তথ্য সংগ্রহের জন্য আসছে অনলাইন জরিপ ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীদের নবম পে-স্কেলের পথে সরকার?
নবম পে-স্কেলের পথে সরকার তথ্য সংগ্রহের জন্য আসছে অনলাইন জরিপ!- সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো সংশোধনে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে-কমিশন অনলাইন জরিপের মাধ্যমে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে তা নিয়ে সরকারী কর্মচারীদের আপত্তি রয়েছে– তথ্য সংগ্রহের জন্য আসছে অনলাইন জরিপ ২০২৫
অনলাইন সার্ভে? হ্যাঁ। সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন স্কেল (পে-স্কেল) দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়মমাফিক ধারায় শুরু হয়েছে। এই লক্ষ্যে জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫ তাদের কার্যক্রম জোরদার করেছে। নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে। জানা গেছে, কমিশন এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য অনলাইন জরিপ পরিচালনা করবে। এই জরিপের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
২২ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা– জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫ কর্তৃক অনলাইন জরিপ পরিচালনা ও তথ্য বিশ্লেষণসহ জরিপ প্রতিবেদন প্রেরণের বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে এই বৈঠকটি ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখ রোজ সোমবার বেলা ২:০০ ঘটিকায় পরিসংখ্যান ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সরকারি কর্মচারীদের পে স্কেল দেওয়া নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে এই অনলাইন জরিপের জন্য প্রশ্নপত্র তৈরির কাজ চলছে বলে জানা যায়।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হাতে তথ্য বিশ্লেষণের দায়িত্ব? হ্যাঁ। অনলাইন জরিপের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-কে। বিবিএস তথ্য বিশ্লেষণ শেষে জরিপ প্রতিবেদন তৈরি করে তা জাতীয় বেতন কমিশন-এর কাছে জমা দেবে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই কমিশন নতুন বেতন কাঠামো সম্পর্কে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রণয়ন করবে। নিয়মতান্ত্রিক এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নতুন পে-স্কেল নিয়ে আগ্রহ ও প্রত্যাশা বেড়েছে।
সরকারি কর্মচারীদের মতে—ঋণ ও কিস্তির দুঃসহ চাপ জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে গিয়ে ১৮ লক্ষাধিক কর্মচারী ঋণের বোঝায় ডুবে আছেন, যাদের কিস্তির চাপ জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। চিকিৎসা ও শিক্ষার অনিশ্চয়তা পর্যাপ্ত চিকিৎসা ভাতার অভাবে অনেক কর্মচারী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন বা সন্তানের পড়াশোনার খরচ জোগাতে গিয়ে চরম হিমশিম খাচ্ছেন। ভাতার অপ্রতুলতা ও সামাজিক বঞ্চনা বছরের পর বছর ধরে ভাড়াবাড়িতে অনিশ্চিত জীবন কাটানো, ঈদে পশু কোরবানি দিতে না পারা, কিংবা বছরে একবারও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে যেতে না পারার মতো সামাজিক বঞ্চনা ও লজ্জা তাদের হৃদয়ে গভীর বেদনা সৃষ্টি করে। মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত অনেক কর্মচারী ইলিশ মাছের মতো বাঙালির প্রিয় খাদ্য থেকেও বঞ্চিত হন, বা পিতামাতার শেষ চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে অবসরের আগেই জীবন হারান।
সরকারি কর্মচারীরা মনে করেন, তাদের এই বেদনা, বঞ্চনা ও সংগ্রামের চিত্র কোনো জরিপে লেখা থাকবে না, কারণ এই সত্য সংখ্যায় নয়, প্রতিটি কর্মচারীর হৃদয়ে লুকিয়ে থাকে। এ কারণেই ন্যায্য অধিকার ও মৌলিক চাহিদা আজও অপূর্ণ থাকায় সরকারি কর্মচারীরা আবেগী হচ্ছেন, ক্ষুব্ধ হচ্ছেন এবং আন্দোলনে সক্রিয় হচ্ছেন। তারা মনে করছেন, জরিপের মতো পরিসংখ্যানগত পদক্ষেপের চেয়ে তাদের মৌলিক বৈষম্যগুলো দূর করে দ্রুত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।
নবম জাতীয় পে-স্কেল নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় অনলাইন জরিপ শুরু হওয়ার তোড়জোড় চললেও, সরকারি কর্মচারীদের চাপা ক্ষোভ ও বঞ্চনার প্রকৃত চিত্র কোনো সংখ্যাভিত্তিক হিসাবে ধরা পড়বে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন এবং ভুক্তভোগীদের মতে, তাদের জীবনের দুঃখ, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ কোনো জরিপের প্রশ্নমালায় পরিমাপ করা সম্ভব নয়। কর্মচারীদের বিভিন্ন মন্তব্য ও বক্তব্য থেকে উঠে এসেছে, জরিপের বাইরেও তাদের জীবনে বহু কঠিন বাস্তবতা বিদ্যমান, যা কেবল সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না।

Caption: Pay scale online Survey
পে স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের দাবী ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন (যেমন: বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ, ১১-২০তম গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় ফোরাম ইত্যাদি) দীর্ঘদিন ধরে মূলত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কিছু বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়ে আসছে।
- পে-কমিশন গঠন করে বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন: কর্মচারীরা মনে করেন ২০১৫ সালের অষ্টম পে-স্কেলে অনেক বৈষম্য রয়ে গেছে, তাই পে-কমিশন গঠনের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন (নবম) পে-স্কেল চালু করতে হবে।
- অন্তর্বর্তীকালীন ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান: নতুন পে-স্কেল চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়নের আগে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, বিশেষ করে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য, ৫০% মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) চালু করতে হবে।
- টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল: ২০১৫ সালের পে-স্কেলে বাতিল হওয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রথাটি পুনরায় চালু করতে হবে।
- পদবি ও গ্রেড পরিবর্তন করে বৈষম্য দূরীকরণ: * সচিবালয়ের মতো সকল দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সমপদগুলোর পদনাম পরিবর্তন করে গ্রেড বৈষম্য দূর করতে হবে। * এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।
- রেশন ব্যবস্থা ও ভাতাদি পুনর্নির্ধারণ: * ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য রেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। * বাজারমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে সকল ভাতাদি (যেমন- বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা ইত্যাদি) পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।
- পেনশন ও গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত দাবি: * বিদ্যমান গ্র্যাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থলে শতভাগ নির্ধারণ করতে হবে। * পেনশন গ্র্যাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
- চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়সসীমা: চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
-
আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল: আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করে ওই পদ্ধতিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। সংক্ষেপে বলা যায়, সরকারি কর্মচারীদের মূল দাবি হলো বৈষম্য দূর করে দ্রুত নবম পে-স্কেল কার্যকর করা এবং তা বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত জীবনধারণের জন্য যথাযথ মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা।
অনলাইন জরিপ কি সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুফল বয়ে আনবে?
সরকারি কর্মচারীদের নবম পে-স্কেল এবং বেতন কাঠামো নিয়ে যে আলোচনা চলছে, সেখানে আপনার প্রশ্নটি খুবই প্রাসঙ্গিক। এটা ঠিক যে, সরকারি চাকরির আইন এবং বেতন কাঠামোর জটিলতা, যেমন- বিভিন্ন গ্রেড, ইনক্রিমেন্ট, সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেলের মতো বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের কাছে সহজে বোধগম্য নয়। এই বৈষম্যগুলো মূলত বেতন কমিশনের গবেষক, পরিসংখ্যানবিদ এবং সরাসরি ভুক্তভোগী কর্মচারীদের পক্ষেই ভালোভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব। তবে, যে অনলাইন জরিপের কথা বলা হচ্ছে, তা সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে। পে-কমিশন তার সুপারিশ প্রণয়নের জন্য তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাহায্য নিচ্ছে। অনলাইন জরিপের মাধ্যমে বেতন কমিশনের গবেষকরা সরাসরি মাঠ পর্যায়ের তথ্য পাবেন। কোন গ্রেডের কর্মচারীরা কী ধরনের আর্থিক সংকটে আছেন, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় (যেমন- বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা খরচ) কেমন বাড়ছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ও পরিমাণগত (Quantitative) তথ্য পাওয়া যাবে। এটি কর্মচারীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে, যেখানে তারা কোনো সংগঠনের মাধ্যমে নয়, বরং ব্যক্তিগতভাবে তাদের দাবি ও সমস্যাগুলো কমিশনের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। এটি বেতন কাঠামোর প্রকৃত বৈষম্যগুলো তুলে আনতে সাহায্য করবে। বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ মূলত ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বেশি আসে।
জরিপের ডেটা বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হবে যে, নিচের দিকের গ্রেডগুলোতে জীবনযাত্রার ব্যয়ের তুলনায় বেতন কতটা কম। এই তথ্য কমিশনের সুপারিশে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য অধিক সুবিধা যুক্ত করতে সহায়ক হতে পারে, যেমন- রেশনিং বা বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা।
| সময়োপযোগী তথ্য বিশ্লেষণ প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পে-স্কেল ঘোষণার একটি নিয়ম থাকলেও তা সবসময় মানা হয় না। এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কর্মচারীদের জীবন কঠিন করে তোলে। | অনলাইন জরিপ কমিশনের হাতে মুহূর্তের বাজার পরিস্থিতি ও কর্মচারীদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে আপডেট তথ্য তুলে দেবে, যা নতুন স্কেলকে আরও বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী করতে সাহায্য করবে। | সংক্ষেপে বলা যায়, যদি এই অনলাইন জরিপটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং সকল গ্রেডের কর্মচারীর অংশগ্রহণমূলক হয় এবং পরিসংখ্যান ব্যুরো সেই তথ্যগুলোকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করে, তবে তা কমিশনের সুপারিশ প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। |
| এর ফলে কর্মচারীদের আর্থিক দুর্দশা ও বিদ্যমান বৈষম্যগুলো দূর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যাবে। | ||




দাদা আর তালবাহানা ভালো লাগতেছে না কতদিন যে করবে তালবাহানা
নবম পে-স্কেল দ্রুত চাই
. আমরা চাই জানুয়ারী-২০২৫ থেকে ৯ম পে স্কেল কার্যকর হোক।
২. বেতন গ্রেড সংস্কার করে বেতন গ্রেড ১২ টি করা হোক।
৩. বেসিক নূন্যতম ৩৫০০০/- করা হোক। ৩। ক) ১৫% বার্ষিক ইনক্রিমেস্ট দেয়া সময়ের দাবি।
৪. মেডিকেল ভাতা ১০,০০০/- করা হোক।
৫. বাসা ভাড়া ঢাকা শহর ও সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৮০% এবং জেলায় ৭০% ও উপজেলায় ৬০% করা হোক।
৬. শিক্ষা ভাতা এক সন্তান ৫০০০/- আর দুই সন্তানের জন্য ১০০০০/- করা হোক।
৭. বৈশাখী ভাতা ৫০% করা হোক।
৮. শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা প্রতি ২ বছর অন্তর করা হোক।
৯. টিফিন ভাতার পরিবর্তে লাঞ্চ ভাতা,রেশন ভাতা,বিদ্যুৎ ভাতা, গ্যাস ভাতা, যাতায়াত ভাতা, মোবাইল ফোন ভাতা চালু করা সময় উপযোগী।
১০. পেনশন ৯০% এর পরিবর্তে ১০০%
১১. ১ টাকা সমান ২৩০/- এর পরিবর্তে ৫০০/- করা হোক।
১২.৩ % সুদে সহজ কিস্তিতে গৃহ নির্মান ঋণ দেওয়া হোক।
বেতন কাঠামো ২০ গ্রেডের পরিবর্তে ১২ গ্রেড করা হউক। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতন ১ঃ৪ করা হউক।
মোহাম্মদ হারুন বিন কবির
ইবতেদায়ী শিক্ষক,
কালু ফকির পাড়া আদর্শ বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, চৌফলদণ্ডী, সদর, ককসবাজার।