বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী রয়েছে-তাদের সরকারি সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আমরা জ্ঞাত নই বলে অনেকেই সরকারি ভাবে প্রদত্ত অনেক সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারি না। তাই নিচের একজন প্রতিবন্ধী কি ধরনের সরকারী সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে তা নিচে উল্লেখ করা হলো-Disabled Person’s Facilities bd
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭নং অনুচ্ছেদে বলা আছে- ‘‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’’। ২৮নং অনুচ্ছেদে বলা আছে- ‘‘কেবল ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, নারী, পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। উপরি-উল্লেখিত ২টি অনুচ্ছেদ ছাড়াও সংবিধানের মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদে আরো কিছু অধিকারের কথা বলা হয়েছে সেখানে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ অপ্রতিবন্ধী ব্যক্তির ন্যায় সমান অধিকার ভোগ করবে। এখানে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন দ্বারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার স্বীকৃত রয়েছে।
প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক জাতীয় নীতিমালা ডিসেম্বর, ১৯৯৫ (National Policy for the Disabled 1995)
এই নীতিমালায় প্রতিবন্ধিতা কী, প্রতিবন্ধিতার কারণ, মাত্রা, প্রতিরোধের সংজ্ঞায়িত করণের পাশাপাশি প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঘোষণাপত্র এবং বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক সুযোগ-সুবিধার বিভিন্ন অনুচ্ছেদের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের সংবিধানে এবং আন্তর্জাতিক ঘোষণাপত্র ও সিদ্ধান্তসমূহে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পূর্ণ অংশগ্রহণ ও সম-অধিকার নিশ্চিতকরণের নীতিসমূহ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, সেহেতু বাংলাদেশ সরকার নিম্নোক্ত ১৪টি বিবৃতি ও ব্যবস্থাসমূহ সরকারের নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১. প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধকরণ
২. আগাম নিরোধ ব্যবস্থা
৩. শিক্ষা
৪. জনবল উন্নয়ন
৫. গবেষণা
৬. তথ্য
৭. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা স্ব-নির্ভর আন্দোলন
৮. চিহ্নিতকরণ ও নিরোধ
৯. সহায়ক উপকরণ
১০. পুনর্বাসন
১১. কর্মসংস্থান
১২. মুক্ত চলাচল ও যাতায়াতের সুযোগ-সুবিধা
১৩. চিত্ত বিনোদন
১৪. বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাধন
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন ২০০১ ইং (Bangladesh Disability Welfare Act. 2001)
এই আইনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংজ্ঞা প্রদান ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে ৬টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে,
যথা- ১. দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ২. শারীরিক প্রতিবন্ধী ৩. শ্রবণ প্রতিবন্ধী ৪. বাক্ প্রতিবন্ধী ৫. মানসিক প্রতিবন্ধী ৬. বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী
আইনটি যথাযথ বাস্তবায়ন ও তদারকি করার জন্য ৩টি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে,
যথা- ১. জাতীয় সমন্বয় কমিটি ২. নির্বাহী কমিটি ৩. জেলা কমিটি
এই আইনে প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ, প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ ও প্রতিবন্ধিতা প্রতিকারের কথা বলা হয়েছে। আইনে সুস্পষ্টভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ৭টি সেবার কথা উল্লেখ আছে,
যথা: ১. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা সেবা, ২. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সেবা, ৩. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান, ৪. যাতায়াত সুবিধা, ৫. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, ৬. সামাজিক নিরাপত্তা, ৭. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিজস্ব সংগঠন,
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংরক্ষণ ও সমান সুযোগ-সুবিধার নিশ্চিতের কথা আইনে ব্যক্ত রয়েছে।
- প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক আইন ও নীতিমালার আলোকে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২৪-৯-২০০৬:(নমুনা)
ক্ষেত্র/বিষয়: আগাম নিরোধ - কর্মকান্ড: আগাম প্রতিরোধ সংক্রান্ত তথ্য প্রদান,পরামর্শ ও উপদেশ প্রদান
- করণীয়: থানা পর্যায়–এনজিওকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ বিষয়ক ধারণায় ICT উপকরণ
দায়িত্ব: NGOব্যুরো, সমাজসেবা মহিলা ও শিশু বিষয়ক,স্বাস্থ্য,তথ্য,শিক্ষা মন্ত্রনালয় - বাস্তবায়নকাল: দীর্ঘমেয়াদী
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (National Foundation for the Development of the Disabled People)
সমাজে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করে তাদের যথাযথ নেতৃত্ব গ্রহণের উপযোগী করার জন্য এ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়। সরকারের যুগ্ন-সচিবের পদ মর্যাদার একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে থাকেন। প্রতিবন্ধিতা নিয়ে কর্মরত উন্নয়ন সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ডে সহযোগিতা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়ক উপকরণ প্রদানসহ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সংস্থা কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। ২০০৮-৯ অর্থ বৎসরের বাজেটে ১৫০ কোটি টাকা অনুদান সাহায্য ফাউন্ডেশনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সরকারি চাকুরী (Govt. Service) t সরকারী চাকুরিতে এতিম ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কোটা ১০%: ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীতে/১৯৯৭ সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১০% কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি চালু রয়েছে। তাছাড়া বিধান চালু রয়েছে যে, কোনো সরকারি চাকুরিজীবির মৃত্যুর পর পেনশনের অর্থ তার প্রতিবন্ধী সন্তান আজীবন পাবেন। তবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অভিভাবককে চাকুরীকালীন সময়ে তার প্রতিবন্ধী সন্তান আছে এই মর্মে ঘোষণা করে যেতে হবে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিপত্র/৭-৩-২০০২
স্বল্পমেয়াদী:
১) যানবাহনে যাতায়াত সহজ করার জন্য পৃথক টিকিট কাউন্টার(বাস,লঞ্চ,ট্রেন,বিমান)
২) যানবাহনে যাতায়াত সহজ করার জন্য আসন সংরক্ষণ(বাস,লঞ্চ,ট্রেন,বিমান)
৩) ১০%কোটা ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর চাকুরিতে
৪) ১ম ও ২য় শ্রেণীর চাকুরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া
৫) র্যাম্প স্থাপন(ঢালুসিড়ি)
৬) সরকারী অফিসে হয়রানি বন্ধ করা
দীর্ঘমেয়াদী:
১) সকল রাষ্ঠ্রায়ত্ত্ব ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ (Micro credit)
২) প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সরকারী আর্থিক বরাদ্দ ২০%বৃদ্ধি করা
৩) মৈত্রী শিল্পের সামগ্রী সরকারী প্রতিষ্ঠান যেন বিনা টেন্ডারে কিনতে পারে
পরিবহন ও যাতায়াত (Transport and Communication)
সরকারি পরিপত্রে চালু রয়েছে যে, আন্তঃজেলা বিআরটিসি বাসে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ২টি সীট সংরক্ষিত থাকবে এবং নগর পরিবহনে যতজন বাসে আরোহণ করবেন ততজনকেই আসন দিতে হবে। সরকারী যানবাহনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ তাদের পরিচয় পত্র প্রদানপূর্বক অর্ধেক ভাড়ায় ভ্রমণ করতে পারেন।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ঋণ সুবিধা (Credit Facilities)
সরকারি তফসিল ব্যাংক তথা সোনালী ব্যাংক লিঃ, জনতা ব্যাংক লিঃ, অগ্রণী ব্যাংক লিঃ ও কৃষি ব্যাংক থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ উপযুক্ত কাগজপত্র দাখিলপূর্বক সহজশর্তে ঋণ গ্রহণ করে তাদের ব্যবসা/বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারেন। তাছাড়া এসিড দগ্ধ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে বিনা সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন যা ১০,০০০/= টাকা হতে সর্বোচ্চ ১৫,০০০/= টাকা পর্যন্ত।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ভাতা (Disability Allowances)
অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সরকার বিশেষ ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। ২০০৮-০৯ অর্থ বৎসরে ২ লক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এই ভাতার আওতায় আনা হবে। যার জন্য সরকারের বরাদ্দ রয়েছে ৬০ কোটি টাকা। নির্বাচিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মাসিক ২৫০/= টাকা করে প্রদান করা হয়ে থাকে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি (Education Stipend )
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার সুবিধার জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি চালু করেছেন। ২০০৮-৯ অর্থ বৎসরের বাজেটে এই খাতে ৬ কোটি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুবিধার জন্য শিক্ষা বিভাগ স্থায়ীভাবে শিক্ষা উপবৃত্তি ব্যবস্থা করেছেন। ১ম শ্রেণী থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত আগ্রহী শিক্ষার্থীগণ এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত ফরমে জানুয়ারী হতে ডিসেম্বর মাসে এই আবেদন করা যায়। একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এটি একটি চলমান ব্যবস্থা।
বিএসইডি ডিগ্রী Bachelor of Special Education – (BSEd.)
প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে কাজ করার জন্য সরকারিভাবে ব্যাচেলর অব এডুকেশনের এর সমমানের এই শিক্ষা কোর্স চালু রয়েছে। স্নাতক সমমানের শিক্ষা শেষ করে এই কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। সরকারিভাবে মিরপুর, ১৪ নং সেকশনে বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্রে এক বছর মেয়াদী এই কোর্স চালু আছে। তাছাড়া বেসরকারিভাবে সিআরপি, সুইড-বাংলাদেশ ও কল্যাণীও এই কোর্স চালু করেছে। বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্রে আবাসিক সুবিধা, শিক্ষা উপকরণ ও টিউশন ফিসহ কোর্সটি সমাপ্ত করতে ৮/১০ হাজার টাকা লাগে, যেখানে বেসরকারিভাবে লাগে তার ৮/১০ গুণ বেশী।
স্বাস্থ্য সুবিধা/Health Facilities
সরকারি হাসপাতালগুলিতে গরীব, দুস্থ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চিকিৎসা সুবিধার জন্য সমাজ কল্যাণ বিভাগ নামে একটি শাখা চালু রয়েছে। এখান থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিগণ সহজভাবে স্বাস্থ্য সেবায় সহযোগিতা পেয়ে থাকেন।
সহায়ক উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি (Assistive Devise and Accessories Import)
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহার উপযোগী সহায়ক উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ বিনা শুল্কে আমদানি করা যাবে। এছাড়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্রেইল পত্র বিনা ডাক মাশুলে প্রেরণের ব্যবস্থা আছে।
বিল্ডিং কোড (Building Code)
ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ,উন্নয়ন,সংরক্ষণও অপসারণ)বিধিমালা-২০০৮(২৭ মে ২০০৮) প্রতিবন্ধীসহ সার্বজনীনগম্যতা সস্পর্কিত বিশেষ বিধান:
ক) সকল ইমারতে পার্কিং স্পেস হতে লিফ্ট লবি পর্যন্ত সার্বজনীন গম্যতার ব্যবস্থা
খ) ১০০ বর্গমিটারের উপর ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট সকল গণ ব্যবহার উপযোগী ইমারত সমূহ যেমন– হোটেল,স্বাস্থ্যকেন্দ্র,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বাণিজ্যিক ও সমাবেশ স্থল প্রতিবন্ধীসহ সার্বজনীন গম্যতা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে,
গ) প্রযোজ্য সকল ইমারতে প্রতি তলায় ন্যুনতম একটি টয়লেট অথবা সার্বিক টয়লেট সংখ্যার ৫%(যাহা অধিক)পরিমাণ টয়লেট প্রতিবন্ধীসহ সার্বজনীনগম্যতা থাকতে হবে ।
ঘ) গাড়ি পার্কিং
দেশের সকল সরকারী অফিস- আদালতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যাতায়াত সহজ করার জন্য ঢালুপথ/র্যাম্প তৈরি করণ প্রসঙ্গে-মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ/২০০৫
সরকারি বিধান আছে সরকারি বেসরকারি সকল স্থাপনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহজ চলাচলের জন্য ঢালু পথ বা (Ramp) স্থাপন করা, যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ সরাসরি যাতায়াত করতে পারবেন।
প্রতিবন্ধী বিষয়ক ফোকাল পয়েন্ট (Disability Focal Point) (১৯-৮-২০০৭(৪৬টি)
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী শাখা, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় প্রতিবন্ধী বিষয়ক ৪৬টি ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করেছেন। প্রতিবন্ধী বিষয়ক যে কোনো বিষয় ভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সেখানে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (Employment and Rehabilitation Center for the Physically Handicap -ERCPH)
টঙ্গী, গাজীপুরে ১৯৮২/৮৩ সালে এই সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। তাছাড়া বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায় একই ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে শারীরিক, দৃষ্টি, বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ ৬ মাস মেয়াদী বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান পূর্বক স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের ৪,০০০/= (চার হাজার) টাকা নগদ প্রদান করা হয় তার কর্মকান্ড চালু করার জন্য। এখানে হেয়ারিং মোল্ড, কৃত্রিম হাত-পা সহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন সহায়ক উপকরণ প্রস্ত্তত করা হয়। এখানে সীট সংখ্যা খুব সীমিত বিধায় ভর্ত্তির প্রতিযোগিতা থাকে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও নারীদের জন্য এখানে কোনো ব্যবস্থা নেই।
একই স্থানে রয়েছে আরও একটি পুরানো প্রতিষ্ঠান ‘‘দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (Training and Rehabilitation Center for the Blind -TRCB) যা ১৯৭৭/৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। এখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাঁশ-বেতের কাজ, সাদাছড়ি প্রস্ত্তত, সঙ্গীত শিক্ষা, অরিয়েন্টেশন মবিলিটি, ব্রেইল পুস্তক মুদ্রণসহ বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করে স্ব-নির্ভর করা হচ্ছে।
মৈত্রী শিল্প (Moitri Shilpa) ঃ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত এই শিল্প টঙ্গী, গাজীপুরে অবস্থিত। এখানে ‘‘মুক্তা’’ নামে মিনারেল ওয়াটার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করা হয়। এখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা উন্নতমানের প্লাস্টিক সামগ্রী উৎপাদন ও বিপনন করা হয়।
বিশেষ শিক্ষা (Special Education)
ঢাকা, চট্রগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগীয় শহরে স্কুলগুলো অবস্থিত। এখানে নার্সারী হতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিশেষ পদ্ধতিতে শিক্ষা দেয়া হয়। দৃষ্টি, বাক্, শ্রবণ ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এখানে লেখাপড়ার সুযোগ পায়। এখানে ৩০ জন ছেলে ২০ জন মেয়ের আবাসিক ব্যবস্থা আছে। এখানে থাকা-খাওয়া, শিক্ষা উপকরণসহ সকল কিছু বিনামূল্যে সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়। শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এখানে কোনো সুযোগ নেই এবং সিলেট বিভাগে এই প্রতিষ্ঠান নেই।
সমন্বিত স্কুল (Integrated School)
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা সহযোগিতার জন্য সরকার ৬৪টি জেলায় একটি করে সমন্বিত স্কুল চালু করেছে। সেখানে প্রথম শ্রেণী হতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া শিখানো হয়। এখানে প্রত্যেকটি জেলায় সরকার কর্তৃক নির্বাচিত একটি মাধ্যমিক স্কুলের একটি কক্ষ বরাদ্দ নিয়ে এই শিক্ষা পদ্ধতি পরিচালনা করে। সরকার কর্তৃক নিযুক্ত এক একজন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক (Resource Teacher) পরিচালনা করেন। শিক্ষার সমস্ত গাইড করেন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি তাদের দেখাশুনা করেন, পড়া বুঝিয়ে দেন, নোট করে দেন। এখানেও আবাসিক, অনাবাসিক উভয় ধরনের সুযোগ আছে এবং থাকা-খাওয়া শিক্ষা উপকরণসহ সমূদয় খরচ বিনামূল্যে সরকার বহন করে। সরকারের রাজস্ব খাত থেকে স্কুলগুলো পরিচালনা করে। সরকারের সাথে চুক্তির ভিত্তিতে ৬৪টি স্কুলের মধ্যে ৬টি স্কুল পরিচালনা করেন অ্যাসিস্ট্যান্স ফর ব্লাইন্ড চিল্ড্রেন (ABC) নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ৬৪ টি স্কুলের কোথাও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়েদের পড়ার সুযোগ নেই। তবে সালনা, গাজীপুরে এ্যাসিস্ট্যান্স ফর ব্লাইন্ড চিল্ড্রেন এর নিজস্ব পরিচালনায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়েদের জন্য একটি সমন্বিত আবাসিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। এখানে বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়া ও শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা হয়। এখানে আসন সংখ্যা মাত্র ১০টি এবং বাংলাদেশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়েদের জন্য একমাত্র সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা।
বাক্-শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষ শিক্ষা (Special Education for Speech & Hearing Impaired Children)
ঢাকা, চট্রগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, ফরিদপুর ও চাঁদপুরে ৭ টি স্কুল রয়েছে। বরিশালে জাতীয় বধির সংস্থা কর্তৃক ১০০ সীটের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে বিধায় সেখানে এই স্কুল নেই। উপরি-উল্লেখিত স্কুলগুলো সরকারি রাজস্ব বাজেট থেকে পরিচালিত হয়। এখানে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সরকারি খরচে বিশেষ পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদান করা হয়। ফরিদপুর, চাঁদপুর ও বরিশালের স্কুলগুলো ছাড়া বাকিগুলো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুলগুলোর সাথে সমন্বয় করা হয়েছে।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষ শিক্ষা (Special Education for Children with Intellectually Disabled)
ঢাকার মিরপুর ১৪ নং সেক্টরে সরকারিভাবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একমাত্র আবাসিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ১০টি ও ছেলেদের ১০টি সীট রয়েছে। ২০টি আবাসিক সিটের কথা বলা হলেও ৩০ জনের মত ছাত্র/ছাত্রী এই সুযোগ নিয়ে থাকে।
সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ও সহযোগিতায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় আছেঃ
শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুযোগ-সুবিধাঃ
Center for the Rehabilitation of the Paralyzed – CRP চাঁপাইন, সাভার ও মিরপুর, সেকশন ১৪, ঢাকা
সাভারে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং এর সাথে উপ-কেন্দ্রের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
এখানকার সেবার ধরন নিম্নরূপ-
ফিজিও-থেরাপি, অকুপেশনাল-থেরাপি, মেডিক্যাল সেবা, সহায়ক উপকরণ, প্যাথলোজিক্যাল, রেডিওলজি, ডায়াগনষ্টিক সার্ভিস, বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রম, শিশু বিভাগ ও প্রশিক্ষণ।
আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সাবসিডি বা অনুদান প্রদান করা হয়। বিভিন্ন জেলায় তাঁদের ১৩টি সিবিআর সেন্টার রয়েছে।
Bangladesh Protibandhi Kallyan Somity (BPKS), BPKS Complex, Dakkhinkhan, Uttara, Dhaka – 1230
বিপিকেএস জাতীয় পর্যায়ে কর্মরত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের একটি স্ব-সংগঠন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি, ক্ষমতায়ন এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠিত করে স্ব-সংগঠন তৈরিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখছে, যার লক্ষ্য উন্নয়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্ব-উদ্যোগী করা। এই সংস্থা সকল ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক সেবা তথা-ফিজিও-থেরাপি, অকুপেশনাল-থেরাপি, অরিয়েন্টেশন মবিলিটি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান কার্যক্রম, থেরাপি ক্যাম্প, শিক্ষা উপকরণ, রেফারেল সার্ভিস, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও সহায়ক উপকরণ প্রদান করে থাকে।
মাঠ পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সরাসরি থেরাপি সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে সংস্থা নিয়মিতভাবে ৩ মাসব্যাপী ‘‘থেরাপি প্রোভাইডার প্রশিক্ষণ’’ প্রদান করে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ৩ মাসব্যাপী ‘‘কম্পিউটার প্রশিক্ষণ’’ প্রদান করা হয়। উভয় ধরনের প্রশিক্ষণে বিনামূল্যে থাকা-খাওয়াসহ সমুদয় প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা উপকরণ সংস্থা সরবরাহ করে থাকে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদা, গরীব অসহায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থা বিবেচনা করে সংস্থা একটি সহায়ক উপকরণ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এই কেন্দ্র থেকে সংস্থার নিজস্ব প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিবন্ধী বান্ধব সংস্থার চাহিদাও পূরণ করা হয়ে থাকে। কেন্দ্রের উৎপাদিত সহায়ক উপকরণের মধ্যে রয়েছে- হুইল-চেয়ার, লো-ট্রলি, হাই-ট্রলি, ট্রাই-সাইকেল, এলবোক্র্যাচ, ক্র্যাচ, সাদাছড়ি।
Impact Foundation Bangladesh-IFB, বাড়ী নং ১৯, রোড নং ৪ গুলশান-১ ঢাকা
এই সংস্থা জীবন তরী নামে একটি ভাসমান হাসপাতালের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করে থাকে। এই হাসপাতাল নদী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তিন মাস করে অবস্থান করে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। হাসপাতালে বহিঃবিভাগ ও অভ্যন্তরীণ বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ অঞ্চলের চুয়াডাঙ্গা জেলায় রয়েছে ইমপ্যাক্ট হাসপাতাল ও সমাজ ভিত্তিক কার্যক্রম। সংস্থার সেবার ধরন সহায়ক উপকরণ প্রদান, আর্টিফিসিয়াল লিম্ব, ফিজিও-থেরাপি ও সার্জারি। এই সংস্থা মূলত প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য কাজ করে।
Danish Bangladesh Leprosy Mission-DBLM, নটখানা, নীলফামারী
এটি একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা। বাংলাদেশে কুষ্ঠ রোগীদের নিয়ে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে অন্যান্য শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরও বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে। সেবার ধরন-সার্জিক্যাল সেবা, সহায়ক উপকরণ, ফিজিও-থেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি ও কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন।
পঙ্গু শিশু নিকেতন, পুটিয়া, রাজশাহী: এটি একটি স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। তারা প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়া, শিক্ষা, ফিজিও-থেরাপি, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সামাজিক পুনর্বাসন করে থাকে।
Memorial Christian Hospital, চকোরিয়া, কক্সবাজার: এটি একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। তারা শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে। সেবার ধরন-সার্জিক্যাল সেবা, ফিজিও-থেরাপি, কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন, সহায়ক উপকরণ প্রদান ও সাধারণ চিকিৎসা সেবা।
BRAC Limb and Brace Fitting Center, ২২/৭ মিরপুর রোড, ঢাকা, ১২০৭: এটি একটি জাতীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। তাদের সেবার ধরন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কৃত্রিম পা সংযোজন ও প্রশিক্ষণ প্রদান। সহায়ক উপকরণ প্রদান, ফিজিও-থেরাপি সেবা প্রদান করে থাকে। প্রতিবন্ধী শিশুদের সাধারণ শিক্ষার সাথে সম্পৃক্তকরণের ক্ষেত্রে ব্র্যাক এক যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে। তাদের ৩৫ হাজার নন ফরমাল প্রাইমারী স্কুলের প্রত্যেকটিতে ন্যূনতম ২ জন করে প্রতিবন্ধী শিশু অন্তর্ভুক্তির অফিসিয়াল নির্দেশনা আছে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুযোগ-সুবিধা
Bangladesh National Society for the Blind- BNSB, মিরপুর – ১, ঢাকা – ১২১৬: এটি একটি জাতীয় সংস্থা। এদের সেবার ধরন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চক্ষু পরীক্ষা, অপারেশন, ঔষধ প্রদান, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, অপটিক্যাল ও নন-অপটিক্যাল সেবা, শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও পুনর্বাসন সেবা প্রদান করে।
Baptist Sangha School for Blind Girls-BSSBG, ৭৭ সেনপাড়া, মিরপুর – ১০, ঢাকা ১২১৬: এটি একটি জাতীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। এখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়েদের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারীদের বিনামূল্যে সকল ধরনের শিক্ষা সহায়তাসহ, চক্ষু পরীক্ষা এবং এর পরিচর্যা ও অপারেশন সহায়তা প্রদান করে থাকে।
Sight Saver International –SSI, বাড়ী নং ১১, রোড নং ১৪, গুলশান সাউথ এভিনিউ, গুলশান ১, ঢাকা- ১২১২: এটি একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা। এই সংস্থা সরকার ও স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সাথে পার্টনারশীপের মাধ্যমে বর্তমানে দেশের ২৬টি জেলায় চক্ষু সেবা প্রদান করে আসছে। চক্ষু সেবাসমূহের মধ্যে রয়েছে- চক্ষু রোগীদের সাধারণ চিকিৎসা, কম দৃষ্টি ও অতিমাত্রায় ক্ষীণ দৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তিদের চশমা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা করা। তারা ছানি রোগীদের অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে অপারেশন করে থাকে।
Vocational Training Center for the Blind -VTCB, ৪নং মেইন রোড, মিরপুর – ১, ঢাকা ১২১৬: এই সংস্থা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাবলম্বী নাগরিকরূপে গড়ে তুলছে। সংস্থার সেবার ধরণ নিম্নরূপঃ প্রশিক্ষণ তথা চক, পেন্সিল তৈরী, তাঁত পরিচালনা, বই খাতা-পত্র বাঁধাই, কম্পিউটার পরিচালনা, পিএবিএক্স লাইন পরিচালনা, মোমবাতি তৈরী, দর্জি বিজ্ঞান প্রশিক্ষণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের থেরাপিউটিক ম্যাসাজ এর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
Jakir White Cane,Mirpur- 1, Dhaka: এই সংস্থাটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত। সংস্থাটি সাদাছড়ি উৎপাদন ছাড়াও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা উপকরণ তথা- স্টাইলাস ফ্রেম, ট্রেইলর ফ্রেম, এ্যাবাকাস উৎপাদন ও বিপণন করে থাকে।
শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুযোগ-সুবিধা
Society for Education and Care of Hearing Impaired Children of Bangladesh –HICARE, বাড়ী ৬৯ এফ/রোড ৬/এ ধানমন্ডি, ঢাকা:
- এই প্রতিষ্ঠান শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শ্রবণ মাত্রা নির্ণয় এবং ক্ষেত্র বিশেষে যথাযোগ্য শ্রবণ যন্ত্র প্রদান করে।
- শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্কুলের শিক্ষকদের জন্য ৩ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে।
- শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের মুখে কথা বলা ও ভাষা শিক্ষা দিয়ে দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আত্মীয়করণের যোগ্য করে গড়ে তোলে। ঢাকা ছাড়া সরাসরি হাই-কেয়ারের পরিচালনায় বিভিন্ন জেলায় ৯টি স্কুল রয়েছে।
Society for Assistance to Hearing Impaired Children – SAHIC, মহাখালী, ঢাকা:
শৈশবে শ্রবণ সমস্যা শনাক্ত করার মাধ্যমে শ্রবণ প্রতিন্ধিতা প্রতিরোধ, হেয়ারিং এ্যাসেসমেন্ট, শ্রবণ শক্তি পুনরুদ্ধার, স্পীচ-থেরাপি, নাক-কান-গলার সমস্যার প্রয়োজনীয় শল্য চিকিৎসা ও শ্রবণ যন্ত্র প্রদান করে থাকে।
World Concern -WC, ১০/৯ ইকবাল রোড, মোহাম্মাদপুর, ঢাকা ১২০৭:
ওয়াল্ড কনর্সান প্রকল্প একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা, যা বাংলাদেশের ২-১৫ বৎসর বয়সের যারা কানে না শুনার জন্য কথা বলতে পারে না, তাদের ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ লেখাপড়া শিক্ষা দিয়ে সাধারণ স্কুলে ভর্তি করার উপযোগী করে সমাজে সম্পৃক্তকরণ এবং যে কোনো বয়সের লোক যারা শ্রবণ সমস্যাগ্রস্ত তাদের শ্রবণ সমস্যার কারণ ও মাত্রা নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে প্রতিবন্ধিতার হাত থেকে রক্ষা করাই হেয়ারিং এ প্রকল্পের লক্ষ্য। সেবার ধরন-শ্রবণ সমস্যা পরীক্ষা, স্পীচ-থেরাপি এবং শ্রবণ যন্ত্রের সাহায্যে ভাষা শিক্ষণে সহায়তা।
The Salvation Army Bangladesh, সাভার, ঢাকা ও যশোর:
এটি একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা। বাংলাদেশে শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের শ্রবণ সমস্যা পরীক্ষা, মাত্রা নির্ণয় ও শ্রবণ যন্ত্র প্রদানের মাধ্যমে শিশুদের কানে শোনার ও কথা বলার উন্নতি করে থাকে। তাদের স্কুলে বাক-শ্রবণ শিশু ছাড়াও গরীব অসহায় শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ, স্বাস্থ্য সেবা ও শ্রবণ সহযোগী সামগ্রী প্রদান করা হয়। এখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছেলেদের জন্য সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থাও চালু আছে।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুযোগ-সুবিধাঃ
Society for the Welfare of the Intellectually Disabled – SWID, ৪/এ ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকা:
এই সংস্থা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে বিশেষ শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা করে। তাদের কাজের ধরনের মধ্যে রয়েছে- বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ, কাউন্সেলিং, স্পীচ থেরাপি, ফিজিও থেরাপি ও বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রম। ঢাকা শহরে ৬টিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের ৪৪টি শাখা স্কুলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
Social Education for Intellectually Disabled – SEID বাড়ী নং ১/১, ব্লক- ই, লালমাটিয়া, ঢাকা- ১২০৭:
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এ্যাসেসমেন্ট করে ও সে অনুযায়ী সেবা প্রদান করে।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষ স্কুলে লেখাপড়া শিখানো হয় এবং অভিভাবকদের সাথে কাউন্সেলিং করা হয়।
কর্ম জাল (Net working)
দেশে প্রতিবন্ধিতা নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠন সমূহের রয়েছে জাতীয় পর্যায়ে কর্মজাল বা Net working; যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে-
National Allaince of Disabled People’s Organization-NADPO:
ন্যাডপো মুলত: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মরত স্ব-সংগঠন সমূহের একটি কর্মজাল প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাধামুক্ত চলাচল নিশ্চিত করা, সরকারি উচ্চ পর্যায়ে প্রতিবন্ধিতা বিষয়টি উপস্থাপনা ও জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করে থাকেন। এছাড়া জনপ্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকারের ব্যাপারে মত বিনিময় করে থাকেন।
লিখেছেন: আজমাল হোসেন মামুন
আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সরকারি কর্মব্চারী (অফিস সহায়ক) , ১০ বছর যাবৎ ২০ গ্রেড পদে কর্মরত আছি। পদোন্নতি জন্য সরকারি পরিপত্র আছে কি? দয়া করে আমাকপ দিলে উপকৃত হবে।
কোন দপ্তরে চাকরি করেন?
আমি রোড এক্সিডেন্ট করে সেনাবাহিনী হতে সৈনিক পদে(মেডিঃ বোঃ আঃ)অবসরে আসি।এখন সার্বক্ষণিক হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়।আমি কি সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে পারি জানাবেন প্লিজ।
আমি রোড এক্সিডেন্ট করে সেনাবাহিনী হতে সৈনিক পদে(মেডিঃ বোঃ আঃ)অবসরে আসি।এখন সার্বক্ষণিক হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়।আমি কি সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে পারি জানাবেন প্লিজ।
না। https://bdservicerules.info/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a7%80-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be/
https://bdservicerules.info/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a7%80-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be/
আমি খাদ্য অধিদপ্তরের অধীনস্থ ” খাদ্য পরিদর্শক”। আমি একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী। খাদ্য অধিদপ্তরের বদলি নীতিমালা অনুযায়ী খাদ্য গুদাম সমূহে খাদ্য পরিদর্শকগনকে গুদাম ইনচার্জ হিসেবে নিজ জেলায় বদলি বা পদায়ন করা যাবে না মর্মে বিধান রয়েছে,
প্রতিবন্ধী আইন, বিধিমালা,নীতিমালা অথবা
কোন পরিপত্রের আলোকে কি একজন প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি হিসেবে নিজ জেলায় চাকুরি করার সুযোগ পাবো?
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও ২য় ও ১ম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে জেলা নির্দিষ্টকরণ প্রযোজ্য নয়। তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে নিজ জেলায় পোস্টিং নিতেই পারেন। এজন্য নিয়োগ কারী কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করুন।