সঞ্চয়পত্র ক্রয় জনসাধারণের জন্য একটি উন্মুক্ত বিনিয়োগ মাধ্যম। বাংলাদেশের যে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারেন। তবে ঠিক কত টাকা থেকে সঞ্চয়পত্র শুধু হয় এটি অনেকেই জানে না।
অনেকেই ভাবেন যে, ১ লক্ষ টাকার নিচের হয়তো সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায় না। আজ আমি আপনাদের জানাবো যে, ১০ টাকায়ও সঞ্চয়পত্র কেনা যায়।
পরিবার সঞ্চয়পত্র-এটি মহিলা, প্রতিবন্ধী ও ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের আর্থিক নিরাপত্তা দিতে ২০০৯ সালে চালু করা হয়। মাত্র ১০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র দেশের নাগরিকদের জন্য চালু রয়েছে। এছাড়াও আপনি ২০,০০০ টাকা; ৫০,০০০ টাকা; ১,০০,০০০ টাকা; ২,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ টাকা এবং ১০,০০,০০০ টাকা মূল্যের পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন। দেশের জেলা সঞ্চয়পত্র ব্যুরো, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক শাখাসমূহ, বাণিজ্যিকব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে ক্রয় ও ভাঙ্গানো বা নগদায়ন করা যায়। পরিবার সঞ্চয়পত্র সাধারণত ৫ (পাঁচ) বছর কিনতে হয়। তবে আপনার প্রয়োজনে যে কোন সময় ভাঙ্গাতে বা নগদায়ন করতে পারবেন।
৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র-জি এটি পুরুষদের জন্য চালু করা হয়েছে। পরিবার সঞ্চয়পত্র ধারী ৪৫ লক্ষ টাকার অধিক সঞ্চয়পত্র কিনতে চাইলে একজন মহিলাও ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারে। পরিবার সঞ্চয়পত্রে মাসিক মুনাফা দিলেও ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র নাম শুনেই বুঝা যায় যে, এটি ৩ মাস পর পর মুনাফা প্রদান করে থাকে। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ২০০৪ সালে চালু হয়। সর্বনিম্ন ১,০০,০০০ টাকা মূল্যমানে ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায়। এছাড়াও উর্ধ্বমুখী ২,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ ও ১০,০০,০০০ টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্রও ক্রয় করা যায়। তবে একক বিনিয়োগ সীমা ৩০ লক্ষ টাকা। এটি জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক শাখাসমূহ বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে ক্রয় ও নগদায়ন করা যায়। তিন বছর মেয়াদে এটি ক্রয় করা হয় তবে চাইলে যে কোন সময় ভাঙ্গানো যায়। সঞ্চয়পত্র নিয়ে আদি-অন্ত ২০২২
৫-বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র– এটি বর্তমানে ব্যাংকগুলো বিক্রি করা হয়। না। জেলা সঞ্চয় ব্যুরো বা জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো অফিস হতে বর্তমানে এটি ক্রয় করা যায়। বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র পাঁচ বছর মেয়াদী হয়ে থাকে এবং এটি ১৯৭৭ সালে চালু হয়। হ্যাঁ এটি সর্বনিম্ন ১০ টাকা মূল্যেরও পাওয়া যায়। এছাড়াও ৫০ টাকা; ১০০ টাকা; ৫০০ টাকা; ১,০০০ টাকা; ৫,০০০ টাকা; ১০,০০০ টাকা; ২৫,০০০ টাকা; ৫০,০০০ টাকা; ১,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ টাকা; ১০,০০,০০০ টাকা; ২৫,০০,০০০ টাকা মূল্যমানের পাওয়া যায়। ৩০ লক্ষ টাকা (একক নামে) এবং যৌথ নামে ৬০ লক্ষ টাকার বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায়।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র-সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর গ্রহণের পর অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের উত্তম মাধ্যম হচ্ছে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে সর্বোচ্চ ১১.৭৬% পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যায়। এটি ২০০৪ সালে পেনশনার বা অবসর প্রাপ্তদের জন্য চালু করা হয়। পেনশনারগণ সর্বনিম্ন ৫০,০০০ টাকা মূল্যে এটি ক্রয় করতে পারেন। এছাড়াও ১,০০,০০০ টাকা; ২,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ ও ১০,০০,০০০ টাকা মূল্যের পেনশনার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ এতে করা যায় তবে আনুতোষিক, লাম্পগ্র্যান্ট, জিপিএফ সম্মিলিত অর্থের অতিরিক্ত নয়। পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক শাখাসমূহ, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘরে ষ্বশরীরে যেতে হবে। এটি সাধারণত ৫ (পাঁচ) বছর মেয়াদী হয়ে থাকে।
শুনলাম মুনাফার হার নাকি কমিয়েছে? কত টাকায় কত মুনাফা?
সঞ্চয়পত্র ধরণ | ১৫ লক্ষ পর্যন্ত | ১৫ লক্ষ ১ টাকা হতে ৩০ লক্ষ পর্যন্ত | ৩০ লক্ষ ১ টাকা হতে তদুর্ধ্ব পর্যন্ত |
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র-৫ বছর মেয়াদী | ১১.২৮% | ১১.৩০% | ৯.৩০% |
৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র-৩ বছর মেয়াদী | ১১.৫২% | ১১.৫০% | ৯.৫০% |
পরিবার সঞ্চয়পত্র-৫ বছর মেয়াদী | ১১.০৪% | ১০.০০% | ৯.০০% |
পেনশনার সঞ্চয়পত্র-৫ বছর মেয়াদী | ১১.৭৬% | ১০.৭৫% | ৯.৭৫% |
নোট: বিস্তারিত জানতে প্রজ্ঞাপন দেখুন: ডাউনলোড