বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

নবম পে স্কেল চাই ২০২৪ । সর্বনিম্ন বেতন ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে?

বাংলাদেশের দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে নিম্নআয়ের কর্মচারীদের জীবন দুর্বিসহ আকার ধারণ করেছে। গত অর্থ বাজেটেও কর্মচারীদের পক্ষে কোন ধরনের আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা না রাখায় কর্মচারীদের মনে চরম হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ বিভিন্নভাবে ৫ দফা দাবি পূরণের চেষ্টা করে চলেছে-নবম পে স্কেল চাই ২০২৪ । সর্বনিম্ন বেতন ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে?

বড় বৈষম্যটা কোথায়? ১১-২০ গ্রেড কর্মচারী ও ১-১০ গ্রেড কর্মকর্তা হিসাবে সকল ক্ষেত্রেই বিভাজন ও বৈষম্য পরিস্কার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৭-২০ গ্রেডে প্রতি গ্রেডের গড়ে ২-৩% হারে ব্যবধান এবং ১-১০ গ্রেডে গড়ে ২০ শতাংশ ব্যবধান রাখা হয়েছে ফলে ব্যাপক ভাবে আর্থিক বৈষম্যের শিকার হয়েছে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ। যে কোন আদেশ জারির মাধ্যমে এই বৈষম্য ব্যাপক আকার ধারণ করে যখন মূল বেতন অনুসারে কোন সুযোগ বা সুবিধা প্রদান করা হয়। গ্রেড অনুসারে কোন আর্থিক সুবিধা দেওয়া হলে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের সতীনের ছেলের মত অবস্থায় রাখা হয়।

বেতনে কি মাস চলে? সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সবচেয়ে কম বেতনে চাকরি করেন ১৭-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ। বর্তমান বাজারে মাসিক বেতনের টাকা দিয়ে তাদের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। মাস শেষে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ যে বেতন পান তা দিয়ে বাসা ভাড়া, পরিবারের ৬ জন সদস্যের মাসের বাজার সদাই, ছেলে মেয়েদের পড়াশুনায় ব্যয় করে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। মাস শেষ হওয়া আগেই তাকে ঋণ করে সংসার চালাতে হয়। নবম পে স্কেলের সর্বশেষ খবর । কবে দিবে পে স্কেল?

চাকরি জীবনের কয়টি পদোন্নতি পাওয়া যায়? কিছু পদে কোন পদোন্নতি নাই শুধুমাত্র উচ্চতর গ্রেড পেয়ে কিছু আর্থিক সুবিধা পাও য়া যায়। বর্তমানে উচ্চতর গ্রেড পেলে বেতন বাড়ে বরং বেতন কমে যায়। এমতাবস্থায় রিট চলমান অবস্থায় রয়েছে তাই অনেকে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একজন সরকারি কর্মচারী বা কর্মকর্তা তার চাকরি জীবনে প্রায় ৪-৫টি পদোন্নতি সুবিধা পেয়ে থাকে। কর্মকর্তার চেয়ে কর্মচারীর আর্থিক সুবিধা যে খুবই ক্ষীন তাই আজ আলোচনা করবো।

অনতিবিলম্বে বৈষম্যবিহীন নবম পে-স্কেল চাই । ৬.৬৬ টাকার হাস্যকর টিফিন ভাতা সংশোধন করতে হবে

কর্মকর্তার পদোন্নতিতে আর্থিক সুবিধা কত টাকা পর্যন্ত হতে পারে? কর্মকর্তা বলতে ১-১০ তম গ্রেড ধারী কর্মচারীদের বুঝানো হয়। একজন কর্মকর্তা পদোন্নতিকালে বেশই ভাল মানের আর্থিক সুবিধা ভোগ করে থাকে। একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি পরিস্কার করা যাক, ধরি, জনাব সিদ্দিকুর রহমান, সহকারী বেতার প্রকৌশলী ৯ম গ্রেডে যোগদান করে ৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় ৬ষ্ঠ বছর পদোন্নতি পেয়ে উপ আঞ্চলিক প্রকৌশলী পদে ৬ ষ্ঠ গ্রেডে উন্নীত করা হলো। তাহলে তার বেতন ভাতাদি নিম্নরুপ হারে পরিবর্তিত হবে। ৯ গ্রেডে মূল বেতন ২২০০০ টাকায় যোগদান করে ষষ্ঠ বছরে তার মূল বেতন দাড়ায় ২৯,৫১০ টাকা। উপ আঞ্চলিক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হওয়ার পর ৩৫৫০০ টাকায় মূল বেতন দাড়াল। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, পদোন্নতি পাওয়ায় তার বেতন বৃদ্ধি পেল ৫,৯৯০ টাকা। অর্থাৎ তার মূল বেতনের ২০ শতাংশের উপরে মূল বেতন বৃদ্ধি পেল।

বাংলাদেশে ন্যুূনতম মজুরি ১২৫০০ টাকা। যেখানে বার্ষিক মাথা পিছু আয় ২,৮১৪ মার্কিন ডলার, সে হিসেবে মাসিক গড় আয় ২৩৪.৫ ডলার। যা টাকায় রূপান্তর করলে ২৩৪.৫*১২০ = ২৮,১৪০ টাকা। সেখানে ন্যূনতম বেতন ২৫ হাজার টাকা দাবী কোন আকাশ কুসুম চাওয়া নয়।

নবম পে স্কেল ২০২৪ । সরকারি ১৭-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ কি চায়?

  1. বৈষম্যহীন ৯ম জাতীয় বেতন কমিশন গঠন কর ও সর্বনিম্ন বেতন ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে ।
  2. আউটসোর্সিং প্রথা সম্পূর্ণ বাতিল পূর্বক সকল আউটসোর্সিং কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে ।
  3. সচিবালয়ের মত সকল দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তরের ১৭-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের সিলেকশন গ্রেড প্রদান করতে হবে।
  4. পূর্বের মতো শতভাগ পেনশন উত্তোলনের সুযোগ করতে হবে ।
  5. বাড়ি ভাড়া (বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানি বিল সহ) ৮০% দাও, চিকিৎসা ভাতা ৩০০০ টাকা শিক্ষা ভাতা ২০০০, ধোলাই ভাতা ১০০০ টাকা করতে হবে।

পে স্কেলের সমস্যা ও সমাধান কি?

নবম পে-স্কেল ঘোষনার মাধ্যমে বিদ্যমান বেতন নিরসন করে গ্রেড অনুযায়ী বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে। (যৌক্তিক হারে বেতন নির্ধারণ করতে হবে)। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল পদে পদোন্নতি বা ০৫(পাঁচ) বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে(ব্লক পোষ্ট নিয়মিতকরণ করতে হবে)। টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড পুণঃবহাল সহ জেষ্ঠতা বজায় রাখতে হবে। সচিবালয়ে ন্যায় পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে। সকল ভাতা বাজার চাহিদা অনুযায়ী সমন্বয় করতে হবে। নিম্ন বেতন ভোগীদের জন্য রেশন ও ১০০% পেনশন চালু সহ পেনশন গ্রাচুইটি হার ১টাকা = ৫০০ টাকা করতে হবে। কাজের ধরণ অনুযায়ী পদ, নাম ও গ্রেড একিভূত করতে হবে।

সরকারি চাকরিতে পদোন্নতি বৈষম্য ২০২৪ । কর্মচারীদের পদোন্নতিতে খুবই সামান্য আর্থিক সুবিধা?

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

One thought on “নবম পে স্কেল চাই ২০২৪ । সর্বনিম্ন বেতন ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে?

  • আমি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি। গত ০৭/০৬/২০২৩ এ যোগদান করি। আমি বেসরকারি বিদ্যালয়ে চাকরি করি। যার বেতন স্কেল ৮২৫০/- টাকা। নেট বিল তুলি ৯৯২৫/- টাকা। আমার বাসা থেকে স্কুল ২৫ কি.মি. দৈনিক ৫০ কি.মি. যাতায়াত করি। মাসিক ভাড়া যায় ৪০০০/ টাকা। বাকি থাকে ৫৯২৫/- টাকা। যা দিয়ে পরিবারের সংসার চালানো খুব কঠিন। স্কুল সময় সকাল ৯.৩০ থেকে বিকাল ৫.০০ পর্যন্ত। বাড়তি কোন কাজ করার সুযোগ পায় না। আর বর্তমান বিদ্যুৎ বিলের ইউনিটের মূল্য বাড়ায় বিল আসে মাসে ১০০০/- এর বেশি। বাকি টাকা দিয়ে চলায় অসম্ভব। মনে হয় এই শ্রেনির চাকরি করা সবচেয়ে জীবনের বড় ভুল।। এখন না সামনে যেতে পারি না পিছনে। একটা চতুর্থ শ্রেনির কর্মচারি যানে কি কষ্ট করে দিন কাটায়। এর থেকে ভালো হয় যদি অন্যের দোকানে কাজ করে জীবন চালানো যায়। বাকি টা কি বলব…. জীবন টায় ব্যর্থ চাকরি করে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *