শাস্তি । সাময়িক বরখাস্ত । অপসারণ

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ । কালো আইন বাতিলে কর্মচারীগণ কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে?

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থতি পর্যালোচনার জন্য গঠিত কমিটির সংগে ২৩ জুন বিকাল ৪.০০ ঘটিকায় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ৩ সদস্যের সংগে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়– সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫

সরকারি কর্মচারী প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক হয়? বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে মাননীয় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, মাননীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধিসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ঘন্টাব্যাপী আলাপ-আলোচনা করা হয়। কমিটির সদস্যদের জিজ্ঞাসার প্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির ফলে সারাদেশের কর্মচারিদের ক্ষোভের কারণসমুহ তুলে ধরা হয়। ঐক্য ফোরামের তিনজন নেতা কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার ও প্রশ্নের জবাব দেন। পাশাপাশি সারাদেশের কর্মচারিদের সার্বিক কল্যাণে সহজ সরল বিধিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব করেন।

আনুগত্য মানে কি নৈতিকতা খর্ব হবে? অধ্যাদেশে অনানুগত্যের জন্য চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে। কোনো অফিস প্রধানের কথা যদি নৈতিকমান সম্পন্ন কোনো কর্মচারী না শোনে, তখন সেই ভালো কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনানুগত্যের অভিযোগ এনে তাকে চাকরিচ্যুত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। অনানুগত্য প্রমাণে কর্মচারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দারুণভাবে ব্যর্থ হবে। এ অধ্যাদেশ বহাল রাখা হলে কর্মকর্তারা নিজের ইচ্ছামতো যখন-তখন যে কাউকে চাকরিচ্যুত করতে পারবেন।

কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনায় চাকরি যাবে? হ্যাঁ। শুধুমাত্র কর্মস্থলে অনুপস্থিতির জন্য চাকরিচ্যুত হবে। কর্তৃপক্ষের অন্যায় ও খামখেয়ালিপনার শিকার হতে পারেন কর্মচারীরা। কর্মস্থলে অনুপস্থিত বা বিরত থাকতে উসকানি বা প্ররোচিত করার জন্য চাকুরিচ্যুত হবে। এর মানে- কর্মচারিগণ তাদের ন্যায্যতা-প্রাপ্যতার বিষয়ে কোনরূপ দাবী দলবদ্ধভাবে উত্থাপন করতে পারবে না। এতেও কর্তৃপক্ষের অন্যায় ও খামখেয়ালিপনার শিকার হতে পারেন কর্মচারীরা।

সরকারি কর্মে উপস্থিত বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্থ করার জন্য চাকরিচ্যুত হবে। এতে করে কতিপয় কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারী, মনগড়া, কাল্পনিক ও খামখেয়ালীর কারণে গায়েবী অভিযোগে বিনা তদন্তে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন।

জারি করা অধ্যাদেশে কর্মচারীর অপরাধ তদন্তের সুযোগ রাখা হয়নি। অপরাধীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নেই। তদন্ত ছাড়া একজন কর্মচারী দোষী না নির্দোষ, অভিযোগ সত্য না মিথ্যা তা কিভাবে প্রমাণ হবে? এই ধরণের ধারার অপপ্রয়োগের আশঙ্কা অনেক বেশি।

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ । কর্মস্থলে নারীরা হয়রানি হবে কি?

  1. নিবর্তনমূলক এই অধ্যাদেশটি নারীদের জন্য আরও বেশি ভয়ংকর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অসাধু কর্মকর্তা তার অধীনস্ত নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নানাভাবে নাজেহাল করতে পারবেন।
  2. কর্মরত নারী সদস্যদের বাজে প্রস্তাব দিলে এবং তাতে সাড়া না পেলে ভিন্ন আঙ্গিকে অনানুগত্যের অভিযোগ আনতে পারে। যে কারণে নারী কর্মচারীদের জন্য অধ্যাদেশটি অনিরাপদ হবে।
  3. কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বার্তা বা সংবাদ ই-মেইলে নোটিশ আকারে প্রেরণের বিধান করা হয়েছে। এতে সমস্যা তৈরি হবে। বৈরী আবহাওয়া ও নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে অনেক সময় ই-মেইল ওপেন করা হয় না।
  4. অনেকে নেটওয়ার্কের বাইরে থাকতে পারে। ইন্টারনেট সচরাচর নাও থাকতে পারে। ফলে অভিযুক্ত কর্মচারী জানবেই না তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে এবং জবাব দিতে হবে। এটা কৌশলে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হবে।

আবার বৈঠক কত তারিখে অনুষ্ঠিত হইবে?

সরকারি কর্মচারি নেতৃবৃন্দের বক্তব্য কমিটির সদস্যগণ মনোযোগ সহকারে শুনেন। অধ্যাদেশের উপর আপত্তিগুলোর উপর আরও অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃবৃন্দের সংগে আগামী পরশু অর্থাৎ ২৫ জুন পুনরায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ অবস্থায়, আমাদের আন্দোলন আরও বেগবান ও গতিশীল এবং উপস্থিতির পরিমাণ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম ঘোষিত আগামী ২৪-২৫ জুন বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠক ও দপ্তরভিত্তিক সংগঠনের প্রতিনিধিগণের সংগে গণসংযোগ কর্মসূচি চলমান থাকবে। তথাকথিত বিতর্কিত অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া অধবি আন্দোলন চালিয়ে যাবার জন্য সারাদেশের কর্মচারিদের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

কালো আইন বাতিলে কর্মচারীগণ কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে?
হ্যাঁ, সরকারি কর্মচারীরা “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫” বাতিলের দাবিতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। এই অধ্যাদেশকে “কালো আইন” হিসেবে আখ্যায়িত করে এর বাতিলের জন্য তারা বিক্ষোভ ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করছে।“সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” এ সরকারি কর্মচারীদের চারটি বিষয়কে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কর্মচারীরা মনে করছেন, এই অধ্যাদেশ তাদের অধিকার হরণ করবে এবং তাদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তাই, তারা এই অধ্যাদেশ বাতিলের জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।কর্মচারীদের এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কিছু বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে: বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ: সরকারি কর্মচারীরা সচিবালয়সহ বিভিন্ন স্থানে এই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করছে।
কর্মসূচি: তারা লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এবং সরকারের সাড়া না পেলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।সংকট: এই অধ্যাদেশ সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে।অধিকার হরণ: কর্মচারীদের আশঙ্কা, এই অধ্যাদেশের ফলে তাদের উপর যে কোনো ধরনের নিবর্তনমূলক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হতে পারে।
বাতিলের দাবি: তারা এই “কালো আইন” বাতিলের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে। সংশোধন প্রস্তাব:কিছু মহল থেকে এই অধ্যাদেশের সংশোধন চেয়ে প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। মোটকথা, সরকারি কর্মচারীরা “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” বাতিলের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছে। 

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে পোস্টের নিচে কমেন্টে করুন অথবা alaminmia.tangail@gmail.com ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *