুটি সংক্রান্ত বিস্তারিত নিয়মাবলী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনে নেওয়া উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী শিক্ষানবিশকালে কিছু ছুটি জমা করেন, তবে তিনি সেই ছুটি গড় বেতনে বা অর্ধ গড় বেতনে, চাকরির নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষানবিশকাল শেষ হওয়ার পরেও ভোগ করতে পারবেন।

হিসাবের নিয়ম কিভাবে হয়? প্রতি ১১ দিনের কাজের জন্য ১ দিন গড় বেতনে ছুটি পাওয়া যায়। অর্থাৎ, মোট কর্ম দিবসকে ১১ দিয়ে ভাগ করলে গড় বেতনে প্রাপ্য ছুটির দিন পাওয়া যাবে। সর্বোচ্চ সীমা এককালীন সর্বোচ্চ ৪ মাস গড় বেতনের ছুটি নেওয়া যায়। অতিরিক্ত ছুটি ৪ মাসের বেশি ছুটি জমা থাকলে তা অন্য খাতে জমা হয় এবং পরবর্তীতে ডাক্তারের সনদ বা অন্যান্য কারণে (ধর্মীয় সফর, অধ্যয়ন ইত্যাদি) ব্যবহার করা যায়। অর্ধ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি প্রতি ১২ দিনের কাজের জন্য ১ দিন অর্ধ গড় বেতনে ছুটি পাওয়া যায়। অর্থাৎ, মোট কর্ম দিবসকে ১২ দিয়ে ভাগ করলে অর্ধ গড় বেতনে প্রাপ্য ছুটির দিন পাওয়া যাবে। সর্বোচ্চ সীমা অর্ধ গড় বেতনের ছুটি জমা হওয়ার কোনো সর্বোচ্চ সীমা নেই। গড় বেতনে রূপান্তর ডাক্তারের সনদ থাকলে ২ দিনের অর্ধ গড় বেতনের ছুটিকে ১ দিনের গড় বেতনের ছুটিতে রূপান্তর করা যায়। এভাবে সর্বোচ্চ ১২ মাসের ছুটিকে গড় বেতনে রূপান্তর করা যায়।

ছুটি হিসাবের উদাহরণ দিতে পারবেন? হ্যাঁ।  ধরুন, একজন কর্মচারী ৩১/০৭/২০১৭ তারিখে যোগদান করেছেন এবং ০৩/০৫/২০২৩ তারিখ পর্যন্ত তার মোট কর্ম দিবস ২০৯৭ দিন। গড় বেতনে ছুটি (২০৯৭ দিন / ১১) – ১৫ দিন (শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি) = ১৮৯.৭৩ দিন = ৫ মাস ২৪ দিন (আনুমানিক)। অর্ধ গড় বেতনে ছুটি (২০৯৭ দিন / ১২) = ১৭৪.৭৫ দিন = ৫ মাস ২৫ দিন (আনুমানিক) । ছুটি হিসাবের সময় অব্যবহৃত শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি বাদ দিতে হবে।সঠিক ছুটির হিসাবের জন্য সার্ভিস বুক এবং প্রযোজ্য বিধিমালা অনুসরণ করা উচিত।

অর্জিত ছুটির হিসাব ২০২৫ । পূর্ণ গড় বেতনে ও অর্ধ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি ভোগের নিয়ম কানুন

পূর্ণ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি কি? পূর্ণ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি (Earned Leave at Full Average Pay) মানে হল, একজন কর্মচারী ছুটিতে থাকাকালীন তার মূল বেতনের সমান হারে ছুটি ভাতা পাবেন। সহজ ভাষায়, এই ছুটিতে কর্মীর বেতন বা মজুরি কর্তন করা হয় না। এটি একটি বেতনভুক্ত ছুটি যা কর্মচারী তার চাকরির মেয়াদের সাথে সাথে অর্জন করেন। পূর্ণ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি বলতে বোঝায়, যখন একজন কর্মচারী এই ছুটি ভোগ করেন, তখন তিনি তার মূল বেতনের সমান বেতন পান। অর্থাৎ, এই ছুটি কাটানোর কারণে তার বেতন থেকে কোনো অর্থ কাটা হয় না। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন কর্মচারী ১১ দিনে ১ দিন হিসাবে অর্জিত ছুটি জমা করে থাকেন এবং তিনি যদি গড় বেতনে ছুটি কাটান, তবে সেই ছুটির দিনগুলোতে তিনি তার মূল বেতনের সমান বেতন পাবেন।

Caption: Leave Rules 1959 pdf

সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ছুটি রয়েছে, যার মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো: অর্জিত ছুটি (Earned Leave), নৈমিত্তিক ছুটি (Casual Leave), অসাধারণ ছুটি (Extraordinary Leave), প্রসূতি ছুটি (Maternity Leave), এবং চিকিৎসালয় ছুটি (Hospital Leave)। এছাড়াও, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে শিক্ষা ছুটি (Study Leave), সঙ্গনিরোধ ছুটি (Quarantine Leave) এবং কিছু ঐচ্ছিক ছুটি (Optional Leave) পাওয়া যেতে পারে।

  1. অর্জিত ছুটি (Earned Leave): এটি একটি বেতনসহ ছুটি যা কর্মচারী নির্দিষ্ট সময় পর পর অর্জন করেন। সাধারণত, প্রতি ১১ দিনে ১ দিন হিসেবে এই ছুটি জমা হতে থাকে।
  2. নৈমিত্তিক ছুটি (Casual Leave): এটি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বা অসুস্থতার কারণে কিছু দিনের জন্য কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকার জন্য মঞ্জুর করা হয়। সাধারণত, বছরে ২০ দিন পর্যন্ত নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করা যায়।
  3. অসাধারণ ছুটি (Extraordinary Leave): যখন একজন কর্মচারী অন্য কোনো ছুটি পাওয়ার যোগ্য না হন, অথবা তার অন্য ছুটি পাওনা থাকলেও তিনি লিখিতভাবে এই ছুটি চান, তখন এই ছুটি মঞ্জুর করা হতে পারে। এই ছুটির মেয়াদ সাধারণত একবারে ৩ মাসের বেশি হয় না, তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এটি বর্ধিত হতে পারে।
  4. প্রসূতি ছুটি (Maternity Leave): মহিলা কর্মচারীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির সুবিধা পান। এই ছুটি সাধারণত প্রসবের আগে এবং পরে মিলিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়কালের জন্য হয়ে থাকে।
  5. চিকিৎসালয় ছুটি (Hospital Leave): কর্তব্যরত অবস্থায় অসুস্থ বা আহত হলে এই ছুটি পাওয়া যায়। সাধারণত, পুলিশ, বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি বিভাগের কর্মচারীরা এই ছুটি পান।
  6. শিক্ষা ছুটি (Study Leave): চাকুরীর জন্য সহায়ক বৈজ্ঞানিক, কারিগরি বা অনুরূপ কোনো বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য এই ছুটি দেওয়া হয়।
  7. সঙ্গনিরোধ ছুটি (Quarantine Leave): সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকলে এই ছুটি পাওয়া যায়।
  8. ঐচ্ছিক ছুটি (Optional Leave): এটি বছরে সর্বোচ্চ ৩ দিন পর্যন্ত নেওয়া যেতে পারে, যা মূলত বিভিন্ন ধর্মীয় পর্বের জন্য।
  9. এছাড়াও, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে আরও কিছু ছুটি কর্মচারীরা পেয়ে থাকেন, যেমন – প্রতিবন্ধীতা জনিত ছুটি, দুর্ঘটনাজনিত ছুটি ইত্যাদি।

একজন সরকারি কর্মচারী সর্বোচ্চ কত দিন ছুটিতে থাকতে পারবেন?

একজন সরকারি কর্মচারী সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ছুটি মিলিয়ে বছরে সর্বোচ্চ ১৮০ দিন ছুটি ভোগ করতে পারেন। তবে, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে, যেমন- মেডিকেল কারণে বা কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমোদনে এই সময়সীমা বাড়তে পারে। বছরে ২০ দিন, যা একসাথে ১০ দিনের বেশি নেয়া যায় না। তবে পার্বত্য অঞ্চলের কর্মচারীরা একসাথে ২০ দিন নিতে পারেন। অর্জিত ছুটি এটি সাধারণত কাজের উপর ভিত্তি করে জমা হতে থাকে এবং এটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নেয়া যায়। অর্ধ-গড় বেতনে ছুটি এটিও কাজের উপর ভিত্তি করে জমা হতে থাকে। বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি মেডিকেল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে এই ছুটি নেয়া যায় এবং এটি সাধারণত এক বছর পর্যন্ত হতে পারে। তবে, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে এই ছুটি দুই বছর পর্যন্ত বর্ধিত করা যেতে পারে। শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি এটিও একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পাওয়া যায়। এছাড়াও, সরকারি কর্মচারী বিভিন্ন ধরনের সরকারি ছুটি, নির্বাহী আদেশের ছুটি এবং ঐচ্ছিক ছুটিও ভোগ করতে পারেন। সুতরাং, একজন সরকারি কর্মচারী সাধারণত ১৮০ দিন পর্যন্ত ছুটি ভোগ করতে পারেন, তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এই সময়সীমা বাড়তে পারে।

অক্ষমতাজনিত ছুটি

ক) মেডিক্যাল বোর্ডের সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতে স্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে ২৪ মাস/ ২ বছর পর্যন্ত অক্ষমতাজণিত ছুটি মঞ্জুর করা যায়।খ) মেডিক্যাল বোর্ডের সার্টিফিকেট ব্যতিত এ প্রকারের ছুটির মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।অবকাশ বিভাগের ছুটি ক) অবকাশ বিভাগের সরকারি কর্মচারি ৩০ দিন গড় বেতনে অবকাশ বিভাগের ছুটি প্রাপ্য হবেন।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *