জুডিসিয়াল সার্ভিস পে-কমিশন ২০২৫ । বিচার বিভাগীয় পে-কমিশন কেন পুনর্গঠন করা হয়েছে?
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পে-কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে যাতে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলো সমাধান করা যায় এবং সরকারি বিচারকদের জন্য একটি কার্যকর ও ন্যায্য বেতন কাঠামো সুপারিশ করা যায়। এই কমিশন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বর্তমান বেতন-ভাতা, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং বেতন বৈষম্য পর্যালোচনা করবে এবং একটি নতুন বেতন কাঠামো তৈরির জন্য সুপারিশ জমা দেবে– জুডিসিয়াল সার্ভিস পে-কমিশন ২০২৫
২০০৭ সালের পে কমিশন পুন:গঠন করা হয়েছে? হ্যাঁ। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস পে-কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৫ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (পে-কমিশন) বিধিমালা, ২০০৭ এর বিধি ৩(১) অনুসারে পে-কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে । এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, বাস্তবায়ন-১ অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন শাখা-১ থেকে জারিকৃত একটি প্রজ্ঞাপন। প্রজ্ঞাপনটি ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, অর্থাৎ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হয় । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (পে-কমিশন) বিধিমালা, ২০০৭ প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছে । সংবিধানের ১১৫ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই বিধিমালা প্রণয়ন করেছেন । এটি ১৬ জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে প্রকাশিত হয়েছে ।
পে-কমিশনের গঠন ও দায়িত্ব কি? এই বিধিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ এবং এ সংক্রান্ত সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি পে-কমিশন থাকবে । কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, যাকে প্রধান বিচারপতির পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করবেন ।
ঐ সময়ের কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা কে ছিলেন?
প্রধান বিচারপতির পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি ।
রাষ্ট্রপতি মনোনীত আইন কমিশনের একজন সদস্য ।
পদাধিকারবলে বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ।
অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়-এর সচিব, পদাধিকারবলে ।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয়-এর সচিব, পদাধিকারবলে ।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়-এর সচিব, পদাধিকারবলে ।
পদাধিকারবলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার ।
প্রধান বিচারপতি মনোনীত ঢাকায় কর্মরত জেলা জজ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা ।
পে-কমিশনের প্রধান দায়িত্ব হলো বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পর্যালোচনা ও সুপারিশ প্রণয়ন করা । এছাড়াও, কমিশন প্রতি পাঁচ বছর অন্তর দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং সার্ভিসের বেতন কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে বেতন ও ভাতার বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করে সরকারের কাছে পেশ করবে । প্রয়োজনে, সরকার অনুরোধ করলে বা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন স্কেল চালু হলে, কমিশন যেকোনো সময় অন্তর্বর্তীকালীন সুপারিশও দিতে পারবে ।
০৩টি পে কমিশন ২০২৫ / পে স্কেল বাস্তবায়নকল্পে সরকার এ পর্যন্ত তিনটি বিষয়ে পে কমিশন গঠন করিল
এ পর্যন্ত সরকার সিভিল, সামরিক ও জুডিশিয়াল তিনটি বিষয়ে পে কমিশন গঠন করল? জি। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার বেসামরিক (Civil), সামরিক (Military) এবং বিচার বিভাগীয় (Judicial) এই তিনটি ক্ষেত্রের জন্যই আলাদা পে কমিশন বা কমিটি গঠন করেছে। বেসামরিক সরকার মূলত বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘জাতীয় বেতন কমিশন’ গঠন করে থাকে। সম্প্রতি, ২০২৫ সালে একটি জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছে।সামরিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য পৃথক ‘সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি’ গঠন করা হয়। ২০২৫ সালেও সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর জন্য একটি বেতন কমিটি গঠিত হয়েছে। জুডিশিয়াল বিচার বিভাগের জন্য পৃথক পে কমিশন গঠনের কথা বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (পে-কমিশন) বিধিমালা, ২০০৭-এ উল্লেখ আছে। সম্প্রতি, ২০২৫ সালে এই কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস পে-কমিশন ২০০৭ ডাউনলোড
নতুন পে-কমিশনের সদস্যদের তালিকা ২০২৫ । এই কমিশন ইতঃপূর্বে জারিকৃত এসআরও নং-৮-আইন/২০০৭-অম/অবি(বাস্ত-১)/বিবিধ-৩/২০০৬, তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০০৭ অনুযায়ী কার্যসম্পাদন করবে । বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এই কমিশনের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন । রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই প্রজ্ঞাপনে সচিব ড. মোঃ খায়েরুজ্জামান মজুমদার স্বাক্ষর করেছেন ।
- চেয়ারম্যান: বিচারপতি এস. এম. এমদাদুল হক, বিচারক, আপীল বিভাগ (প্রধান বিচারপতির পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত) ।
- সদস্য: বিচারপতি ফাতেমা নজীব, বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগ (প্রধান বিচারপতির পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত) ।
- সদস্য: ড. নাইমা হক, সদস্য, আইন কমিশন (রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত) ।
- সদস্য (পদাধিকারবলে): বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ।
- সদস্য (পদাধিকারবলে): সিনিয়র সচিব/সচিব, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় ।
- সদস্য (পদাধিকারবলে): সিনিয়র সচিব/সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ।
- সদস্য (পদাধিকারবলে): সিনিয়র সচিব/সচিব, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ।
- সদস্য (পদাধিকারবলে): রেজিস্ট্রার জেনারেল, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ।
- সদস্য: মোঃ আজিজুল হক, যুগ্ম সচিব (জেলা জজ), আইন ও বিচার বিভাগ (প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত) ।
জুডিশিয়াল কমিশনের কার্যপদ্ধতি কি?
জুডিশিয়াল কমিশনের সভার জন্য ন্যূনতম পাঁচজন সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে । সভায় উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে এবং মতামতের সমতার ক্ষেত্রে সভার সভাপতির নির্ণায়ক সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষমতা থাকবে । অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে । উল্লেখ্য, এই বিধিমালা জারির মাধ্যমে ২১ মে ২০০৬ তারিখে জারিকৃত বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (পে-কমিশন) বিধিমালা, ২০০৬ রহিত করা হয়েছে ।
পে স্কেল কি চলতি বছর বাস্তবায়ন হবে? নতুন পে-স্কেল এই বছর (২০২৫) বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা কম। বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পে-কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এবং তাদের প্রথম সভা ১৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে হিসাবে, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা আগামী বছরের (২০২৬) ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হবে। নির্বাচনের পর নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে এই বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন পে-স্কেল ঘোষণা ও বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরা নিয়ম অনুযায়ী মহার্ঘভাতা প্রাপ্য হবেন।
পে কমিশন কি সরকারী কর্মচারীদের সাথে আলোচনায় বসে?
| সরকারি কর্মচারীদের জন্য গঠিত পে কমিশন তাদের বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য সরাসরি | সরকারি কর্মচারী বা তাদের সংগঠনগুলির সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনার ব্যবস্থা রাখে। | পুরোনো একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, আন্দোলনরত কর্মচারী সংগঠনগুলোর সাথে একটি কমিটি আলোচনা করে একটি অধ্যাদেশ সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, |
| যা ইঙ্গিত দেয় যে এই ধরনের আলোচনা অতীতে হয়েছে। এছাড়া, নবম পে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, | যা এই প্রক্রিয়াকে একটি সমন্বিত রূপ দেয়। তবে, সরাসরি সাধারণ কর্মচারীদের সাথে কমিশনের বৈঠকের সুনির্দিষ্ট কোনো খবর পাওয়া যায়নি। | |



