ভূমি মন্ত্রণালয় জনসাধারণের ভোগান্তি নিরসনে বিভিন্ন অনলাইন পদ্ধতির প্রবর্তন করছেন ফলে জনগণ ঘরে বসেও ভূমি সেবা পাচ্ছেন। ভূমি সেবার আরও সহজীকরণের ই-নামজারির বিষয়ে কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ই-নামজারি সিস্টেমে ক্রয়সূত্রে নামজারি ফরম সম্প্রতি চালু করা হয়েছে। ইনামজারির নতুন ফরম চালু করার ফলে ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেমে (ই-নামজারি/ ই-খতিয়ান/ ডিজিটাল এলডি ট্যাক্স) কিংবা ভূমি অফিসে সংরক্ষিত নেই – এমন কোনাে তথ্যের ঘাটতি থাকলেই নামজারি আবেদন নামঞ্জুর করা যাবে না। নামজারি মামলার ১ম আদেশে কোন দলিলপত্রের ঘাটতি থাকলে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে দাখিলের জন্য অনুরােধ জানাতে হবে। সাধারণভাবে ৭ (সাত) কার্য দিবস কিংবা আবেদন বিবেচনা করে যুক্তিসংগত সময় দেয়া যাবে। উক্ত সময়ের মধ্যে নামজারি আবেদনকারী তথ্য বা কাগজপত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হলে ২য় আদেশে না-মঞ্জুর করা যাবে। পরবর্তী কালে না-মঞ্জুরকৃত আবেদনে চাহিত তথ্য/দলিলপত্রের প্রাপ্তি সাপেক্ষে পুনরায় নামজারি কার্যক্রম চালু (Review) করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদন পুনরায় কার্যকর হওয়ার তারিখ হতে নামজারি সেবা প্রাপ্তির সময় গণনা শুরু হবে।

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

ভূমি মন্ত্রণালয়

ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেল

বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা-১০০০।

www.minland.gov.bd

নম্বর: ৩১.০০.০০০০.০৫৭.৩১.০০১.২২.৬ তারিখ: ১৭ জুলাই ২০২২

পরিপত্র

বিষয: ই-নামজারি সিস্টেমে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করার বিষয়ে নির্দেশনা।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ই-নামজারি সিস্টেমে ক্রয়সূত্রে নামজারি ফরম সম্প্রতি চালু করা হয়েছে। ইনামজারির নতুন ফরম চালু করার ফলে ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেমে (ই-নামজারি/ ই-খতিয়ান/ ডিজিটাল এলডি ট্যাক্স) কিংবা ভূমি অফিসে সংরক্ষিত নেই – এমন কোনাে তথ্যের ঘাটতি থাকলেই নামজারি আবেদন নামঞ্জুর করা যাবে না। নামজারি মামলার ১ম আদেশে কোন দলিলপত্রের ঘাটতি থাকলে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে দাখিলের জন্য অনুরােধ জানাতে হবে। সাধারণভাবে ৭ (সাত) কার্য দিবস কিংবা আবেদন বিবেচনা করে যুক্তিসংগত সময় দেয়া যাবে। উক্ত সময়ের মধ্যে নামজারি আবেদনকারী তথ্য বা কাগজপত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হলে ২য় আদেশে না-মঞ্জুর করা যাবে। পরবর্তী কালে না-মঞ্জুরকৃত আবেদনে চাহিত তথ্য/দলিলপত্রের প্রাপ্তি সাপেক্ষে পুনরায় নামজারি কার্যক্রম চালু (Review) করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদন পুনরায় কার্যকর হওয়ার তারিখ হতে নামজারি সেবা প্রাপ্তির সময় গণনা শুরু হবে।

২। বিগত সময়ের বেশ কিছু না-মঞ্জুর আদেশ পর্যালােচনা করে দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রে তুচ্ছ কারণে নামজারি আবেদন বাতিল করা হয়েছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে না-মঞ্জুরের আদেশ যথাযথভাবে প্রদান করা হয় নি। তাই এখন থেকে নামজারি আবেদন বাতিলের ক্ষেত্রে কোনাে না কোনাে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করতে হবে। নামজারির আবেদন নামঞ্জুরের ক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ মন্ত্রণালয়ের ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখের স্মারক নং ৩১.০০.০০০০.০৫৬.৯৯.০১৭.২০-১৩-এর ধারাবাহিকতায় ইনামজারি সিস্টেমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন:

ক) নামজারি আবেদনের হার্ড কপি জমা না দেওয়ার কারণে নামজারি আবেদন নামঞ্জুর করা যাবে না। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাগরিকের নামজারি আবেদন-সংশ্লিষ্ট সকল দলিলপত্রাদি ও প্রমানকসহ প্রথম থেকে শেষ ধাপ পর্যন্ত সকল সিদ্ধান্ত সিস্টেম হতে প্রিন্ট করে হার্ড নথি হিসেবে সংরক্ষণ করবেন।

খ) অনেক ক্ষেত্রে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা/সার্ভেয়ার/কানুনগাে/ভূমি অফিসের অন্য কোন কর্মচারীর মতামত/প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নামজারি আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। কিন্তু আবেদনে কী ধরণের ত্রুটি রয়েছে, তা আদেশে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় না। এতে নাগরিকের পক্ষে এরূপ আদেশের কারণ জানা অসম্ভব হয়ে পড়ে, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে অন্তরায়। প্রকৃতপক্ষে প্রতিবেদনে যে নীতিমালা বা তথ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে নামজারির আবেদন বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে, তা উল্লেখসহ আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযােগ্য তথ্যের ঘাটতি/গরমিলের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে না-মঞ্জুর আদেশে উল্লেখ করতে হবে।

গ) দলিলের নামের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের নামের পার্থক্য থাকলেই নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবে না। দলিলে বর্ণিত দাতা/গ্রহীতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং নামজারি আবেদনে বর্ণিত জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর একই থাকলে দলিলের নামের পার্থক্য থাকলেও নামজারি বাতিল করা যাবে না। এছাড়াও নামের ভিন্নতা থাকলে প্রস্তাবিত মালিকানার নামের সমর্থনে গ্রহণযােগ্য প্রমানক (যেমন: পাসপাের্টের কপি/জন্মনিবন্ধন সনদপত্র/বিভিন্ন ইউটিলিটি বিলের সত্যায়িত অনুলিপি/অন্য কোন যথাযথ প্রমানক ইত্যাদি) দাখিল করার জন্য অনুরােধ করা যেতে পারে।

ঘ) ই-নামজারি আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট দলিলপত্রাদি যাচাই অন্তে সঠিক প্রতীয়মান হলে পক্ষগণের শুনানীর প্রয়ােজনীয়তা নেই।

নামজারি-সংক্রান্ত কোন তথ্যের প্রয়ােজনে কিংবা প্রস্তাবপত্র/প্রতিবেদন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিতি কিংবা তার সাথে কোন যােগাযােগের প্রয়ােজনীয়তা নেই। তবে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি আবেদনকারীর উপস্থিতির আবশ্যকতা দেখা দিলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবেদনকারীর উপস্থিতির প্রয়ােজনীয়তা উল্লেখ করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর প্রতিবেদন দিবেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রযােজ্য ক্ষেত্রে শুনানি নিবেন। ই-নামজারি আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিল কোন বিষয় না থাকলে অনলাইনে শুনানি গ্রহণ করা যেতে পারে।

ঙ) আবেদনকারীর মােবাইল ফোন নম্বর সঠিক প্রদান না করা কিংবা আবেদনে বিবাদীর মােবাইল ফোন নম্বর না থাকার কারণে নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবে না। তবে আবেদন গ্রহণের সময় অথবা প্রথম আদেশের সময় বাদী ও বিবাদীর মােবাইল ফোন। নম্বরের সঠিকতা যাচাই করতে হবে যাতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শুনানির প্রয়ােজনে এসএমএস করতে পারেন।

চ) অনেক ক্ষেত্রে আবেদিত জমির বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকার অযুহাতে নামজারি আবেদন বাতিল করা হচ্ছে। অথচ বাস্তবে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আদালত উক্ত জমি বিক্রি হস্তান্তর/নামজারিতে কোন নিষেধাজ্ঞা দেন নি। প্রকৃতপক্ষে কোন জমি ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর, নামজারি বা মালিকানার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতের কোন সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা বা নির্দেশনা না থাকলে নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবে না।

ছ) চলমান ভূমি জরিপের আপত্তি, আপিল বা বিশেষ আপিল এরূপ যে কোন স্তরে রেকর্ডের বিরুদ্ধে আবেদন/কার্যধারা/মামলা চলমান থাকার কারণ দেখিয়ে নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবে না বা নিরুৎসাহিত করা যাবে না। উক্তরূপ জমি ক্রয়/বিক্রয়/হস্তান্তরে অন্তরায় সৃষ্টি করা যাবে না কিংবা বিদ্যমান জমা-খারিজের আওতায় ভূমি উন্নয়ন কর আদায় বন্ধ করা যাবে না।

জ) আবেদনে প্রদত্ত দাখিলাতে কোন শ্রেণির জমিতে ভূমি উন্নয়ন কর কম পরিশােধ করার কারণে নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবে না। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে কম পরিশােধিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশােধ করার সুযােগ দিয়ে আদেশ প্রদান করতে হবে।

ঝ) আবেদনকৃত জমির শ্রেণীর বিষয়ে সর্বশেষ রেকর্ড ও দলিলে ভিন্ন-ভিন্নভাবে উল্লেখ থাকলেই নামজারি আবেদন বাতিল করা যাবে না। এক্ষেত্রে ভূমি অফিসে রক্ষিত রেকর্ডপত্র ও বাস্তবতা বিবেচনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) নামজারি খতিয়ানে জমির শ্রেণী নির্ধারণ করবেন। তবে দলিল সম্পাদনে রাজস্ব ফাকি পরিলক্ষিত হলে নামজারি আবেদন মঞ্জুরের পাশাপাশি বিষয়টি উল্লেখ করে প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করতে হবে।

ঞ) আবেদনের সঙ্গে যদি কোনাে তথ্য ঘাটতি/গরমিল অথবা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনে কোন কারণে না-মঞ্জুরের সুপারিশ থাকে, তাহলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবেদন নামঞ্জুরের পূর্বে শুনানির আদেশে উক্ত বিষয়ে বাদীকে প্রয়ােজনীয় ব্যাখ্যা বা ঘাটতি তথ্য প্রদানের সুযােগদানসহ প্রয়ােজনীয় পরামর্শ নির্দেশনা প্রদান করবেন। শুনানীর ক্ষেত্রে প্রকৃত অংশীদারকে নােটিশ প্রদান করতে হবে। নামজারি আবেদনের সাথে প্রযােজ্য ক্ষেত্রে হালনাগাদ ওয়ারিশান সনদ আপলােড করতে হবে।

ট) সর্বশেষ নামজারির ভিত্তিতে নামজারি করা হলে পূর্ববর্তী দলিল/দলিলসমূহের অনুলিপি দাখিলের প্রয়ােজনীয়তা নেই। তবে সর্বশেষ রেকর্ডের পর প্রথম নামজারির ক্ষেত্রে সর্বশেষ রেকর্ড হতে জমির মালিকানা হস্তান্তর দলিলের কপি ধারাবাহিকভাবে ইনামজারি সিস্টেমে আপলােড করতে হবে।

ঠ) নামজারি খতিয়ানের মন্তব্য কলামে দলিল নম্বর ও তারিখ, অনুমােদনের তারিখে জমির ব্যবহারের ধরণ, আগত রেকর্ডীয় নামজারি খতিয়ান নম্বর এবং হােল্ডিং নম্বর আবশ্যিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।

৩। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলাে এবং অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে।

১৮-৭-২০২২

মােঃ মােস্তাফিজুর রহমান, পিএএ

সচিব

ই-নামজারি সিস্টেমে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করার বিষয়ে নির্দেশনা ২০২২: ডাউনলোড

admin

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

admin has 2983 posts and counting. See all posts by admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *