Passport Without Police Verification 2025 । পাসপোর্টের জন্য আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই?
হ্যাঁ, এখন বাংলাদেশে পাসপোর্ট করার জন্য এখন আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই। জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে- ২০২৫ সালের শুরুতে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেন যে, পাসপোর্ট প্রদানের জন্য আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হবে না। এর ফলে, নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় হয়রানি দূর হবে– Passport Without Police Verification 2025
পাসপোর্ট পাওয়া কি এখন সহজ হলো? হ্যাঁ। এই সিদ্ধান্তের ফলে, নতুন পাসপোর্ট আবেদন করার সময় অনলাইনে যাচাই করা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতেই পাসপোর্ট দেওয়া হবে। তবে, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অনলাইনে যাচাই করা জন্ম নিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের এই সিদ্ধান্ত মূলত ই-পাসপোর্ট সেবার অংশ। অনলাইনে আবেদন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া ই-পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।
পাসপোর্ট ঘুষ দিতে হয় না? না। পাসপোর্ট পেতে অনেক সময় লেগে যেত এবং অনেক সময় ঘুষ দিতে হতো। ঘুষের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি এসেছে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় (৭৫.১%)। পাসপোর্টের জন্য এখন আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। এতে পাসপোর্ট দেওয়ার গতি বাড়বে, যা প্রবাসী, শিক্ষার্থী এবং পেশাজীবীদের উপকারে আসবে। ভেরিফিকেশনে অপ্রয়োজনীয় দেরি ও দুর্নীতি বন্ধে সহায়তা করবে। কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ- মানুষ এখন দ্রুত এবং ঘুষ না দিয়েই পাসপোর্ট পাবে। এতে কাজ, পড়াশোনা, পরিবার বা ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের মানুষ সহজে বিদেশ যেতে পারবে। এর ফলে রাষ্ট্রের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।
পাসপোর্ট কি এখন আগের চেয়ে দ্রুত পাওয়া যায়? হ্যাঁ, ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর থেকে পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়া আগের চেয়ে অনেক দ্রুত এবং সহজ হয়েছে। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনের জন্য আবেদন করলে দ্রুততম সময়ে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া সম্ভব। ই-পাসপোর্ট সিস্টেমে আবেদন, ফি প্রদান এবং ডেলিভারি প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে, যা সামগ্রিক সময় কমিয়ে এনেছে। ই-পাসপোর্ট-এর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডেলিভারির সম্ভাব্য সময়: ই-পাসপোর্ট আবেদনের ফি এবং ডেলিভারির সময় অনুযায়ী তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে: অতি জরুরি (Very Urgent): এই ক্যাটাগরিতে সাধারণত ২ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া যায়। তবে এর জন্য ফি তুলনামূলকভাবে বেশি। অতি জরুরি আবেদনের ক্ষেত্রে, আপনাকে নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে আবেদনের সাথে জমা দিতে হতে পারে। জরুরি (Urgent): এই ক্যাটাগরিতে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া যায়। এর ফি সাধারণের চেয়ে বেশি কিন্তু অতি জরুরি’র চেয়ে কম। সাধারণ (Regular): এই ক্যাটাগরিতে পাসপোর্ট পেতে ১৫ থেকে ২১ কর্মদিবস সময় লাগে। এটি সবচেয়ে কম খরচের ক্যাটাগরি।
সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করা যায়, যা সময় বাঁচায়। ই-পাসপোর্টের জন্য একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেস ব্যবহার করা হয়, যা তথ্য যাচাই ও প্রক্রিয়াকরণের সময় কমিয়ে দেয়।
যে কারণে পাসপোর্ট প্রক্রিয়া দ্রুত হয়েছে- ডেলিভারি সময় নির্বাচন: আবেদনের সময়ই আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ডেলিভারির ধরন (সাধারণ, জরুরি, বা অতি জরুরি) নির্বাচন করতে পারেন। স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া: ই-পাসপোর্টের চিপে বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ ও আইরিশ) সংরক্ষিত থাকে, যা ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াও দ্রুত করে। তবে মনে রাখতে হবে, যেকোনো সরকারি সেবার মতোই পাসপোর্ট পেতে দেরি হতে পারে যদি আপনার আবেদনপত্রে কোনো ভুল থাকে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অসম্পূর্ণ হয়, অথবা পুলিশ ভেরিফিকেশনে কোনো জটিলতা দেখা দেয়। তাই, আবেদন করার সময় সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করা এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সঙ্গে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Caption: Source of Info
ই-পাসপোর্ট আবেদনের সাধারণ নির্দেশাবলী ২০২৫ । যেভাবে আপনি অনলাইনে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন
- আবেদনকারীকে ই-পাসপোর্টের আবেদন আবশ্যিকভাবে অনলাইনে (https://www.epassport.gov.bd) করতে হবে।
- ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো ছবি সংযোজন অথবা কোনো কাগজপত্র সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদে (BRC) প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
- ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং/অথবা ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অবশ্যই থাকতে হবে।আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ; আবেদনকারীর বয়স ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ; আবেদনকারীর বয়স ২০ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র, তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে আবেদনের ক্ষেত্রে ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ গ্রহণযোগ্য হবে।
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের কম হলে (যার জাতীয় পরিচয়পত্র নেই) নতুন পাসপোর্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে পিতা বা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর আবশ্যিকভাবে উল্লেখ করতে হবে;
- দত্তক/অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সাথে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত আদেশের অনুলিপি দাখিল করতে হবে;
- আবেদনকারীকে কনস্যুলেটের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় (ফ্লোরিডা, আলাবামা, আরকানসাস, জর্জিয়া, লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, টেনেসি ও সাউথ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্য) বসবাসরত হতে হবে।
- আবেদনের ধরণ অনুযায়ী প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত দলিলাদি আপলোড/সংযোজন করতে হবেঃ ক) বাংলাদেশ সরকারের কর্মচারিদের ক্ষেত্রে সরকারি আদেশ/এনওসি/প্রত্যায়নপত্র/অবসরোত্তর ছুটির আদেশ/পেনশন আদেশ ইত্যাদি যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও আপলোড করা থাকতে হবে। খ) বিবাহ সনদ/নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা (যাচাইযোগ্য)
- ই-পাসপোর্টের আবেদনে বর্তমান ঠিকানা হিসেবে মিশনের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার কোনো ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
- সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের আর কোনো প্রয়োজন নেই।
- আবেদনকারীর মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট থাকলে ই-পাসপোর্ট নতুন ইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বশেষ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অথবা ই-পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী ই-পাসপোর্ট প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে, যা বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের সময় স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স ০৬ (ছয়) বছরের কম হলে ৩আর (3R) সাইজের (ল্যাব প্রিন্ট গ্রে ব্যাকগ্রউন্ড) ছবি দাখিল করতে হবে।
- পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে জিডি করতে হবে এবং নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সময় হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্টের ফটোকপি ও জিডির মূল কপি দাখিল করতে হবে।
- অফিস চলাকালীন সময়ে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন সম্পন্নকারীদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী পাসপোর্টের আবেদন ও বায়োমেট্রিক তথ্যাবলী গ্রহণ করা হবে এবং দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইস্যুকৃত পাসপোর্ট ডেলিভারি করা হবে। উল্লেখ্য, আবেদন গ্রহণের পর সাধারণত ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যে পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়ে থাকে (তথ্যগত ভুল না থাকলে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে যথাসময়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন হলে)।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দাখিল করতে না পারলে কোনোভাবেই আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব হবে না এবং সরকার নির্ধারিত ফি প্রদানের পর আবেদন বাতিল করে ফি ফেরতযোগ্য হবে না।
- ই-পাসপোর্ট পোর্টালে ‘চেক স্ট্যাটাস’ লিংকে (https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status) প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানা যাবে।
অনলাইনে আবেদন করার পর কি কি ডকুমেন্ট নিয়ে কনস্যুলেটে আসতে হবে?
অনলাইন আবেদন শেষে আবেদন নিশ্চিতকরণের প্রিন্ট কপি (বারকোডসহ); অনলাইন আবেদনপত্রের সারসংক্ষেপের বারকোডসহ প্রিন্ট কপি (অ্যাডবি অ্যাক্রোবেট ব্যবহার করে); সর্বশেষ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অথবা ই-পাসপোর্টের মূল কপি (যদি থাকে); জাতীয় পরিচয়পত্র এবং/অথবা ১৭-ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি; ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইস্যুকৃত ভ্যালিড আইডি কার্ডের মূল কপি; ’Consulate General of Bangladesh Miami’ বরাবর নির্ধারিত ফি (ছক অনুযায়ী) মানি অর্ডার, অথবা পোস্টাল অর্ডার, অথবা ব্যাংক সার্টিফাইড চেক; অথবা ক্রেডিট কার্ড (বণিক চার্জ প্রযোজ্য @৩%); তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রমাণক; আবেদনপত্রের ধরণ অনুযায়ী অন্যান্য প্রমাণক; বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের প্রমাণকের মূল কপি (ভ্যালিড ভিসা/রেসিডেন্স পারমিট/গ্রিন কার্ড); আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে থাকলে আবশ্যিকভাবে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ (Dual Nationality Certificate); হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুলিশ রিপোর্টের কপি (পাসপোর্টের নম্বর উল্লেখসহ) উল্লেখ্য, ১৮ বছরের অধিক বয়সী প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় পাসপোর্ট নীতিমালা অনুযায়ী আবেদনের তথ্য (নিজের নাম ও বাবা-মা এর নামের বানান)- এর সাথে সর্বশেষ মেশিন রিডেবল বা ই-পাসপোর্টের তথ্য ও অনলাইনে যাচাইযোগ্য জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যের শতভাগ মিল থাকতে হবে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে আবেদনের তথ্য (নিজের নাম ও বাবা-মা এর নামের বানান)- এর সাথে সর্বশেষ মেশিন রিডেবল বা ই-পাসপোর্টের তথ্য ও অনলাইনে যাচাইযোগ্য জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যের পার্থক্য থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনে জন্ম নিবন্ধন সনদ হালনাগাদ করে নিতে হবে। তথ্যগত কোনো পার্থক্যের কারণে পাসপোর্ট আবেদনে জটিলতা হলে কনস্যুলেট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায়ী থাকবে না।



