সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধনে নিজেদের দাবিগুলো বার বার তুলে ধরা সত্বেও বাজেটে আর্থিক কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। বর্তমান সরকারের সময়েও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দাবী দাওয়া সম্বলিত পত্র ও ডকুমেন্ট জমা দেওয়া হয়-সেখান থেকে এখনও কোন আওয়াজ পাওয়া যায় নি-নবম পে স্কেলের বিকল্প নাই ২০২৪
বেতন দ্বিগুন এটি কেন এখনও বলা হয়? মানববন্ধনে অনলাইন মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে তাদের কষ্ট ও দুদর্শার কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, ২০১৪ সালে নতুন যারা যোগদান করেছেন তাদের বেতন দ্বিগুন হয়েছে। ৪১০০ টাকা স্কেল কে ৮২৫০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে কিন্তু পুরাতন কর্মচারীদের বেতন ভাতা ২-৩ হাজার টাকার বেশি বৃদ্ধি পায়নি। প্রতিবছর যে ৫% বেতন বৃদ্ধি করা হয় তা বাজারের মূল্যস্ফিতির সাথে সমন্বয় করে তারা সংসার চালাতে পারছেনা। মাসে বাজার, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ ও অন্যান্য ব্যয় মিলে বেতনের টাকায় তারা মাস পাড়ি দিতে পারছেন না। সাধারণ কর্মচারীগণ ধারদেনা করে সংসার পরিচালনা করছেন। ২০১৫ সালে দ্বিগুন করা হয়েছে মর্মে ধ্বনি উচ্চারিত হলেও ১০ বছর পেরিয়ে টাকা মান অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে সেখানে বেতন বৃদ্ধি ৫০% পর্যন্ত হয়নি। এখন মূল্যস্ফিতি ১০% এর উপরে থাকলেও সেদিকে কোন নজর দেয়া হচ্ছে না।
১০ গ্রেডই কি সমাধান? উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেতনের সাথে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতনের ১:১০ অনুপাত বজায় থাকায় বিশাল বৈষম্য তৈরি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ১৯৭৩ সালে ১০ গ্রেডের পে স্কেল বাস্তাবায়িত হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। কর্মকর্তারা যে বাজার থেকে বাজার সদাই করেন কর্মচারীরাও সেই বাজার থেকেই বাজার সদাই করেন। তারা যে স্কুল কলেজে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া করান কর্মচারীরাও সেই স্কুল কলেজেই ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা করান। আন্তজার্তিক বেতন কাঠামো মান বজায় না থাকায় কোন ভাবে ১৪-২০ বাজার টাকা বেতন দিয়ে বাড়ি ভাড়া, বাজার সদাই, ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা, পরিবারের অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। বর্তমান সরকারই কেবল বৈষম্যমুক্ত পে-স্কেলের ঘোষণা দিয়ে কর্মচারীদের মুক্তি দিতে পারে।
বেতন রেশিও কেমন হওয়া উচিৎ? জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন পূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সনের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে। পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রথা পূনঃবহাল করতে হবে। এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের সরকারী কর্মচারীদের পদ ও বেতন বৈষম্য দুর করতে হবে। ব্লক পোষ্টধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে হস্থান্তর করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টার রোল ও অন্যান্য দপ্তররে কর্মরত মাস্টার রোল, কন্টিজেন্স ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।
নতুন পে স্কেলের আওয়াত তুলতে হবে । রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গদের আলোচনায় রাখতে হবে
৭ম পে স্কেল থেকে ৮ম পে স্কেলে টাকা অংকে বৈষম্যের পরিমাণ বেড়েছে। ১-১০ গ্রেডে গ্রেড ভিত্তিক ব্যবধানের হার সর্বনিম্ন ২.২২% ও সর্বোচ্চ ৯.৬০% যাহা ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে স্পষ্ট বৈষম্য। একই শিক্ষা গত যোগ্যতায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেতন গ্রেড ও পদ মর্যাদায় বৈষম্য সৃষ্টি হয়। তাহা নিরসনে আমাদের এই দাবী।
গ্র্যাচুইটি ১ টাকার বিপরীতে কত হওয়া দরকার? সরকারি কর্মচারিদের পূর্বের ন্যায় ৩টি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পূনঃবহাল করতে হবে। জীবন যাত্রার মান সমুন্নত রাখার স্বার্থে ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০% থেকে ১০০% ও গ্রাইচ্যুইটির হার ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৫০০ টাকায় উন্নীত করণ করতে হবে। ৯ম পে-স্কেল প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে ৫০% মহার্ঘ ভাতা অবিলম্বে দিতে হবে।
গৃহ নির্মাণ ঋণ কি প্রহসন ছিল? প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত কর্মচারীদের ন্যায় ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারিদের বিনা সুদে ৩০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের যোগদানের দিন থেকে সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য করা রীট মামলার মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত আদেশ অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করা হয়েছে কিন্তু অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করা হয়নি।
আমার বেতন গ্রেড ১৫। বর্তমানে আমার ঋণের পরিমাণ ১৪ লাখের বেশি। বাচ্চার লেখা -পড়ার খরচ দ্রব্য মূল্যর উদ্ধগতি, সব মিলিয়ে নাভি:স্বাস হয়ে উঠেছে আমার। কোনক্রমেই আর চলা সম্ভব নয়। এ জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে একটাই দাবি চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা। চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দিলে চাকরি জীবিকা চির কৃতজ্ঞ থাকবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট।