বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির আপডেট ২০২৫ । মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়টি যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব??

মহার্ঘ ভাতা হল একটি অতিরিক্ত ভাতা এটিকে ইংরেজীতে বলা হয়। Dearness Allowance হিসাবে বিজ্ঞানের ভাষায় মহার্ঘ ভাতা হচ্ছে কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ মালিক বা প্রতিষ্ঠানের নিকট একটি ব্যয় অন্যদিকে শ্রমিক বা কর্মীদের নিকট এটি একটি আয়-মহার্ঘ ভাতা ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব কি বলেছে? আজ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়টি যৌক্তিক বলেছেন। আরও যোগ করেন যে, যাই বলুক না কেন আমার এ ব্যাপারে রাজস্ব বৃদ্ধির চেষ্টা করছি। রাজনৈতিক বক্তব্য বা সমালোচনাকারীদের বক্তব্যকে গুরুত্ব না দেওয়ার আশ্বস্ত করে তিনি বলেন সরকারি কর্মচারীদের বেতন অনেক কম এবং মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়টি যৌক্তিক। ডিম সিন্ডিকেট ভাঙ্গা হয়েছে এবং অন্যান্য সিন্ডিকেট ভাঙ্গা হচ্ছে। প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে সেটা খুবই যৌক্তিক। আশপাশের দেশের চেয়ে বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীরা খুবই কম বেতন পান। অমানবিক বেতন দেওয়া হয় তাদের।’

জাতীয় দৈনিক পত্রিকা গুলোর তথ্য মোতাবেক কি বুঝা যায়? যদি মহার্ঘভাতা বাস্তবায়ন হয় তবে ৩৯,০০০ টাকার উপরে যাদের মুল বেতন আছে তাদের ৭৮০০ টাকার উপরে মহার্ঘভাতা পাওয়ার সুযোগ নাই। তিনি যে গ্রেডের কর্মকর্তাই হোন না কেন বা তার জন‍্য যে শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা নির্ধারণ হোক না কেন তিনি ৭৮০০ টাকা নির্ধারিত হারে পাবেন। অন্যদিকে ১৬০০০ টাকা পর্যন্ত যাদের মুল বেতন তারা ৪,০০০ টাকার নিচে মহার্ঘ ভাতা পাবেন না, তাতে যে শতকরা হিসাব নির্ধারণ হোক না কেন অর্থাৎ উপরের দুই ধাপ যাদের ১৬০০০ থেকে ৩৯০০০ হাজারের মধ‍্যে মুল বেতন তাদের জন‍্য প্রযোজ‍্য ক্ষেত্রে শতকরা হিসাব ব‍্যবহৃত হবে। যেমন ১৮৪০০ টাকা যাদের মূল বেতন তারা ১৮৪০০*২৫% = ৪৬০০ টাকা মহার্ঘ ভাতা পাবেন।

জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে ( দ্রব্য + নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম + যাতায়াত ব্যয় ইত্যাদি ব্যয় বৃদ্ধি) শ্রমিক বা কর্মচারীদের সাময়িক ভাবে মূল বেতনের সাথে যে অতিরিক্ত ভাতা বা অর্থ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয় তাই “মহার্ঘ ভাতা” বলে পরিচিত। 

মহার্ঘ ভাতা দিলেই কি কর্মচারী সন্তুষ্ট থাকবে? না। মহার্ঘ ভাতা দিলেও সেখানে আমাদের আন্দোলনের কারনে কোন সফলতা আসছে/আসবে বলে মনে হয়না। যদি আমরা এখানে পার্সেন্টেজ হিসেবে বিবেচনা না করে স হারে একটা ভাতা আদায় করতে পারি তাহলে ততটুকুই সফলতা ধরা  যেতে পারে। যদিও এই এই মহার্ঘ ভাতা আমাদের জন্য বিশেষ কোন সুবিধা বয়ে আনবে বলে মনে হয়না, তাই বৈষম্য মুক্ত একটি পে-স্কেল আদায়ের জন্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। মাঠে সজাগ ভূমিকা পালন করতে হবে।

শতকরা হিসেবে দিলে আবার বৈষম্য সৃষ্টি হবে। নবম পে স্কেল গঠন পর্যন্ত সবার জন্য সার্বজনীন অভিন্ন মহার্ঘ্য ভাতা হওয়া আবশ্যক। আপনাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক বৈষম্ হীন পে স্কেল গঠনে। একটা বৈষম্যহীন মহার্ঘ ভাতা চাই।

সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিমাসের বেতনের সাথে বিভিন্ন অনুপাত বা হারে এই অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হয়। মূলত দ্রব্যমূল্যের সাথে সমন্বয় ও মূল্যস্ফিতির সাথে বাজার মূল্যের সমন্বয়ে জীবনযাত্রার মান ঠিক রাখতে এ ভাতা প্রদান করা হয়। ২০০৯ সালের জাতীয় বেতন স্কেল জারি করার পর ২০১৩ সালে মহার্ঘ ভাতা প্রদানের আদেশ জারি করা হয়। নবম পে স্কেলের সর্বশেষ খবর

মহার্ঘ ভাতা আদেশ ২০১৩

সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যকে অন্তর্ভর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে তাদের মূল বেতনের ২০% (বিশ শতাংশ) হারে মাসিক সর্বনিম্ন ১,৫০০/- (এক হাজার পাঁচশত টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬,০০০/- (ছয় হাজার) টাকা মহার্ঘ ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

মূলত নিয়োগকারী বা মালিক (Employer) কর্তৃক নিয়োগকৃত কর্মচারীদেরকে (Employees) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ার সাথে জীবনযাপনে কুলিয়ে ওঠার জন্য যে বিশেষ ভাতা প্রদান করে তা-ই মহার্ঘ ভাতা । মূল বেতনের নির্দিষ্ট শতকরা অংশ বেতনের সাথে অতিরিক্ত প্রদান করা হয় । এটি প্রতি মাসেই দেয়া হয়ে থাকে । যেমন কারও মাসিক বেতন ১০,০০০ টাকা, আর মহার্ঘ ভাতা যদি হয় ২০% তাহলে তার বেতন দাঁড়াবে ২,০০০ টাকা । সরকারি বা বেসরকারি উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানে মহার্ঘ ভাতা দেয়া হয়। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ গেজেট ডাউনলোড । চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫ pdf

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে মহার্ঘ ভাতা চালু করা হয়, এবং তারপর তা ” খাদ্য ভাতা” নামে পরিচিত হয়। “ওল্ড টেক্সটাইল ভাতা” ১৯৪৭ সালে চালু করা হয়েছিলএবং ১৯৫৩ সালে “সংশোধিত টেক্সটাইল ভাতা” হিসাবে পুনঃপ্রবর্তিত হয়েছিল।

বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন ভাতার সমন্বয় কোনভাবে বার্ষিক ৫% বেতন বৃদ্ধির মাধ্যমে সময় হচ্ছে না। দ্রুত গতিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও জীবন যাত্রার মানের সাথে খাপ খাওয়াতে মহার্ঘ ভাতা প্রদান আবশ্যক হয়ে পড়েছে। ২০১৫ সালের জাতীয় পে স্কেল জারির পর সম্প্রতি শিক্ষানবিশকাল শেষে ব্যাংকারদের সর্বনিম্ন বেতন হবে ৩৯ হাজার টাকা বেসরকারি খাতের ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একনিষ্ঠতা, নৈতিকতা, মনোবল ও কর্মস্পৃহা অটুট রাখার লক্ষ্যে তাঁদের যথাযথ বেতন-ভাতা প্রদান আবশ্যক।মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর এবং দপ্তরে নিয়ােগ/পদোন্নতি সংশ্লিষ্ট কাজের সম্মানী/পারিতােষিক হার পুন:নির্ধারণ করে প্রায় ৪০% বাড়ানো হয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রারম্ভিক বেতন ভাতাদি

বিবরণসর্বনিম্ন বেতন ভাতা
ব্যাংক কর্মকর্তার শিক্ষানবীশ কালে ন্যূনতম বেতন ভাতা২৮০০০ টাকা
শিক্ষানবীশ সমাপ্ত শেষে৩৯০০০ টাকা
ক্যাশ অফিসারের ক্ষেত্রে২৬০০০ টাকা
পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নিরাপত্তা প্রহরী ও অফিস সহায়কের বেতন২৪০০০ টাকা

উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে একটি ধারণা পাওয়া যায় যে, মহার্ঘ ভাতা চলতি বছরই ঘোষণা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বর্তমান অসহায় অবস্থা থেকে উত্তোরণের ন্যূনতম উপায় মহার্ঘ ভাতা জারি। মহার্ঘ ভাতা ছাড়াও ৭ দফ দাবিতে কর্মচারীগণ আন্দোলন ও মানববন্ধন করছেন।

সরকারি কর্মচারীদের ৭ দফা আর্থিক দাবি বাস্তবায়নের আবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন ভাতাদি ফের পরিবর্তন ২০২২

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

12 thoughts on “সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির আপডেট ২০২৫ । মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়টি যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব??

  • চালু হয়নি এখনও

  • আসসালামুয়ালাইকুম
    আমি শৈলকুপা থেকে বলছি আমার বাবা একজন দিনমজুর তার মাসিক আয় হচ্ছে 5000 টাকা

  • প্রধানমন্ত্রীর দরিদ্র তহবিলে আবেদন করুন এবং আর্থিক সহায়তা বিভাগে যোগাযোগ করে মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করুন।

  • ঈন্ডেক্সধারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সাপেক্ষে (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ছাড়ায়) উচ্চ পদে আবেদনের সুজোগ দেওয়া হোক।

  • ইন্ডেক্সধারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সাপেক্ষে (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ছাড়ায়) উচ্চ পদে আবেদনের সুজোগ দেওয়া হোক।

  • হয়তো অদূর ভবিষ্যতে হবে।

  • বিকাশ নাম্বার 01613975974

  • The allowance should be given soon.

  • সহমত। দ্রব্যমূল্য অসহনীয় হয়ে পড়েছে।

  • আমি একজন অফিস সহায়ক বেসরকারি স্কুলের কর্মচারি
    আমার বেতন মাত্র ৮৯০০ টাকা
    দেশের দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির কারনে এই টাকা দিয়ে পরিবারের ভরনপোষণ করা অসম্ভব হয়ে পরে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন
    আমাদের বেতন বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর যেন সু-মর্জি হয়

  • সহমত। আগামী বছর আশা করছি। সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *