সরকারি রাজস্ব খাতে চাকুরি করলে যে সকল সুবিধা বা অবসর উত্তর সুযোগ মানে আনুতোষিক ও পেনশন পাবেন। তা ষ্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করলে মাসিক পেনশন পাবেন না এবং গ্রাচুইটিও কম পাবেন। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পেনশন নীতিমালার আলোকে বর্ণনা করা হলো-Pension for Autonomous Bodies
গ্র্যাচুইটি হিসাব কিভাবে করে? একজন চাকুরিজীবি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করলে সাধারণত মাসিক পেনশন পাবেন না।স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে (যেখানে পেনশন চালু নাই) চাকুরি করলে আনুতোষিকের সুবিধা পাবেন। ধরি, কারও মূল বেতন ৪৪০১০ টাকা; চাকুরির বয়স ২৮ বছর বা ২৮ বছর ৭ মাস তার আনুতোষিক হবে ( ৪৪০১০ * ২৮ * ২) মোট ২৪,৬৪,৫৬০ টাকা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্যান্য স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে মাসিক পেনশন সুবিধা নেই।
প্রতিষ্ঠানের মুনাফার অংশ পেয়ে থাকেন চাকুরিকালীন। এ সকল প্রতিষ্ঠানে সাধারণত চেয়ারম্যান বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্যান্য আরও কিছু সুবিধা প্রদান করে থাকেন। ২৭ বছর ৫ মাস ১৭ দিনের চাকরি কে প্রমার্জন করে ২৮ বছর ধরা হয়। নিচে স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের একটি তুলনামুলক আলোচনা করা হলো– ২০০৭ সালের পূর্বে এবং পরে যারা ব্যাংকে যোগদান করেছেন এবং বর্তমানে যারা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তাদের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন আর্থিক ব্যবধান।
সরকারি ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মূল পার্থক্য বা বৈষম্য কি?– জিপিএফ এবং সিপিএফ বৈষম্য। জিপিএফ হলো- জেনারেল প্রোভিডেন্ট ফান্ড ( পেনশন সুবিধার আওতাধীন কর্মকর্তা) এবং সিপিএফ হলো-কন্ট্রিবিউটরি প্রোভিডেন্ট ফান্ড (গ্রাচুইটির আওতাধীন কর্মকর্তা) । এছাড়াও এককালীন পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ পার্থক্য রয়েছে-স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণ অধিক গ্র্যাচুইটি বা এককালীন টাকা পেয়ে থাকেন।
এই দুই নিয়মের মাঝে আর্থিক ব্যবধান মোটামুটিভাবে নিচে উল্লেখ করা হলো-
১। একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী মূল বেতনের ১০-৩০ শতাংশ ভবিষ্য তহবিলে জমা করতে পারেন, এখানে ব্যাংক কোন অনুদান প্রদান করে না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চাকুরী শেষে তাকে সমুদয় অর্থ মুনাফাসহ প্রদান করে থাকে। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা ভবিষ্য তহবিলে তার মূল বেতনের ১০% জমা রাখতে পারেন; এক্ষেত্রে ব্যাংকও ৮-১০% অর্থ অনুদান হিসেবে প্রদান করে (এবং এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ইন্টারেস্ট মাঝে মাঝেই কমানো হয়!)।
২। ২৫ বছর নিয়মিত চাকুরী শেষে একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী কর্মকর্তা আনুতোষিক বাবদ ৮০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রাপ্ত হন। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা সার্ভিস লাইফের দিগুন (২৫ বছর চাকুরী হলে ৫০, ৩০ বছর চাকুরী হলে ৬০) মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ আনুতোষিক বাবদ প্রাপ্ত হবেন। যা একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী কর্মকর্তা তুলনায় অনেক কম। অর্থাৎ একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা ২০-৩০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কম প্রাপ্ত হবেন।
৩। একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী তার প্রাপ্ত মাসিক পেনশন যা এককালীন জমা করলে ৪০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রাপ্ত হন। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে পেনশনের কোন সুবিধাই রাখা হয়নি। ফলে একজন সিপিএফ ভোগী ৪০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কম প্রাপ্ত হবেন।
৪। একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগীর ক্ষেত্রে সুপার এনুয়্যেশন তহবিলে ৩০% সঞ্চিতি রাখা হয়। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে গ্রাচুইটি তহবিলে ১৫% সঞ্চিতি রাখা হয়। এক্ষেত্রে ১০% অনুদান সহ হিসেব করলে মোট ৫% সঞ্চিতি কম রাখা হয়।
সার্বিক বিবেচনায় দেখা যায় যে, একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগীর তুলনায় ২৫-৩০ বছর চাকুরী শেষে দেড়গুণ কম আর্থিক সুবিধা প্রাপ্ত হন যা প্রত্যক্ষ বৈষম্য। মাথা নষ্ট করবেন না, তবে কিছু প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব অর্থায়নে পেনশন চালু রয়েছে।
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পেনশন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পেনশন নীতিমালা – পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা এর বিস্তারিত বিস্তারিত স্বায়ত্বশাসিত বা রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠানের পে স্কেল এ: ডাউনলোড