আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব সরকারি কর্মকর্তা বনাম কর্মচারীদের মধ্যে যে বৈষম্য বিরাজমান তা নিয়ে। ১৯৭৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পে স্কেল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ১৯৭৩ থেকে বর্তমান পে স্কেল পর্যন্ত গ্রেড ০১-২০ পর্যন্ত প্রতিটি পে স্কেলে বৈষম্য বাড়তে বাড়তে চরম পর্যায়ে এসে পৌছেছে-সরকারি বেতন বৈষম্যে ঠাই নাই ২০২৪
পে স্কেল ২০১৫ তে কি বৈষম্য রয়েছে?
২০১৫ সালের পে স্কেলে সুক্ষ্ন কারচুপির মাধ্যমে ১১-২০তম গ্রেডের সকল কর্মচারীদের ঠকানো হয়েছে। কর্মকর্তাদের বেতন ১৬০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৮০০০ টাকা করা হয়েছে। যেখানে কর্মচারীদের বেতন ৮২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২৫০০ টাকা করা হয়েছে। ১০ম-১ম গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে ৬২০০০ টাকা। অপর দিকে ১১তম-২০তম গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪২৫০ টাকা। বাংলাদেশসহ ৫টি দেশের পে-স্কেলের তুলনামূলক আলোচনা।
সরকারি চাকরি সোনার হরিণ? আমরা যারা সরকারি চাকরি করি তাদের মধ্যে ১০-২০ তম গ্রেডে কর্মচারীগণ কোন রকম চিন্তা ভাবনা ছাড়াই চাকরি করি। বেতন বৈষম্য দেখলে আপনি আতকে উঠবেন। সৈরাচারি বেতন ব্যবস্থা আমলা তান্ত্রিক জটিলতার কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য দেশের সাথে একটি তুলনামূলক আলোচনা করবো। এ সোনার হরিণ যারা আকড়ে ধরে আছে তারা এখন অসহায়।
বড় বৈষম্যটা কোথায়? শতাংশে দেখলে বুঝা যায় বৈষম্যটা। কর্মকর্তাদের জন্য ১২৫০০ থেকে ৭৮ হাজার পর্যন্ত শুধুমাত্র মূল বেতনে ১০তম -১ম গ্রেডে প্রতি ধাপে প্রায় ২০.৪ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল বেতনে ২০.০৪% বেতন প্রতি প্রমোশন এ বৃদ্ধি পায়। গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি ২০% এর অধিক হওয়ায় বার্ষিক ৫% ইনক্রিমেন্ট বা যে কোন প্রকার ফিক্সেশনের তাদের আর্থিক সুবিধা বেশি হয়ে থাকে ফলে তারা প্রমোশনে অনুপ্রাণিত হন। নবম পে স্কেলের সর্বশেষ খবর । কবে দিবে পে স্কেল?
কর্মচারীদের জন্য ৮২৫০ থেকে ১২০০০ হাজার পর্যন্ত শুধুমাত্র মূল বেতনে ১১তম -২০তম গ্রেডে প্রতি ধাপে প্রায় গড়ে ৪.২৮ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল বেতনে ৪.২৮% বেতন প্রতি প্রমোশন এ বৃদ্ধি পায়। গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি ৪.২৮% এর অধিক হওয়ায় বার্ষিক ৫% ইনক্রিমেন্ট বা যে কোন প্রকার ফিক্সেশনের তাদের আর্থিক সুবিধা খুবই নগন্য ফলে তারা প্রমোশনে অনুপ্রাণিত হন না বরং বদলিজনিত বিরম্বনায় পড়ে।
এ সংক্রান্ত বৈষম্যের তালিকাটির JPG ফরমেট সংগ্রহে রাখতে পারেন: ডাউনলোড
মূল্যস্ফিতির সাথে বেতন বৃদ্ধি সমন্বয় হচ্ছে না কেন?
দেশের বাজারে পন্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। তাছাড়া রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমদানি রপ্তানিতে বিশ্বব বাজার সহ আমাদের দেশেও ভাটা পড়েছে। চলতি অর্থ বছরেও দেশের বাজারে মূল্যস্ফিতি ১০.১৮ ছাড়িয়েছে। প্রতিবছর ৫% হারে সরকারি কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়। সে হিসাবে দেখা যাবে যে, প্রতি বছর যে হারে মূল্যস্ফিতি বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় সেই হারে বেতন বৃদ্ধি হয়না। তাই দ্রব্য মূল্যের সাথে বেতন ভাতাদি এখন সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাছাড়া চলতি বছর দ্রব্যমূল্য ১৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পে স্কেল জারি হওয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ১১-২০ গ্রেড ভূক্ত কর্মচারীগণ মাস চালাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে, কেউ কেউ ঋণের পথ বেছে নিচ্ছে ফলে ধার দেনার বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। অপর দিকে যাদের সামান্য সঞ্চয় ছিল তারা ইতোমধ্যে তা ব্যয় করে বসেছে। মহার্ঘ ভাতা ২০২৪ । এটি পে স্কেল অন্তবর্তীকালীন সময়ে প্রদান করা হয়
সরকার কি ৯ম পে স্কেল দিবে?
বর্তমান অর্থনীতির নাজুক পরিস্থিতিতে জনগণের কথা চিন্তা করে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য কোন আর্থিক সুবিধা ঘোষণা করবেন না বলে সাফ জানিয়েদিয়েছেন বিগত সরকার। সরকারি কর্মচারীগণ আন্দোলন বেগবান না করতে পারলে এ বছরও কোন পে স্কেল বা মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা হচ্ছে না এটি স্পষ্ট করেছিল। বর্তমান সরকারের কাছে দাবী দাওয়া পেশ করা হয়েছে কিন্তু এখনও সরকার কোন মন্তব্য করেনি। রাস্তায় দাবী নিয়ে না আসার অনুরোধ করা হলে প্রধান উপদেষ্টার নিকটও দাবির খতিয়ান জমা দেয়া গয়।
এর প্রতিকার কি নেই কোন?
সবাই কাজ বন্ধ করে বসে থাক ,বৈষম্য দূর হবে
চেষ্টা যতটুকু অব্যাহত আছে তা হেলাফেলা করার মত নয়।