আজ শনিবার ৫ জুন ২০২১  সকাল ১১ ঘটিকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন। মানববন্ধনে নিজেদের দাবিগুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে আর্তনাতে ফেটে পড়েন সরকারি কর্মচারীরগণ।

মানববন্ধনে অনলাইন মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে তাদের কষ্ট ও দুদর্শার কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, ২০১৪ সালে নতুন যারা যোগদান করেছেন তাদের বেতন দ্বিগুন হয়েছে। ৪১০০ টাকা স্কেল কে ৮২৫০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে কিন্তু পুরাতন কর্মচারীদের বেতন ভাতা ২-৩ হাজার টাকার বেশি বৃদ্ধি পায়নি। প্রতিবছর যে ৫% বেতন বৃদ্ধি করা হয় তা বাজারের মূল্যস্ফিতির সাথে সমন্বয় করে তারা সংসার চালাতে পারছেনা। মাসে বাজার, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ ও অন্যান্য ব্যয় মিলে বেতনের টাকায় তারা মাস পাড়ি দিতে পারছেন না। সাধারণ কর্মচারীগণ ধারদেনা করে সংসার পরিচালনা করছেন।

উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেতনের সাথে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতনের ১:১০ অনুপাত বজায় থাকায় বিশাল বৈষম্য তৈরি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ১৯৭৩ সালে ১০ গ্রেডের পে স্কেল বাস্তাবায়িত হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। কর্মকর্তারা যে বাজার থেকে বাজার সদাই করেন কর্মচারীরাও সেই বাজার থেকেই বাজার সদাই করেন। তারা যে স্কুল কলেজে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া করান কর্মচারীরাও সেই স্কুল কলেজেই ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা করান। আন্তজার্তিক বেতন কাঠামো মান বজায় না থাকায় কোন ভাবে ১৪-২০ বাজার টাকা বেতন দিয়ে বাড়ি ভাড়া, বাজার সদাই, ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা, পরিবারের অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। গণমানুষের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারই পারেন এ বৈষম্য ও সংকট থেকে কর্মচারীদের বাচাতে।

কর্মচারীদের জীবন মান রক্ষায় নিচের দাবীগুলো তারা পেশ করেছেন

১) জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন পূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সনের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে। পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রথা পূনঃবহাল করতে হবে।

২) এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের সরকারী কর্মচারীদের পদ ও বেতন বৈষম্য দুর করতে হবে। ব্লক পোষ্টধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

৩) আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে হস্থান্তর করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টার রোল ও অন্যান্য দপ্তররে কর্মরত মাস্টার রোল, কন্টিজেন্স ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।

৪) সরকারি কর্মচারিদের পূর্বের ন্যায় ৩টি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পূনঃবহাল করতে হবে। জীবন যাত্রার মান সমুন্নত রাখার স্বার্থে ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০% থেকে ১০০% ও গ্রাইচ্যুইটির হার ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকায় উন্নীত করণ করতে হবে।

৫) ৯ম পে-স্কেল প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে ৫০% মহার্ঘ ভাতা অবিলম্বে দিতে হবে।

৬) প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত কর্মচারীদের ন্যায় ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারিদের বিনা সুদে ৩০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের যোগদানের দিন থেকে সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য করা রীট মামলার মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত আদেশ অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

৭) চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষকদের ন্যায় অন্যান্য সকল দপ্তরে পোষ্য কোটা চালু করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারর র্কমচারী সমন্বক আমজাদ আলী খান, কো-সমন্বয়ক বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আনোয়ারুল ইসলাম তোতাসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সূত্র: বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন

admin

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

admin has 2989 posts and counting. See all posts by admin

One thought on “নতুন পে স্কেল ঘোষনা ও ৭ দফা দাবীতে মানববন্ধন সরকারী কর্মচারীদের!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *