জন্ম নিবন্ধন মূলত সন্তান জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করে ফেলা উত্তম। অনেকেই বয়স কমানোর ধান্দায় থাকেন এটি করা কোন ভাবেই ঠিক নয়, জন্মটাই যদি ভুল বা অসত্য দিয়ে শুরু হয়, তবে জন্মই যেন মিথ্যা দিয়ে শুরু হল। চাকরি বা রিজিক আল্লাহ তা’য়ার হাতে কথাটি বিশ্বাস করলে কোন ভাবেই এটি ভাবা ঠিক হতে পারে না যে, জন্ম কয়েক বছর পরে দেখালে চাকরি পাওয়া সুযোগ বেড়ে যাবে-জন্ম নিবন্ধন ফি কত টাকা ২০২৫

যাহোক, আজ আমরা জানবো জন্ম নিবন্ধন ফি কত? হ্যাঁ জন্ম নিবন্ধন ফি এবং মৃত্যু নিবন্ধন ফি একই হারে প্রদান করতে হয়। কোন মৃত্যু সনদ এখন অনলাইনে পেতে জন্ম তার জন্ম সনদ থাক বা থাক, প্রথম জন্ম নিবন্ধন করিয়ে নিতে হবে তারপর মৃত্যু নিবন্ধন করাতে পারবেন।

তাই বয়স্ক বা শিশু যেই হোক না কেন তার জন্ম নিবন্ধন সম্পূর্ণ করুন। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৭ এর বিধি ২৩ এর উপ-বিধি (৭) এর ক্ষমতাবলে সরকার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফিস নিম্নোক্তভাবে পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরে আর ফি পুন:নির্ধারিত হয়নি।

1.  জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন বিনা ফিসে নিবন্ধন করা যাবে।
2. জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন পর হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন (সাকুল্যে) ২৫ টাকা দেশে নিবন্ধন করা যাবে।
3. জন্ম বা মৃত্যুর ৫ (পাঁচ) বৎসর পর কোন ব্যক্তি জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন (সাকুল্যে) ৫০ টাকা দেশে নিবন্ধন করা যাবে।
4. জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য আবেদন ফি ১০০  টাকা।
5. জন্ম তারিখ ব্যতিত নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফি ৫০ টাকা বাংলাদেশে জন্ম হলে।
6. বাংলা ও ইংরেজী উভয় ভাষায় মূল সনদ বা তথ্য সংশোধনের পর সনদের কপি সরবরাহ পাওয়া যাবে বিনা ফিসে।
7. বাংলা ও ইংরেজী উভয় ভাষায় নকল সরবরাহ পাওয়া যাবে ৫০ টাকা ফি জমা করে।

জন্ম নিবন্ধন ফি ২০২৫ । উপরোক্ত ফিগুলো রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন ছাড়া সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করা যায় না

রেফারেন্স সংগ্রহে রাখতে পারেন: ডাউনলোড

বি:দ্র: আমি আপনাদের পরামর্শ দেব জন্ম নিবন্ধন বা মৃত্যু নিবন্ধন ফরম অনলাইনেই পূরণ করা যায়। তাই ভুলত্রুটি এড়াতে আপনি অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম সেরে ফেলুন। অতপর ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভায় দাখিল করে অনুমোদন করিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিন। তাতে ভুল হওয়ার প্যারা থেকে বাঁচবেন।

বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ফি ১ জুলাই ২০১৩ সালের পর থেকে কার্যকর হয়েছে এবং ফিসের হার ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা এলাকার জন্য এবং সিটি কর্পোরেশন ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকার জন্য আলাদা নির্ধারিত আছে।

ফিসের হার:

• জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন যদি দুটি বছরের মধ্যেই করা হয়, তাহলে কোনও ফি নিতে হয় না দু’ অঞ্চলের জন্যই।

• দুই বছরের পর নিবন্ধন করলে প্রতি বছর জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় ৫ টাকা, সিটি কর্পোরেশন ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ১০ টাকা ফি দিতে হয়।

• জন্ম বা মৃত্যু সনদের মূল বাংলা বা ইংরেজী কপি সরবরাহের জন্য কোনো ফি নেই।

• বাংলা বা ইংরেজী দ্বি-নকল কপি সরবরাহের জন্য ২৫ টাকা ফি রয়েছে দুই ধরনের এলাকার জন্যই।

• নিবন্ধন সনদে ভুল থাকলে সংশোধনের জন্য ১০ টাকা ফি ধার্য করা হয়।

দূতাবাসে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ফি হিসেবে ৫ মার্কিন ডলার, তথ্য সংশোধনের জন্য ২০ মার্কিন ডলার এবং দ্বি-নকল সনদের জন্য ১০ মার্কিন ডলার ফি আদায় করা হয়।

সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক, কোনো রসিদ ছাড়া নির্ধারিত ফি আদায় করা যাবে না, তাই নিবন্ধন সংক্রান্ত কার্যক্রমে ফি প্রদান নিশ্চিত করার সময় অবশ্যই রসিদ গ্রহণ করতে হবে। এই ফি সংক্রান্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করে বাংলাদেশে নাগরিকদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল ২০০১ সালের পর জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ, ২০০১ সালের ১লা জানুয়ারি এবং তার পর থেকে যাদের জন্ম, তাদের জন্ম নিবন্ধনের জন্য পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকা আবশ্যক ছিল। ২০০১ সালের আগে জন্মগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক ছিল না, তবে তাদের জন্য পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন ছিল। তবে ২০২২ সালের জুলাই থেকে এই বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দেওয়া ছাড়াই সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন করা যাবে। এই পরিবর্তন অনেক জটিলতা দূর করেছে এবং পথশিশু, বিচ্ছিন্ন পরিবারে জন্ম নেওয়া বাচ্চাদের জন্ম নিবন্ধন সহজ করেছে।

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন পুন:নির্ধারিত ফিস।