রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এই শব্দগুলো ব্যবহার করা যাবে না। সম্মান প্রদর্শনের সচিব বা অন্য পদমর্যাদার কাউকে মহোদয় ডাকতে পারেন- সাধারণত মহাপরিচালক বা সচিবদেরকে মহোদয় বলেই ডাকে অধীন কর্মকর্তা কর্মচারীগণ– মহামান্য ও মহোদয় এর ব্যবহার ২০২৪
জনগণ কর্মকর্তাদের স্যার বলবে নাকি মহোদয়? মন্ত্রী, সচিব, মহাপরিচালক তাঁদেরকে মাননীয় বলে সম্ভোধন করতে হবে এমন কোনো বিধান বা আদেশ আছে বলে মনে হয়না। সন্মানীত ব্যক্তিগনকে সন্মান প্রদর্শন করলে আপনি নিজেও সন্মানীত হবেন এবং এটি দেশীয় সংস্কৃতির সাথে জড়িত। আমরা আবহমান কাল হতে সন্মানীত ব্যক্তিদেরকে সন্মান জানাতে অভ্যস্ত এবং আমাদের সংস্কৃতিতে প্রোথিত।বাধ্যবাদকতা নেই, অভিরুচির সাথে সম্পর্কিত। প্রকৃত সম্মানিত ব্যক্তি জনগন। যাদের কে সম্মানিত বলা হচ্ছে বাস্তবিক অর্থে এরা জনগনের চাকর ছাড়া আর কিছুই না। জনগন টেক্সদিয়ে এদের বেতনভুক্ত হিসাবে রেখেছে। দূর্নীতি, এবং খারাপ শাসন ব্যবস্থার করনে এই সত্যিটি উপলব্ধি করতে পারি না।
মাননীয় কাকে বলবেন? রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রে “মহামান্য” বলতে হবে। সংবিধানে অন্য যে-সকল পদের উল্লেখ আছে তাঁদের ক্ষেত্রে “মাননীয়” বলতে হবে। আর কারোর ক্ষেত্রে মাননীয় বলা ঠিক না। তবে মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রীর সমতুল্য পদের ক্ষেত্রে “মাননীয়” বলা যেতে পারে, আমার ধারণা। এ সংক্রান্ত কোনো দলিল আমরা এখনো খুঁজে পাইনি।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কাকে মাননীয় বলতে হবে? তিন বিভাগের প্রধানকে মাননীয় বলে সম্বোধন করা রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার। মহামান্য রাষ্ট্রপতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্পিকার, মাননীয় প্রধান বিচারপতি। মন্ত্রী এবং সাংবিধানিক পদসমুহকে এড্রেস করার সময় মাননীয় বলাটা রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার। সব কিছু আইনের মাধ্যমে হয় না। কিছু রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার থাকে। রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় অন্য উচ্চপদস্থদের সম্মানিত বা মহোদয় বলা রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার।
প্রচলিত প্রথা রাষ্ট্রপতিকে মহামান্য, স্পীকার থেকে সচিব পর্যন্ত পদধারী গণকে মাননীয় সম্বোধন করা যেতে পারে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এই শব্দগুলো ব্যবহার করা যাবে না। সম্মান প্রদর্শনের জন্য সচিব বা অন্য পদমর্যাদার কাউকে মহোদয় ডাকতে পারেন।
Caption: govt. Order
মাননীয় হলো একটি সম্মানসূচক শৈলী যা কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম বা উপাধির আগে একটি উপসর্গ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
- এ সম্মানসূচক শৈলীটি সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বা কূটনৈতিক কর্মকর্তার নামের পূর্বে ব্যবহৃত হয়।
- বাংলাদেশে সাধারণত সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং মেয়রগণ মাননীয় শৈলীর অধিকারী।
- অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতিকে মাননীয় বা মহামান্য হিসেবে ভূষিত করা হয়।
জনগণ কি সম্ভোধন করবে?
মহামান্য শব্দটি শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি জন্য ব্যবহার করা যাবে। মাননীয় শব্দটি স্পীকার, ডেপুটি স্পীকার, প্রধানমন্ত্রী, সকল মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য এর জন্য ব্যবহার করা যাবে। আর কোন পদমর্যাদার ব্যাক্তিবর্গকে মাননীয় সম্মোধন করা যাবে না। তবে সাধারণ জনগণ যেকোনো জনপ্রতিনিধিকে অথবা কর্মকর্তা কে স্যার হিসেবে ডাকতেও পারে।
উদাহরণ:ভাই বলে সম্বোধনে আমলাদের আপত্তি, বিরক্তি, অস্বস্তি, উষ্মা প্রকাশ নতুন কিছু নয়। সম্ভবত ২০২০ সালের অক্টোবরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঠিক একইভাবে সাবধান করে দিয়েছিলেন এক ব্যক্তিকে। | সে সময় এ ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছিল। ওই ব্যক্তি ইউএনওর আপত্তির মুখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলেছিলেন, ‘আমি তো ডিসি সাহেবকেও ভাই বলি।’ এতে আরও তেতে উঠে ইউএনও বলেন, ‘ডিসি সাহেবকে ডাকছেন ডাকেন। কিন্তু আমাকে ভাই ডাকা যাবে না। | ’ দিরাইয়ের এ ঘটনা সম্পর্কে তখন একটি অনলাইন পোর্টালে খবরের নিচে আহমদ আনিসুর রহমান নামের এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছিলেন, তিনি সরকারি চাকরির পদ কীভাবে পেলেন? বিষয়টি নিয়ে সে সময় বেশ শোরগোল হয়েছিল। ব্যতিক্রম ছিলেন আবদুল আহাদ। |
তিনি তখন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক। ঘটনাটি অবহিত করে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, | ‘আমি তো সাংবাদিকদের সহকর্মীই মনে করি। আমরা তো কাউকে বলতে পারি না, | আমাকে স্যার ডাকেন। এটা নিয়মের মধ্যেও পড়ে না।’ |