জাতীয় বেতন স্কেল প্রস্তাবনা ২০২৫ । সর্বোচ্চ ১৪০০০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৩৫০০০ টাকা মূল বেতন ধরে সাজানো হয়েছে?
ঢাকা, সেপ্টেম্বর ২০২৫ – সরকারের পক্ষ থেকে ২০২৫ সালের জন্য নতুন জাতীয় বেতন স্কেল প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্কেল অনুযায়ী সর্বনিম্ন মূল বেতন ধরা হয়েছে ৩৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৪০,০০০ টাকা।– জাতীয় বেতন স্কেল প্রস্তাবনা ২০২৫
সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো কি একমত হয়েছে? নতুন প্রস্তাবনায় বেতন বৈষম্য কমানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১:৪ অনুপাতে বেতন কাঠামো সাজানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা তুলনামূলকভাবে বেশি সুবিধা পান। এছাড়াও প্রস্তাবনায় বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ প্রস্তাব কার্যকর হলে সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ কিছুটা প্রশমিত হবে। সরকারি সংশ্লিষ্ট মহল জানিয়েছে, এই প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্মচারী সংগঠনগুলোর সাথে আলোচনা করা হবে।
জাতীয় বেতন স্কেল প্রস্তাবনা ২০২৫- সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে নতুন জাতীয় বেতন স্কেল প্রস্তাবনা ২০২৫ প্রকাশ করেছে সরকার। এই প্রস্তাবনায় সর্বনিম্ন মূল বেতন ধরা হয়েছে ৩৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৪০,০০০ টাকা। ১:৪ অনুপাত – নতুন প্রস্তাবে নিম্ন ও উচ্চ গ্রেডের বেতনের পার্থক্য সীমিত করা হয়েছে। ন্যূনতম বেতন: ৩৫,০০০ টাকা (২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য) এবং সর্বোচ্চ বেতন: ১,৪০,০০০ টাকা (১ম গ্রেডের সচিব/সিনিয়র কর্মকর্তা পর্যায়ে) । বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট মুদ্রাস্ফীতি অনুযায়ী সমন্বয় করা হবে, প্রস্তাবে প্রায় ৭-১০% বৃদ্ধি সুপারিশ করা হয়েছে। ভাতা ও সুবিধা: বাড়ি ভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা হালনাগাদ করে বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্য রাখার প্রস্তাব।
🎯 প্রত্যাশিত প্রভাব কি হবে? সরকারি কর্মচারীদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপ মোকাবিলায় সহায়তা করবে। বেতন বৈষম্য হ্রাস নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা তুলনামূলকভাবে বেশি সুবিধা পাবেন। মোটিভেশন বৃদ্ধি সরকারি খাতে দক্ষ জনবল ধরে রাখতে সহায়ক হবে। সরকার জানিয়েছে যে, এই প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করার আগে মন্ত্রণালয় ও কর্মচারী সংগঠনগুলোর সাথে বৈঠক করা হবে এবং সংশোধিত প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
হ্যাঁ, সামগ্রিকভাবে এটি কর্মচারীদের জন্য সুবিধাজনক। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম গ্রেডের জন্য এটি আগের তুলনায় আর্থিক স্বস্তি আনবে। তবে গ্রেড-পার্থক্য সমান না হওয়ায় এবং ইনক্রিমেন্ট নীতিমালা পরিষ্কার না থাকায় ভবিষ্যতে কিছু অসন্তোষ তৈরি হতে পারে।
গ্রেড পার্থক্য কি সমান রয়েছে? না, গ্রেড-পার্থক্য সমান নয়। ধাপে ধাপে বেসিক বেতনের পার্থক্য (উচ্চ → নিচে): ১ম→২য়: ১৫,০০০ ২য়→৩য়: ১৫,০০০ ৩য়→৪র্থ: ১৫,০০০ ৪র্থ→৫ম: ১৫,০০০ ৫ম→৬ষ্ঠ: ৫,০০০ ৬ষ্ঠ→৭ম: ৫,০০০ ৭ম→৮ম: ৫,০০০ ৮ম→৯ম: ৫,০০০ ৯ম→১০ম: ১০,০০০ ১০ম→১১তম: ৮,০০০ ১১তম→১২তম: ৭,০০০ অর্থাৎ প্রথম ৪ ধাপে পার্থক্য ১৫,০০০; পরের ৪ ধাপে ৫,০০০; শেষ তিন ধাপে যথাক্রমে ১০,০০০ → ৮,০০০ → ৭,০০০—একসমান নয়।

Caption: Full pdf of Proposal Bangladesh
প্রস্তাবিত বেতন গ্রেড ২০২৫ । ১০ বছর পর জাতীয় বেতন কাঠামো প্রদানের সিদ্ধান্ত আসায় সংগঠনগুলো নতুন প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোর কপি কমিটির নিকট তুলে দিয়েছে।
- ১ম (পূর্বের ১ম গ্রেড) ১,৪০,০০০
- ২য় (পূর্বের ২য় গ্রেড) ১,২৫,০০০
- ৩য় (পূর্বের ৩য় গ্রেড) ১,১০,০০০
- ৪র্থ (পূর্বের ৪ নম্বর গ্রেড) ৯৫,০০০
- ৫ম (পূর্বের ৫ম গ্রেড) ৮০,০০০
- ৬ষ্ঠ (পূর্বের ৬ ও ৭ নম্বর গ্রেড) ৭৫,০০০
- ৭ম (পূর্বের ৮ ও ৯ নম্বর গ্রেড) ৭০,০০০
- ৮ম (পূর্বের ১০ ও ১১ নম্বর গ্রেড) ৬৫,০০০
- ৯ম (পূর্বের ১২ ও ১৩ নম্বর গ্রেড) ৬০,০০০
- ১০ম (পূর্বের ১৪, ১৫ ও ১৬ নম্বর গ্রেড) ৫০,০০০
- ১১তম (পূর্বের ১৭ ও ১৮ নম্বর গ্রেড) ৪২,০০০
- ১২তম (পূর্বের ১৯ ও ২০ নম্বর গ্রেড) ৩৫,০০০
নতুন পে স্কেল কি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাস্তবায়ন করবে?
সাধারণত, একটি পে কমিশন গঠন করা হয় এবং সেই কমিশন তাদের সুপারিশমালা সরকারের কাছে জমা দেয়। এরপর একটি নির্বাচিত সরকার সেই সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করে নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন করে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য একটি পে কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং এই কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, নির্বাচনের আগে নতুন পে-স্কেল ঘোষণার সম্ভাবনা কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, পে-কমিশন প্রতিবেদন জমা দিলেও তা চূড়ান্ত করবে এবং বাস্তবায়ন করবে ভোটের পর নতুন নির্বাচিত সরকার। এর কারণ, একটি নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হয়, যা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে করা কঠিন হতে পারে। নতুন পে-স্কেল ঘোষণা ও বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরা নিয়ম অনুযায়ী মহার্ঘভাতা পেতে থাকবেন।
📊 গ্রেডভিত্তিক সম্ভাব্য বেতন কাঠামো (প্রস্তাবিত)
| গ্রেড | বর্তমান বেতন (গড়) | প্রস্তাবিত বেতন | সম্ভাব্য ইনক্রিমেন্ট |
|---|---|---|---|
| গ্রেড-১ | ৭৮,০০০ – ৮৫,০০০ | ১,৪০,০০০ | ১০% |
| গ্রেড-৫ | ৫০,০০০ – ৫৫,০০০ | ৮৫,০০০ | ৯% |
| গ্রেড-১০ | ৩০,০০০ – ৩২,০০০ | ৫৫,০০০ | ৮% |
| গ্রেড-১৫ | ২০,০০০ – ২২,০০০ | ৪০,০০০ | ৮% |
| গ্রেড-২০ | ১৬,০০০ – ১৭,০০০ | ৩৫,০০০ | ৭% |
প্রস্তাবিত জাতীয় বেতন স্কেল কর্মচারীদের জন্য কতটা সুবিধাজনক হবে তা কয়েকটি দিক থেকে বিশ্লেষণ করা যায়:
✅ সুবিধাজনক দিক: ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি ১২তম গ্রেডেও বেতন ৩৫,০০০ টাকা – যা বর্তমান স্কেলের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। উচ্চ গ্রেডে ভালো বৃদ্ধি ১ম থেকে ৪র্থ গ্রেডে ১৫,০০০ টাকা করে পার্থক্য থাকায় সিনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এটি বেশ আকর্ষণীয়। মধ্যম গ্রেডের উন্নতি ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি ধাপে ধাপে ৫,০০০ টাকা করে – আগের তুলনায় ভালো ইনক্রিমেন্ট। সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন বাজারমূল্য ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় এ বেতন কাঠামো সাধারণ জীবনযাত্রায় সহায়ক হবে।
⚠️ চ্যালেঞ্জ বা অসুবিধা: গ্রেড-পার্থক্যের অসামঞ্জস্য নিচের দিকের গ্রেডগুলোতে (১০ম থেকে ১২তম) বেতন বৃদ্ধির ধাপ একরকম নয়, ফলে বৈষম্যের অনুভূতি থাকতে পারে। ইনক্রিমেন্ট হার পরিষ্কার নয় যদি বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট যথেষ্ট না হয়, তবে কয়েক বছর পর এই বেতনও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য হারাতে পারে। মধ্যম গ্রেডের চাপ ৫ম থেকে ৯ম গ্রেডের কর্মীরা হয়তো মনে করতে পারেন যে তাদের বেতন বৃদ্ধি উচ্চ গ্রেডের তুলনায় কম হয়েছে।




ইনক্রিমেন্ট এর ক্ষেত্রে সবার সমান বা সামঞ্জস্য হওয়া উচিত।
জি।
জাতীয় বেতেন স্কেল-২০২৫ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সার্ভিস বেনিফিট না থাকলে পুরাতন কর্মচারীরা কোন আর্থিক সুবিধা পান না। কারণ, তাদের ইন্ক্রিমেন্ট পেয়ে বর্তমানে যে ধাপে গেছে, নতুন বেতন স্কেলে সে ধাপের উপরে কখনো দেয়া হয়না ফলে আর্থিক সুবিধা সাকুল্যে ৫০০-১০০০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু প্রচারণা করা হয় দ্বিগুন বা ১০০% বেতন বাড়ানো হয়েছে। এটা শুভঙ্করের ফাকি। নতুন যারা চাকরিতে আসবে তারা এ সুবিধা পাবে। কিন্তু পুরাতনরা অধরায় থেকে যাবে। তাই পে-কমিশনকে চাকরির সার্ভিস বেনিফিট সময়োপযোগি ও বাস্তবমুখী চিন্তা করতে হবে। নচেত পে-কমিশনের প্রস্তাবনার অজুহাতে দ্রব্যমূল্য একলাফে অনেক বেড়ে যাবে, আর নিম্নস্তরের কর্মচারীরা আর্থিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সরকার কর্তৃত গঠিত কমিটি হাই পাওয়ার কমিটি। উক্ত কমিটি সাধারণ কর্মচারীদের স্বার্থ বিবেচনার ক্ষেত্রে সাধারণ কর্মচারীরা কিভাবে জীবন-যাপন করে, কি কি সমস্যার সন্মুখীন হচ্ছে, জীবন মান ও সন্তানদের মানুষ করতে নুন্যতম ব্যয়, অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান,শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যয় কিভাবে নির্বাহ করা হবে সে বিষয়ে সুনিদ্দির্ষ্ট দিক নির্দেশনা না থাকলে এবং সরকারি কর্মচারীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না গেলে তারা সারাজীবন অবহেলিত হবে। সমাজে সরকারি কর্মচারীদের মূল্যায়ন থাকবে না। সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে। সর্বোপরি বেতন কাঠামো প্রণয়নে সার্ভিস বেনিফিট যুক্ত করা, গ্রেড ১২টির মধ্যে নামিয়ে আনা, বেতন পার্থক্য ১:৪ এর সীমাবদ্ধ রাখা, সকল ক্ষেত্রে পদোন্নতির সুযোগ রাখা, যে সব ক্ষেত্রে পদোন্নতির সুযোগ নাই, তাদেরকে নিদ্দির্ষ্ট সময়ে উচ্চতর স্কেল প্রদানের ব্যবস্থা রাখা, শিক্ষা ও চিকিৎসা ভাতা সময়োপযোগি করা, বিনা সুদে গৃহ ঋণ ও গাড়ী ঋণ সকলের জন্য উন্মুক্ত করা, সরকারী কর্মচারীদের জন্য প্রত্যেক জেলা সদরে বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন হাসপাতাল তৈরী করা বা বর্তমান হাসপাতালে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিনামূলে সেবা নিশ্চিত করা, বিনা মূল্যে পরীক্ষা নিরীক্ষা সুযোগ সৃষ্টি করা ইত্যাদি বাস্তবায়নে সরকার তথা রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় পদক্ষে নিলে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা নতুন জীবন ফিরে পাবে। বঞ্ছন্না অনেকাংশে লাঘব হবে। বর্ণিত দাবীসসমূহ আমার কাছে যৌক্তিক মনে হওয়ায় কারো ভিন্নমত থাকলে স্বাধীনভাবে নিজস্ব সমতামত প্রদানের মাধ্যমে সুন্দর বেতন কাঠামো গঠনে সহায়তা করুন। আল্লাহ আমাদের সুন্দর জীবন দান করুন।
নতুন পে স্কেল নির্বাচনের আগেই হলেই ভালো হবে।