প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ টেলিভিশনকে (বিটিভি) স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হচ্ছে বলে ঘোষণা করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এই পরিবর্তনের ফলে “এখন থেকে বিটিভি হবে সবার, সব দলের এবং সব মানুষের।”

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বিটিভি আয়োজিত জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’-এর বিজয়ী শিশুশিল্পীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

🏛️ সংস্কারের লক্ষ্য: জনগণের প্রতিনিধিত্ব

বিটিভিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, বিটিভি যাতে “বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে” সে লক্ষ্যেই এটিকে নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিটিভি যাতে “কোনও দলের, কোনও রাজনৈতিক শক্তির স্বার্থের হাতিয়ার না হয়ে না ওঠে”—সেই চেষ্টা সরকার করে যাচ্ছে।

🌟 নতুন অনুষ্ঠান ও রিয়েলিটি শো

বিটিভির অনুষ্ঠানমালায় বৈচিত্র্য আনতে নতুন উদ্যোগের কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বিটিভিতে নতুন করে আরও রিয়েলিটি শো এবং ভিন্ন বয়স ও পটভূমির প্রতিযোগীদের নিয়ে নতুন নতুন অনুষ্ঠান আমরা চালু করে দিয়ে যাবো।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী সময়েও এসব অনুষ্ঠান অব্যাহত থাকবে।

‘নতুন কুঁড়ি’: নতুন বাংলাদেশের বাহক

‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, তাদের “প্রতিভা, নিষ্ঠা ও উদ্ভাবনী শক্তি আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করে।” তিনি এই প্রতিযোগিতাটিকে শুধু একটি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা না বলে অভিহিত করেন, বরং এটিকে “তরুণ প্রজন্মের জন্য, নতুন বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন দিগন্ত” হিসেবে উল্লেখ করেন।

উপদেষ্টা দৃঢ়তার সাথে বলেন, এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোর ও তরুণরাই নতুন বাংলাদেশের পতাকাকে বহন করবে এবং “নিজের প্রতিভা ও পরিশ্রম দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি, সমাজ ও সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।” তিনি বিজয়ীদের সৃজনশীল যাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সরকারের উপদেষ্টা, সচিব, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুশিল্পী ও তাদের অভিভাবকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

বেতারেও স্বায়ত্তশাসন আসবে?

বেতারেও স্বায়ত্তশাসন আসবে কিনা, সেই বিষয়ে বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য নেই। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার বক্তব্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) কে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। সাধারণত, সরকারি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার বা স্বায়ত্তশাসন প্রদানের সিদ্ধান্তগুলো সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের আলোচনা এবং পরিকল্পনার অংশ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বেতারের ক্ষেত্রেও এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কিনা, তা দেখতে হলে সরকারি ঘোষণা বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবৃতি প্রয়োজন। বর্তমানে বিটিভি সংক্রান্ত যে তথ্য আছে, সেটি বেতারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এমনটা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।