নতুন পে স্কেল ২০২৬ সালের শুরুতেই । বেতন দ্বিগুণ হওয়ার ইঙ্গিত, তবে বৈষম্য নিরসনে বাড়ছে চাপ বাড়ছে?
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত নতুন পে স্কেল ২০২৬ সালের শুরুতেই ঘোষণা হতে পারে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের ইঙ্গিত অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে গেজেটের মাধ্যমে এটি কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, সর্বশেষ ২০১৫ সালে পে স্কেল ঘোষণার পর ১১ বছরের দীর্ঘ বিরতি এবং চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে, এবার অন্তত ১৫০% বেতন বৃদ্ধির দাবি তুলেছে সরকারি চাকরিজীবীদের একটি অংশ।
ঐতিহাসিক প্রবণতা অনুসারে, গত ৪৪ বছরে সরকারি কর্মচারীরা প্রতি ৫.৫ বছর অন্তর একটি নতুন পে স্কেল পেয়ে এসেছেন। কিন্তু এবার দীর্ঘ বিরতি ঘটায়, ১১-২০তম গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “২০১৫ সালের পর অন্তত দুটি কমিশন গঠিত হলে দুইবার বেতন বাড়তো। তাই এবার অন্তত ১৫০% বেতন বৃদ্ধি দরকার।” তিনি আরও বলেন, বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্রেডভিত্তিক বৈষম্য দূর করতে হবে এবং সর্বনিম্ন মূল বেতন ৩২,০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১,২৮,০০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন।
এদিকে, জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ তাদের সুপারিশ চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কমিশনের একজন সদস্য জানান, “সুপারিশ প্রণয়নে দেশের আর্থিক সক্ষমতাও বিবেচনায় থাকবে। আমরা চার ক্যাটাগরিতে প্রশ্ন দিয়েছিলাম মতামতের জন্য, এখন সেগুলো বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”
কমিশনের আরেকজন সদস্যের ইঙ্গিত অনুযায়ী, নতুন স্কেলে মূল বেতন দ্বিগুণ হতে পারে। এই ইঙ্গিত বাস্তবায়িত হলে, বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, ১ম গ্রেডের সর্বোচ্চ মূল বেতন দাঁড়াবে ১,৫৬,০০০ টাকা এবং ২০তম গ্রেডের সর্বনিম্ন বেতন হবে ১৬,৫০০ টাকা। কমিশন মনে করছে, বিদ্যমান ২০টি গ্রেড থেকে সংখ্যা কমানো হলে নিম্নতম বেতন আরও কিছুটা বাড়তে পারে। বর্তমানে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত প্রায় ১০:১, যা নতুন কাঠামোতেও ৮:১ থেকে ১০:১-এর মধ্যে রাখার বিষয়ে কমিশন পর্যালোচনা করছে।
কর্মজীবীরা আশা করছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আসছে এই পে স্কেলে শুধু মূল্যস্ফীতিই নয়, বরং গ্রেডভিত্তিক বেতন বৈষম্যও দূর হবে। বিশেষ করে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ন্যায্য বেতন কাঠামোর প্রত্যাশা করছেন।
জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫-কে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে এবং সরকার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদের মধ্যেই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর।
সরকার কি তাহলে ডিসেম্বরে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করবে না?
সরকার ডিসেম্বরে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করার সম্ভাবনা কম, তবে কমিশনের সুপারিশ ডিসেম্বরে জমা পড়ার একটি ইঙ্গিত রয়েছে।
এখানে মূল বিষয়গুলি হলো:
- নতুন স্কেল কার্যকর হওয়ার সময়: অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, নতুন স্কেল ২০২৬ সালের শুরু (জানুয়ারি/মার্চ/এপ্রিল) থেকে কার্যকর হতে পারে।
- কমিশন রিপোর্টের সময়: পে কমিশন-২০২৫-এর কাজ চলছে। যদিও রিপোর্টে জমা দেওয়ার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখানে উল্লেখ নেই, তবে সাধারণত কমিশন রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই সরকার গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে তা কার্যকর করে।
অর্থাৎ, নতুন স্কেল কার্যকর হতে ২০২৬ সালের শুরু পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ডিসেম্বরে কার্যকর হওয়ার বিষয়ে সরাসরি কোনো তথ্য নেই।