সারাদেশে সকল মসজিদে একই সময় জুমআর নামাজ আদায় প্রসঙ্গে ইসলামিক ফাউন্ডেশন নির্দেশনা জারি করেছে–জুমার নামাজ আদায় নির্দেশনা ২০২৫
জুমআর নামাজ কি ঈদের নামাজের মত? হ্যাঁ। জুমআর দিন সর্বাপেক্ষা উত্তম ও বরকতময় দিন। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা। জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এ-ই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম; যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯) জুমআ পারস্পরিক দেখা সাক্ষাত ও সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এ দিনকে বিশেষ মর্যাদা ও তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার কারণ হলো এ দিনে বিশেষ সময়ে বরকত ও কল্যাণ রয়েছে।
জুমআ কোন মসজিদে ১.০০ টায় পড়ে? হ্যাঁ। বাংলাদেশে বিভিন্ন মসজিদে বিভিন্ন সময়ে জুমআর নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। কোনো মসজিদে দুপুর ১.০০ টায়, কোনো মসজিদে ১.৩০ টায়, আবার কোনো মসজিদে দুপুর ১.৫০ টায় জুমআর নামাজ শুরু করতে দেখা যায়। সময়ের তারতম্যের কারণে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ বিশেষ করে পথচারী (সফররত মুসল্লিগণ) বিভ্রান্ত ও সমস্যার সম্মুখীন হন। এ সমস্যা দূরীকরণে সারাদেশে সকল মসজিদে মুসল্লিগণের সুবিধার্থে একই সময় দুপুর ১.৩০ টায় জুমআর নামাজ আদায় করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
নবী সময়ে জুমা কখন পড়তেন? নবী মুহাম্মদ (সাঃ) জুমার নামাজ সূর্য ঢলার পরে পড়তেন। অর্থাৎ, যখন সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে যেত, তখন তিনি জুমার নামাজ পড়তেন। জুমার নামাজের সময় সম্পর্কে অধিকাংশ সাহাবা, তাবেঈন ও ইমামগণের মতামত একই। জুমার নামাজের উত্তম সময় হলো, সূর্য হেলে যাওয়ার পর থেকে। প্রয়োজনের তাগিদে কিছুটা দেরি করা যেতে পারে। বয়ানের কারণে যদি দেরি করা হয়, তাহলে সেটা বেদআত। জুমার দিনে গোসল করার অনেক ফজিলত রয়েছে।
বিভাগ/জেলায় অবস্থিত সকল মসজিদে একই সময়ে অর্থাৎ দুপুর ১.৩০ টায় জুমআর নামাজ আদায় করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্র জারি করেছে
১.৩০ এ নামাজ হলে স্কুল শিক্ষক ও ছাত্রদের কি সমস্যা হয়? স্কুলে আগে ১টায় ব্রেক দিতো ছাত্র শিক্ষক সবাই জোহরের নামাজ পড়ার সুযোগ পারতেন। নামাজ মিস করলে শাস্তির ব্যবস্থাও ছিলো কিন্তু এখন ১.৪৫ মিনিটে ব্রেক দেয় । লাঞ্চ করতে পারলেও কেউই আর নামাজ পড়তে পারেনা । তাই নামাজের সময় সূচীর সাথে ব্রেকের বিষয়ও বিবেচনায় নেয়া দরকার।
Caption: Juma Order
জুমার নামাজের প্রস্তুতি । জুমার নামাজের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত?
- জুমার নামাজের প্রস্তুতি হিসেবে গোসল করা, সুন্দর পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, খুতবা শোনার মতো আমল করা উচিত। এছাড়াও, জুমার দিন আজানের পর বেচাকেনা বন্ধ রাখা, দ্রুত মসজিদে যাওয়া, সুরা কাহফ তিলাওয়াত করাও গুরুত্বপূর্ণ।
- জুমার নামাজের আগে গোসল করা উচিত।
- জুমার নামাজের জন্য সুন্দর পোশাক পরা উচিত।
- সুগন্ধি ব্যবহার করা উচিত।
- জুমার নামাজে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
- জুমার নামাজের আগে আগে মসজিদে যাওয়া উচিত।
- জুমার নামাজের আগে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা উচিত।
- জুমার নামাজের বিশেষত্ব
- জুমার নামাজের জন্য খুতবা দেওয়া শর্ত।
- জুমার নামাজ শহর বা উপশহরেই শুদ্ধ হয়।
- জুমার নামাজে জামাআত হতে হবে।
- জুমার নামাজ যোহরের সময় পড়তে হয়।
- জুমার নামাজে সকলের জন্য অনুমতি থাকতে হয়।
জুমআর দিনে কখন মসজিদে যাওয়া উচিৎ?
জুমার দিনে মসজিদে সবার আগে যাওয়া উচিত। জুমার দিনে সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করলে দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় বিশেষ আলো দ্বারা আলোকিত হয়। জুমার দিন কিয়ামত সংঘটিত হবে, এ জন্য প্রত্যেক ঈমানদারের জন্য দিনটিতে কিয়ামতের ভয়াবহতা স্মরণ করে আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। জুমার দিন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মসজিদে যাওয়া উচিত। জুমার নামাজের আহ্বান শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা বা অন্য কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে নামাজের জন্য বিরতি নেওয়া উচিত। জুমার দিনে আগে আগে মসজিদে যাওয়া সুন্নত। জুমার দিন সাধারণ দুপুরের নামাজের পরিবর্তে শুক্রবারের নামাজ বা আরবি ভাষায় ‘সালাতুল জুমু’আহ’ পাঠ করা হয়। জুমার নামাজে দুই রাকাত ফরজ রয়েছে। ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত কাবলাল জুমা এবং পরে চার রাকাত বাদাল জুমা (সুন্নত নামাজ) আদায় করতে হয়।জুমার দিনের গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এত বেশি যে, কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল করা হয়েছে।