সাধারণত অনেকেই বলবেন পারিবারিক উত্তরাধিকার আইন অনুসারে নমিনি যাকেই রাখা হোক না কেন পরিবারের সদস্যগণ উত্তরাধিকার আইন অনুসারে পারেন। কিছু ব্যাংকও এভাবেই অঙ্গিকার নামা নিয়ে আসছিলেন গ্রাহককে নিকট থেকে নিচে উক্ত ধারাবাহিকতা বাতিলে পত্র জারি করা হয়। আসুন নিচে একটি সমস্যা দেখে নিই।
সমস্যা: এক ব্যক্তির ২ জন স্ত্রী। ব্যাংকে রক্ষিত টাকার ডিপিএস ও সঞ্চয়ী হিসাবে নমিনী হিসাবে ২য় স্ত্রীর নাম লিপিবদ্ধ করেন। ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পরে ব্যংকের হিসাবের টাকা কে পাবে?
উত্তর: সাধারণত ভাবেই উত্তর দিতে পারেন যে, ২ জনই পাবেন। তার ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগ করে দিবেন। আসলে ব্যাংক আইন তা বলে না। ব্যাংক নমিনি যাকে অর্থাৎ দ্বিতীয় স্ত্রীকে বুঝিয়ে দিবে। তারপর ২য় স্ত্রী প্রথম স্ত্রীকে দিবে কি দিবে না সেটি আইন ঠিক করবে। কিন্তু ব্যাংক শুধুমাত্র নমিনিকেই বুঝিয়ে দিবে। অনেকে বলতে পারেন পত্রিকা বা হাই কোর্টের রুল ইত্যাদি রয়েছে, পরিবার বা দুজনেই পাবেন। ব্যাংক তার নিজ কোম্পানি আইন দ্বারা চলে তাই ব্যাংক নমিনিকেই বুঝিয়ে দিবে।
ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ
বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
বিআরপিডি সার্কুলার নং -০৬; তারিখ: ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ খ্রি:
ব্যবস্থাপক/ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক
প্রিয় মহোদয়,
আমানতকারী/ আমানতকারীগণের মৃত্যুর পর তাদের মনোনীত নমিনী/ নমিনীগণকে অর্থ পরিশোধ প্রসঙ্গে।
সম্প্রতি এ মর্মে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে যে, কিছু কিছু তফসিলি ব্যাংক আমানতকারীদের মনোনীত নমিনী/ নমিনীগণের নিকট হতে এ মর্মে অঙ্গীকারনামা গ্রহণ করছে যে, আমানতকারী/ আমানতকারীগণের মৃত্যুর পর তাদের মনোনীত নমিনী/ নমিনীগণ মৃত ব্যক্তির হিসাবে রক্ষিত আমানত প্রাপ্তির জন্য যোগ্য/ উপযুক্ত প্রাপক হিসেবে বিবেচিত নাও হতে পারেন, যা ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১, (২০১৩ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ১০৩ ধারায় বর্ণিত নির্দেশনার পরিপন্থী।
০২। বর্ণিত প্রেক্ষিতে, আমানতকারী/ আমানতকারীগণের মৃত্যুর পর তাদের ব্যাংক একাউন্টে রক্ষিত আমানতের অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০১৩ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ধারা-১০৩ অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
আপনাদের বিশ্বস্ত,
(আবু ফরাহ মো: নাছের)
মহাব্যবস্থাপক
ফোন: ৯৫৩০২৫২
আমানতকারী/ আমানতকারীগণের মৃত্যুর পর তাদের মনোনীত নমিনী/ নমিনীগণকে অর্থ পরিশোধ প্রসঙ্গে পত্র: ডাউনলোড
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১, (২০১৩ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ১০৩ ধারায় কি আছে তা দেখে নিই: ডাউনলোড
সর্বশেষ কথা হলো,
মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে থাকা টাকা নমিনি নয়, উত্তরাধিকারীরা পাবেন বলেন রায় দিয়েছেন, হাইকোর্ট। বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ সংক্রান্ত এক মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন। মামলার বিবরণীতে দেখা যায়, ২০১৪ সালের মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি ডিরেক্টর শহিদুল হক চৌধুরী তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নমিনি করে ৩০ লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র রাখে।পরে শহিদুল হক মারা গেলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী পুরো টাকা একাই ভোগ করতে চাইলে মৃত শহীদুলের প্রথম পক্ষের সন্তানরা টাকা দাবি করে মামলা করে। তবে নিম্ন আদালত রায় দেন, নমিনি যে সেই টাকা পাবে। এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে, রোববার মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে থাকা টাকা নমিনি নয়, উত্তরাধিকারীরা পাবেন বলেন রায় দিলেন আদালত। ৪/১২/২০১৮
তবে চূড়ান্ত রায় আসা না পর্যন্ত নমিনিই ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ হাতে পাবেন। সূত্র: ডাউনলোড
আসুন এবারে জেনে নিই ব্যাংক গ্রাহকের মৃত্যুতে উত্তরাধিকারী ও নমিনী কর্তৃক টাকা উত্তোলনের নিয়ম ও কি কি কাগজপত্র লাগে।
ব্যাংক আইনে নমিনি পাবে এটাই বাস্তব, তবে হাইকোর্ট বিভাগ বা উত্তরাধীকার আইনে কি আছে?
https://www.banglanews24.com/law-court/news/bd/449966.details