সরকার বর্তমান ক্রাইসিস প্রিরিয়ডে নতুন পে স্কেল নিয়ে ভাবছে না -দ্রব্যমূল্য সমন্বয়ের জন্য ১০-২০% মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার চিন্তা করছে – PayScale News 2023
মহার্ঘ ভাতা হল একটি অতিরিক্ত ভাতা। এটিকে ইংরেজীতে বলা হয় Dearness Allowance । হিসাবে বিজ্ঞানের ভাষায় মহার্ঘ ভাতা হচ্ছে কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ মালিক বা প্রতিষ্ঠানের নিকট একটি ব্যয় অন্যদিকে শ্রমিক বা কর্মীদের নিকট এটি একটি আয়। জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে ( দ্রব্য + নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম + যাতায়াত ব্যয় ইত্যাদি ব্যয় বৃদ্ধি) শ্রমিক বা কর্মচারীদের সাময়িক ভাবে মূল বেতনের সাথে যে অতিরিক্ত ভাতা বা অর্থ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয় তাই “মহার্ঘ ভাতা” বলে পরিচিত।
বাড়ি ভাড়া বাড়বে কি? – না। মহার্ঘ ভাতা দিলে বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধি পায় না। এক্ষেত্রে নির্ধারিত সিলিং তৈরি করে শুধুমাত্র মূল বেতন বৃদ্ধি করা হয়। সরকার জাতীয় বেতনঞ্চেলের আওতাভুক্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত সংস্হা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যকে শান্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে তাদের মূল বেতনের ১০ (দশ) থেকে ২০ (বিশ) শতাংশ হারে বৃদ্ধি করতে পারে। যদি ২০% বৃদ্ধি পায় তবে ৮২৫০ টাকা এর ২০% হিসাব করলে ১৬৫০ টাকা হয়। এক্ষেত্রে মাসিক সর্বনিম্ন ১৭০০-২০০০ টাকা মূল বেতন বৃদ্ধি হতে পারে এবং সর্বোচ্চ ৮,০০০/- (আট হাজার) টাকা মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
মূল্যস্ফীতির চাপ থাকলেও অর্থনীতিতে সংকটের কারণে আপাতত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো বা পে স্কেল দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। তবে তাঁদের কিছুটা স্বস্তি দিতে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে সরকারের। আগামীকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আগামী অর্থবছরের বাজেট চূড়ান্ত করার বৈঠকে এ বিষয়ে প্রস্তাব উঠছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে আগামী অর্থবছরের জন্য আয় ও ব্যয়ের পরিকল্পনা উপস্থাপন করার কথা। সূত্র –সমকাল নিউজ
মহার্ঘ ভাতার আদেশ ঠিক কিভাবে তৈরি করা হয়? / যদি মহার্ঘ ভাতা বাড়ে তবে কি কি ভাতার উপর প্রভাব পড়ে? । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ উপাত্ত অনুযায়ী গেল এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ কিন্তু বেতন বৃদ্ধি ৫ শতাংশই রয়ে গেছে
মহার্ঘ ভাতার আদেশ জারি হলে শুধুমাত্র মুল বেতন বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধি পাবে না। তবে চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা ভাতা, টিফিন ভাতা ও অন্যান্য ভাতার ক্ষেত্রে আদেশ জারি হলে বাড়বে অন্যথায় বাড়বে না।
Caption: Source of information
মহার্ঘ ভাতা বৃদ্দি সম্ভাবনা ২০২৩ । মহার্ঘ ভাতা কিভাবে কার্যকর হয়?
- অর্জিত ছুটি বা প্রাক-অবসর ছুটি (PRL)-তে থাকা র্যকর্তা-কর্মচারীগণ ছুটি পূর্বকালীন সর্বশেষ প্রাপ্য মূল বেতনের ভিত্তিতে পরিউক্ত হারে মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্য হয়।
- পরবর্তী নতুন জাতীয় বেতনস্কেল কার্যকর হওয়ার তারিখের পূর্ব দিন পর্যন্ত যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী পেনশনে গমন করেছেন বা করবেন তাঁরা মূল বেতনের সাথে এ মহার্ঘভাতা যোগ করে পেনশন নির্ধারণের সুবিধা প্রাপ্য হয়।
- সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ সাময়িক বরখাস্তের তারিখের অব্যবহিত পূর্বের মূল বেতনের ৫০% (অর্ধেক) এর উপর ২০% হারে এ মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্য হয়।
- সরকার হতে পেনশন গ্রহণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ পেনশনের বিদম্যান অংশের উপর ২০% হারে মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্য হয়।
- এমপিওভূক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষক-কর্মচারীগণ একই হারে এ মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্য হয়।
- জাতীয় বেতনস্কেলের আওতায় চুক্তিভিত্ত্বির নিয়াজিত কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের ক্ষেত্রে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োজিত পদে নির্ধারিত মূল বেতনের ভিত্তিতে এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে। তবে শর্ত থাকে যে, তিনি পেনশনভোগী হলে নীট পেনশন অথবা চুক্তি ভিত্তিক নিয়োজিত পদের মূল বেতনের ভিত্তিতে যে কোন এক ক্ষেত্রে এ মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্য হয়।
- বিনা বেতনে ছুটিতে (Leavel without pay) থাকাকালীন কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ এ সুবিধা প্রাপ্য হবেন না; এবং
যে সকল অবসর গ্রহণকারী কর্মকর্তা/ কর্মচারী তাদের গ্রস, পেনশনের ১০০% (একশত ভাগ ) অর্থাৎ সম্পূর্ণ অংশ সমর্পন করে এককালীন আনুতোষিক উত্তোলন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে এ সুবিধ প্রযোজ্য হবে না। - সরকারের রাজস্ব বাজেট হতে প্রদত্ত অনুদানে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যান্য স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা/ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরকে এ মহার্ঘ ভাতা প্রদান বাবদ প্রয়োজনীয় বায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের নিজস্ব বাজেট হতে মিটাতে হয়।
- ০১ জুলাই তারিখ হতে কার্যকর হতে পারে।
অন্যান্য ভাতা কি বাড়তে পারে?
সরকারি কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা গ্রেড অনুযায়ী ১৫০০ টাকা হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। শিক্ষা ভাতা এক সন্তানদের জন্য ৫০০ টাকা এবং দু’সন্তানের জন্য ১০০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। টিফিন ভাতা গ্রেড অনুসারে ২০০ টাকা হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২০০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হতে পারে। ভাতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দ্বিগুণ নীতি অনুসরণ করা হতে পারে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইতিপূর্বে এ বিষয়ে মৌখিক বক্তব্য প্রদান করলে বর্তমানে সেটি নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি।
অন্যান্য দাবীগুলোর কি হবে?
সরকারি কর্মচারীদের ৭ দফা দাবী নিয়ে আন্দোলন ও মানববন্ধন চলমান রয়েছে। দাবীগুলো হল ০১। পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করত হবে। ০২। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে। ৩। সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে। ৪ । টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। ৫। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ৬। আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। ৭। বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে। এ সব দাবী বিষয়ে সরকারি কোন বক্ত এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি।
বি:দ্র: পত্র পত্রিকায় মহার্ঘভাতার গুঞ্জন শোনা গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে নেগেটিভ সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে। সরকার বাজেটে মহার্ঘ ভাতা বা পে স্কেলের জন্য কোন অর্থ বরাদ্দ রাখেনি। সরকারি অর্থে কৃচ্ছ্রতা সাধনের জন্য কোন মহার্ঘ ভাতা দিবে না বলে সরকার পরিস্কার করেছে বিষয়টি।
সরকারি কর্মচারী মহাসমাবেশ ২০২৩ । ০৭ দফা দাবি আদায়ে আগামী ২৬ মে ২০২৩ তারিখে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হইবে
অবসরপ্রাপ্ত যে সকল চাকুরীজীবী গণ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উপর নির্ভরশীল তাদের অবস্থা কি হবে ! কারন মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে অথচ সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমেছে। তাদের মানবেতর জীবনযাপন থেকে কিভাবে পরিত্রাণ হবে !
আমরা বেসরকারি কলেজের শিক্ষক। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি সরকার যখন পে-স্কেল ঘোষণা করে তখন সয়ংক্রিয়ভাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সেই পে – স্কেল কার্যকর হয়ে যায়, ঠিক মহার্ঘ ভাতা ও কার্যকর হয়ে যায়। তাহলে খবর টা সরকারী কর্মচারী দের না বলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী দের কে উল্লেখ করে খবর বা প্রতিবেদন প্রকাশ করা যায় না ? আমাদের কে ভালো লাগতো।
যায়। পরবর্তীতে চেষ্টা করবো।
ঋণ ও ব্যাংক আমানতের সিলিং তুলে দিলে সঞ্চয়পত্রের রেট বাড়বে।