প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত ও পরিমাণগত মান উন্নয়নে এ ধরনের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম-জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২২
প্রাথমিক শিক্ষা পদক নীতিমালা ২০১৩ –প্রাথমিক শিক্ষা সকল শিক্ষার ভিত্তি। প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে রয়েছেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের কাজের গুণগত মান নির্ণয় করা যেমন প্রয়োজন; তেমনি দক্ষতার মান বিচারে তাঁদেরকে যথোপযুক্ত স্বীকৃতি প্রদান করা অপরিহার্য। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমী ১৯৮৫ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করে আসছে।
এ শিক্ষা সপ্তাহের উলেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো উপজেলা/থানা পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যড্ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী, শিক্ষক, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান,কর্মচারী এবং কর্মকর্তাকে পদক ও সনদ প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের কাজের স্বীকৃতি ও উৎসাহ প্রদান করা। ১৯৯৩ সাল থেকে ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের সমাপনী দিবসে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী কর্তৃক পুরস্কার প্রদানের ফলে এর গুরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সংশিষ্ট শিশুশিল্পী, শিক্ষক, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরো উৎসাহ ও প্রেরণা সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতেও এ প্রতিযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাড়ায়নের প্রেক্ষাপটে এ কার্যক্রমটি আরো ব্যাপক আকারে এবং মানসম্মতভাবে বাড়ায়ন করা প্রয়োজন ।
প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২২ প্রদানের নির্মিত জাতীয় পর্যায়ের বাছাই প্রতিযোগিতা আগামী ০৩ ০৪ ০৫, ০৮ ও জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাল্টিপারপাস কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত বাছাই প্রতিযোগিতার ০৫ (পাঁচ) দিন ধরে চলবে।
বাংলাদেশ সরকার “সবার জন্য শিক্ষা”র গুণগত মানোন্নয়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ জন্য ১৯৯২ সাল থেকে নির্বাচিত এলাকায় এবং ১৯৯৩ সাল থেকে সারা দেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এর সফল বাড়ায়ন অত্যন্ড্র কঠিন ও সময়সাপেক্ষ কাজ। ২০১১ সাল থেকে সমগ্র দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার বিদ্যালয় গমনোপযোগী সকল শিশুর বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা হয়েছে । এখন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ। ১ম থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত্ যোগ্যতাভিত্তিক শিখনশেখানো কার্যাবলি পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা, ঝরে পড়ার হার কমিয়ে আনা প্রভৃতি যাবতীয় কর্মকান্ডের সফল বাড়ায়ন নির্ভর করে সংশিষ্ট সকলের আন্ড্ররিক প্রচেষ্টার উপর। কাজেই প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সংশিষ্টদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান ও অনুপ্রেরণা যোগানোর জন্য প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পুরস্কৃত করার লক্ষ্যে এ ধরনের কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
ইউনিয়ন থানা জেলা বিভাগ পর্যায়ে নির্বাচিতদের পুরস্কৃত করা হবে / ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার প্রদান করা হয়।
খ গ্রুপের ছাত্রছাত্রীদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের প্রতিযোগিতায় ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীকে এবং শ্রেষ্ঠ কাবশিশুকে নগদ অর্থ (১ম স্থান- ২০,০০০/, ২য় স্থান-১৫,০০০/-, ৩য় স্থান অধিকারী ১০,০০০/- এবং শ্রেষ্ঠ কাবশিশুকে ২০,০০০/-), পদক ও সনদ প্রদান করা হবে।
শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রেষ্ঠ কর্মচারী, শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার, শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সমাজ কর্মী, শ্রেষ্ঠ কাবশিক্ষক, শ্রেষ্ঠ পিটিআই, শ্রেষ্ঠ পিটিআই ইন্সট্রাক্টর, শ্রেষ্ঠ সহকারী ইউআরসি/টিআরসি ইন্সট্রাক্টর, শ্রেষ্ঠ ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর, শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার, শ্রেষ্ঠ উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার, শ্রেষ্ঠ পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট, শ্রেষ্ঠ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক এবং শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নগদ অর্থ (২৫,০০০/-), পদক ও সনদ প্রদান করা হবে।
(ক) শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রেষ্ঠ এসএমসি নগদ অর্থ (২৫,০০০/-), পদক (ক্রেস্ট) ও সনদ প্রদান করা হবে। (খ) ঝরে পড়ার হার উলেখযোগ্য ভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছে এ ধরনের বিদ্যালয়ের জন্য ২০,০০০/- টাকার বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হবে
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ১ম ১০(দশ) জন মেধাস্থান অধিকারী শিক্ষার্থীকে যথাক্রমে ২০,০০০/-(১ম), ১৫,০০০/-(২য়), ১২,০০০/-(৩য়) ও ১০,০০০/-(৪র্থ-১০ম) নগদ অর্থ, পদক ও সনদ প্রদান।
প্রাথমিক শিক্ষা পদক নীতিমালা ২০১৩ দেখে নিন
রেজিস্ট্রেশন কখন করতে হবে এবং কি কি ডকুমেন্ট লাগবে?
- জাতীয় পর্যায়ের বাছাই প্রতিযোগিতায় নির্ধারিত তারিখে শুরু হওয়ার ১ ঘন্টা পূর্বে প্রতিযোগিদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।
- সকল প্রতিযোগীকে অতি সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজের ২ (দুই) কপি স্ট্যাম্প সাইজের ৪ (চার) কপি রঙিন ছবি, নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার নিকট থেকে বিভাগীয় মামলা সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), গবেষণা, প্রকাশনা ও প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে অবদানের প্রামান্য দলিলপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এবং প্রাসঙ্গিক অন্যান্য কাগজপত্র সঙ্গে আনতে হবে।
- জাতীয় পর্যায়ের বাছাই প্রতিযোগিতায় উপর্যুক্ত তথ্যাদিসহ নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে তাঁর বিভাগের প্রতিযোগীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
কেন প্রতিযোগিতা প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা হয়?
বিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের নিকট আকর্ষণীয় এবং শিক্ষাক্রমের বিষয়বস্তু আনন্দদায়ক করার পাশাপাশি শিশুদের মেধা, মনন ও শরীর গঠনের জন্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং কাবিং এর উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষা সপ্তাহে এ সকল বিষয়ে প্রতিভাবান শিশুদের পদক প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে। এ প্রতিযোগিতা প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে আত্বনির্ভরশীল হতে সাহায্য করা এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার সফল বাস্তবায়ন এবং গুণগত মানোন্নয়ন।
উদ্দেশ্য- ক) শিশুর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা। খ) শিশু, শিক্ষক, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান,কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে নব উদ্দীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাড়ায়নের পথ সুগম করা। গ) শিশুদের সৃজনশীল কাজের স্বীকৃতিদানের লক্ষ্যে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে পুরস্কৃত করা। ঘ) শ্রেষ্ঠ কাবশিশু ও শ্রেষ্ঠ কাবশিক্ষককে পদক প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের নিজ জীবন গড়তে ও সমাজ সেবামূলক কাজে উদ্বুদ্ধ করা। ঙ) শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা/ থানা শিক্ষা অফিসার, শ্রেষ্ঠ পিটিআই, শ্রেষ্ঠ পিটিআই ইন্সট্রাক্টর, শ্রেষ্ঠ সহকারী ইউআরসি/টিআরসি ইন্সট্রাক্টর, শ্রেষ্ঠ ইউআরসি/টিআরসি ইন্সট্রাক্টরদেরকে পদক ও সনদ প্রদানের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে উৎসাহ ও প্রেরণা যোগানো । চ) শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়, এস.এম.সি.-কে পদক প্রদানের মাধ্যমে শিশুদের বিদ্যালয়ে আনয়ন, ঝরেপড়া রোধ করা, বিদ্যালয় আকর্ষণীয় করা, বিদ্যালয়ের সাথে সমাজের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা। ছ) প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য কর্মচারীদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহিত করা । জ) প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য শিক্ষা প্রশাসক, শিক্ষাবিদ এবং বিদ্যোৎসাহীদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহিত করা ।