আর্থিক ক্ষমতা পুনঃনির্ধারণ ২০২৫ । পণ্য/যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয়ের ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে ১৫ লক্ষ কে ২ কোটিতে উন্নীত?
গণখাতে কর্পোরেশন/স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/সরকারি বা যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানী (অর্থাৎ যে সকল কোম্পানীতে সরকারের শেয়ার আছে বা মালিকানা আছে এরূপ)’ সমূহের পূর্তকাজ সম্পাদন/পণ্য ক্রয়/পরামর্শক সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত চুক্তি অনুমোদন/সম্পাদন বিষয়ে আর্থিক ক্ষমতা পুনঃনির্ধারণ প্রসংগে। (খ) সংবিধিবন্ধ সংস্থার স্ব-অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনে আর্থিক ক্ষমতা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে-আর্থিক ক্ষমতা পুনঃনির্ধারণ ২০২৫
সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষমতা কি? সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষমতা বলতে বোঝায় একটি সরকারের অর্থ সংগ্রহ এবং তা বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের ক্ষমতা ও অধিকার। এটি একটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন এবং সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি সরকার প্রতি বছর দেশের বাজেট প্রণয়ন করে। এই বাজেটে কোন খাত থেকে কত আয় হবে (যেমন – কর, শুল্ক) এবং কোন খাতে কত খরচ হবে (যেমন – শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন) তার বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকে। এই বাজেট জাতীয় সংসদের মতো আইন প্রণয়নকারী সংস্থার মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হয়। শুধুমাত্র অর্থ মন্ত্রণালয় বা অর্থ বিভাগই সব ধরনের ব্যয় অনুমোদন করে না। বরং, প্রশাসনিক কাজ দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করার জন্য অর্থ সংক্রান্ত কিছু ক্ষমতা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, এবং সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এটিই আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ। এর ফলে, ছোটখাটো বা দৈনন্দিন ব্যয় অনুমোদনের জন্য বারবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয় না, যা প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালা ২০১৫ তে কি আছে? আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালা, ২০১৫ তে সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষমতা এবং বিভিন্ন পর্যায়ে তা কিভাবে Wস্ত করা হবে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। এই নীতিমালায়, অনুন্নয়ন (পরিচালন) এবং উন্নয়ন বাজেটের আওতাভুক্ত বিভিন্ন প্রকার ব্যয়ের ক্ষেত্রে ক্ষমতা বিভাজন এবং কোন দপ্তর বা পর্যায়ে কতটুকু আর্থিক ক্ষমতা থাকবে, তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, এবং মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোর জন্য আর্থিক ক্ষমতা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই নীতিমালায় অনুন্নয়ন (নন-ডেভেলপমেন্ট) এবং উন্নয়ন (ডেভেলপমেন্ট) উভয় প্রকার বাজেটের জন্য আর্থিক ক্ষমতা সম্পর্কিত বিধিবিধান আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমান একক বাজেট পদ্ধতির কারণে, পূর্বেকার আর্থিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে কর্মসূচি বাস্তবায়নে অসুবিধা হতে পারে, তাই এই নীতিমালায় তা বিবেচনা করা হয়েছে। সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিবিধান এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন, তাও এই নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালা ২০২৫ এ কি পরিবর্তন আনা হয়েছে? ২০২৫ সালের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালায় কী পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা নির্দিষ্টভাবে জানতে, আপনাকে সেই নীতিমালার বিস্তারিত দেখতে হবে। তবে, সাধারণভাবে, আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালায় ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ, আর্থিক ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, সেই সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের আর্থিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য পরিবর্তন আনা হতে পারে।
যদি আপনি কোনো নির্দিষ্ট পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে অনুগ্রহ করে সেই পরিবর্তনটি উল্লেখ করুন। আর্থিক ক্ষমতা বিভিন্ন পর্যায়ে বিকেন্দ্রীকরণ করা হতে পারে, যাতে মাঠ পর্যায়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এবং কাজের গতি বাড়ে। আর্থিক ক্ষমতা অর্পণের সাথে সাথে কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়, যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না হয়। আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য কিছু নিয়মকানুন যুক্ত করা হতে পারে।কিছু ক্ষেত্রে, নতুন নিয়মকানুন যুক্ত করে আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও কার্যকর করার চেষ্টা করা হতে পারে।
আর্থিক ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ২০২৫ । উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ের অফিসগুলোর জন্য কি পরিমাণ আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, তা এই নীতিমালায় বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসের জন্য ক্ষমতা উদাহরণস্বরূপ, এই নীতিমালায় মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর প্রধান এবং প্রকল্প পরিচালকদের জন্য আর্থিক ক্ষমতা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, কোন কোন ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়/বিভাগকে প্রস্তাব প্রেরণ করতে হবে, তার একটি তালিকাও এতে প্রদান করা হয়েছে। এই নীতিমালা সরকারি কর্মকর্তাদের আর্থিক ক্ষমতা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেয় এবং তাদের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করে।
Caption: Financial Power 2015 । Financial Power Correction 2025
সরকারি ক্রয় বা ব্যয় ক্ষমতা পুন:নির্ধারণ ২০২৫ । মন্ত্রণালয় ও উপজেলা অফিসে ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি?
- পূর্তকাজ (নির্মাণ/স্থাপনা) সম্পদানের ক্ষেত্রে- ৪ (চার) কোটি টাকা পর্যন্ত
- পণ্য/যন্ত্রপাতি/মালামাল/ সরঞ্জামাদি সংগ্রহের ক্ষেত্রেও- ২ (দুই) কোটি টাকা পর্যন্ত
- পরামর্শক সেবা (কনসালটেন্সি সার্ভিসেস)- (গ্রহণ বরাদ্দ সাপেক্ষে পূর্ণ ক্ষমতা)
উপজেলা অফিস পণ্য বা যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কত টাকা ব্যয় করতে পারবে?
উপজেলা অফিসের পণ্য বা যন্ত্রপাতি সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট একটি সর্বোচ্চ সীমা নেই, তবে এটি বিভিন্ন সরকারি বিধি ও নীতিমালার অধীনে হয়ে থাকে। সাধারণত, এই ধরনের কেনাকাটার জন্য উন্মুক্ত দরপত্র (Open Tendering Method) অথবা সীমিত দরপত্র (Limited Tendering Method) ব্যবহার করা হয়। কোন পদ্ধতিতে কেনাকাটা করা হবে তা নির্ভর করে ক্রয়ের পরিমাণ, প্রকৃতির উপর এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বিধি-বিধানের উপর। সরকারি ক্রয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকে, যা অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। এই গাইডে বিভিন্ন ধরণের ক্রয়ের জন্য পদ্ধতি ও সীমা উল্লেখ করা থাকে। ক্রয়ের পরিমাণ যত বেশি হবে, দরপত্রের মাধ্যমে স্বচ্ছতা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা তত বেশি। ছোটখাটো কেনাকাটার জন্য সীমিত দরপত্র পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে বড় অঙ্কের কেনাকাটার জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। কিছু বিশেষ পণ্য বা যন্ত্রপাতির জন্য বিশেষ পদ্ধতির প্রয়োজন হতে পারে, যা সরকারি ক্রয় নীতিমালায় উল্লেখ থাকে। যদি কেনাকাটা কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বা বিশেষ তহবিল থেকে করা হয়, তাহলে সেই প্রকল্পের নিয়মকানুন ও পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে, একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং আগ্রহী সরবরাহকারীরা দর দাখিল করে। এই পদ্ধতিতে, কিছু নির্বাচিত সরবরাহকারীকে দরপত্র দাখিলের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই পদ্ধতি সাধারণত কম মূল্যবান বা বিশেষ ধরণের পণ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়।
২০১৫ সালের অন্যান্য ক্রয়, মেরামত, সেবা ক্ষমতা একই থাকবে? হ্যাঁ। গণখাতে কর্পোরেশন/স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত/সরকারি বা যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানী (অর্থাৎ যে সকল কোম্পানীতে সরকারের শেয়ার আছে বা মালিকানা আছে এরূপ)’ / সংবিধিবদ্ধ (নিজস্ব অর্থায়নের ক্ষেত্রে) সংস্থাসমূহের পূর্তকাজ ও ভৌত সেবা অনুমোদন ১০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে, পণ্য/মালামাল/যন্ত্রপাতি/সরঞ্জামাদি ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা (পরামর্শক গ্রহণের ক্ষেত্রে ২০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে সকল ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে হবে। মন্ত্রণালয়/বিভাগ কিংবা সংস্থা/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কলাম ৫ অথবা ৬ অনুসরণ করতে হবে। জাতীয় বেতন স্কেলের পঞ্চম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তাগণ এ আর্থিক ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন। পঞ্চম গ্রেডের নিম্নের আঞ্চলিক অফিস/ইউনিট প্রধানগণকে এ আর্থিক সীমার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য তাদের নিয়ন্ত্রণকারী পঞ্চম বা তদূর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তাদের নিকট উপস্থাপন করতে হবে। সূত্র (i) ও (ii) এ উল্লিখিত পরিপত্রে বর্ণিত অন্যান্য আর্থিক ক্ষমতা এবং বিষয়াবলি অপরিবর্তিত থাকবে।
নগদ ক্রয় ২৫ হাজার টাকার বেশি নয় কোন বিধিতে উল্লেখ আছে?
হ্যাঁ, সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে নগদ ক্রয়ের সীমা ২৫,০০০ টাকা বা এর বেশি নয়, এই নিয়মটি আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালা, ২০২০-এ উল্লেখ আছে। | এই নীতিমালার আওতায়, বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। এর মধ্যে, “সরাসরি নগদ ক্রয় (Direct Cash Purchase)” পদ্ধতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। | আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালা, ২০২০ এর কলাম ৭১ এর (গ) অনুসারে: সরাসরি নগদ ক্রয় (Cash Purchase): একক ক্ষেত্রে ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকা পর্যন্ত পণ্য বা সেবা ক্রয় করা যাবে। তবে, এর একটি বার্ষিক সীমাও আছে, যা সাধারণত সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়। |
এই নিয়মটি বিভিন্ন স্তরের সরকারি অফিসের জন্য প্রযোজ্য, যার মধ্যে উপজেলা পর্যায়ের অফিস প্রধানরাও অন্তর্ভুক্ত। এই পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো, ছোটখাটো ও জরুরি কেনাকাটার জন্য দীর্ঘ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা। | সুতরাং, আপনার প্রশ্নের উত্তর হলো, “আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ নীতিমালা, ২০২০” এর বিধান অনুযায়ী নগদ ক্রয়ের সীমা ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। | |