প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল ও প্রশাসনিক আপিল ট্রাইবুনাল কি?
যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত-চার বিভাগীয় শহরে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল নেই। (সরকারি চাকরির শর্তাবলী ক্ষুণ্ণ হলেও হাইকোর্টে রিট বন্ধ * চাপ বেড়েছে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে, দুর্ভোগে বিচার প্রার্থীরা)
আপিল বিভাগের একটি রায়ের কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা এখন থেকে চাকরি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হাইকোর্টে সরাসরি রিট মামলা করতে পারছেন না। প্রতিকার পেতে হলে আগে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে হচ্ছে। ফলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলোতে মামলার চাপ বেড়েছে। এ অবস্থায় বিচার প্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে আরও ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য কিছু গণপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ, শর্তাবলী, পদোন্নতি, সরকারি বাসা, বেতন-ভাতা ও পেনশন সম্পর্কিত বিষয়গুলো প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বিচারযোগ্য। এসব বিষয় বিচারের জন্য সারা দেশে মোট ৭টি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় তিনটি এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও বগুড়ায় একটি করে ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। বাকি চারটি (রাজশাহী, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ) বিভাগীয় শহরে কোনো প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল নেই। একদিকে মামলার চাপ বৃদ্ধি, অন্যদিকে এসব বিভাগীয় শহরে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল না থাকায় বিচার প্রার্থীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা নির্ভর করে মামলার ওপর। মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে অবশ্যই বিচার প্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়াতে হবে।’
- GPF Calculation by AG Office 2025 । এজি অফিস যে সূত্রগুলো ব্যবহার করে জিপিএফ মুনাফা নির্ণয় করে?
- Bank Officer Loan Ceiling 2025 । ব্যাংক কর্মকর্তাদের গৃহ নির্মাণ ঋণ সিলিং ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা?
- Interest Free Govt. Loan 2025 । বিনা সুদে ৩০ লক্ষ টাকা ঋণ সুবিধা চান সরকারি কর্মচারীরা?
- অপর্যটক যাত্রী ব্যাগেজ বিধিমালা ২০২৫ । একজন প্রবাসী শুল্ক ছাড়া বছরে সর্বোচ্চ ২টি মোবাইল আনতে পারবে?
- Desertion Pension For Govt. Staff 2025 । নিখোঁজ কর্মচারীর পেনশন কখন করা হয়?
সূত্র জানায়, সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হলে হাইকোর্টে রিট করতে পারেন। কিন্তু প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল থাকা সত্ত্বেও তারা সেখানে না গিয়ে হাইকোর্টে সরাসরি রিট করে থাকেন। বর্তমানে এ ধরনের রিট মামলার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য গত এপ্রিলে এ সংক্রান্ত একটি মামলা নিষ্পত্তি করে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। রায়ে সরকারি চাকরিজীবীদের চাকরির শর্তাবলী ক্ষুণ্ণ হলেও সরাসরি হাইকোর্টে রিট দায়েরের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলোকে অন্তর্বর্তীকালীন যে কোনো স্থগিতাদেশ বা নিষেধাজ্ঞা জারির এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। এ রায়ের কারণে এ ধরনের প্রায় ১০ হাজার রিট মামলা হাইকোর্টে আর চলবে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। এসব মামলা চলে যাচ্ছে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলোতে।
এ রায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল যুগান্তরকে বলেন, আপিল বিভাগের ওই রায়ের কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা তাদের মৌলিক অধিকার বা কোনো চাকরির শর্ত যদি ক্ষুণ্ণ হয়ে থাকে অথবা পেনশন, ভাতা বিষয়ক কোনো অধিকার খর্ব হলে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করতে পারবে না। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। রায়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালকে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ প্রদানের ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে। তবে আইনের কোনো ধারা বা বিষয়বস্তু যদি চ্যালেঞ্জ করা হয়, শুধু তখনই রিট পিটিশন গৃহীত হবে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, আপিল বিভাগের ওই রায়ের কারণে রিট মামলায় প্রতিকার চাওয়া অনেক বিচারপ্রার্থীকে এখন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। এ কারণে আপিল বিভাগ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধির কথাও বলে দিয়েছেন রায়ে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে ঢাকার তিনটি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে প্রায় দেড় হাজার মামলা বিচারাধীন। বাকি চারটি ট্রাইব্যুনালে মামলার সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। এর সঙ্গে প্রতিদিন নতুন মামলা যোগ হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, বিভাগীয় শহর রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুরে কোনো ট্রাইব্যুনাল না থাকায় এসব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্য বিভাগে গিয়ে মামলা করতে হচ্ছে। বিষয়টি লক্ষ্য করে ২৭ এপ্রিল সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন চারটি বিভাগীয় শহরে চারটি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। কিন্তু এখনও এসব ট্রাইব্যুনাল গঠনে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যুগান্তরকে বলেন, ‘আপাতত ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানোর কোনো চিন্তা আমাদের নেই।’
প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারী তার মৌলিক অধিকারের বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৮০ অনুযায়ী প্রথমে তাকে নিজের বিভাগ বা রাষ্ট্রপতির কাছে রিভিউ আবেদন করতে হয়। এরপর যেতে হয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে। এরপর প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে। আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়েও সন্তুষ্ট না হলে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে প্রতিকার চাইতে হবে। সংবিধানের ১১৭ অনুচ্ছেদে এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলা আছে। সংসদ আইনের দ্বারা একাধিক প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করতে পারবে বলে উল্লেখ রয়েছে। তাই বিচারপ্রা র্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার ইচ্ছা করলেই এ ধরনের ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখিত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্যে যে কোনো সময় ফোন করতে পারেন। আমি আছি সর্বক্ষণ অসহায়দের পাশে। সম্পূর্ণ ফ্রিতে সুপরামর্শ দেয়া হবে।
এ পোস্টটির সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শদাতা -ব্যারিস্টার হাফিজ, গুলশান, ঢাকা।
Md.Izabul Alam, Online Principal, Gulshan- Dhaka, Bangladesh.
01716508708, izabulalam@gmail.com
ডিসক্লেমার: জনস্বার্থে পোস্টটি শেয়ার করা হলো। কোন অভিযোগ থাকলে ইমেইল করুন: alaminmia.tangail@gmail.com এ। কৃজ্ঞতা প্রকাশ করা হলো।