সরকারি কর্মচারীগণ দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে এবং দ্রব্যমূল্যের চাপে তারা নিত্যসামগ্রীর বাজারে তারা মূল্যস্ফিতিতে ওষ্ঠাগত -সম্প্রতি মহার্ঘ ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত হতে সরকার সরে এসেছে এমন সংবাদ পত্রিকা বরাতে পেয়ে জেলায় জেলায় মানববন্ধনের ডাক দেয়া হয়েছে- জেলা মানববন্ধন ২০২৫
সরকার কেন মহার্ঘ ভাতা থেকে সরে আসলো? সমকালের শিরোনাম ‘সরকারি চাকুরেরা আপাতত পাচ্ছেন না মহার্ঘ ভাতা’। খবরটিতে বলা হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপাতত পাচ্ছেন না মহার্ঘ ভাতা। জানুয়ারি থেকেই এ ভাতা কার্যকরের যে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, অর্থনীতির বর্তমান টালমাটাল পরিস্থিতিতে সেখান থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মহার্ঘ ভাতা বাস্তবায়ন হলে রাশ টানা যেত না মূল্যস্ফীতির, সমাজে দেখা দিত বৈষম্য– এমন শঙ্কায় সব মহল থেকে সরকারের এ উদ্যোগ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ পটভূমিতে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে মহার্ঘ ভাতা থেকে কিছুটা পিছিয়েছে সরকার। তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে নতুন অর্থবছরের বাজেটে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। আজ ২৮/০১/২০২৫ তারিখ অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, মহার্ঘ ভাতার প্রদানের ঘোষণা তো সরকার দেয়নি। আমরা হ্যাঁ বা না কিছুই বলিনি।
মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্ত বাতিলে কর্মচারীরা কি বলছে? শনিবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিতে এ হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার নিশ্চয়তা না পেলে ৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম। প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা অবিলম্বে বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে স্কেল দেওয়ার জন্য পে কমিশন গঠনের দাবি জানান। একই সঙ্গে যে সকল কর্মচারী বেতন স্কেলের শেষ ধাপে চলে গেছেন, তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি চলমান রাখার আহ্বান জানানো হয়।
শুধু বেতন নয় আর কি? একই ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও নতুন বেতন স্কেলে ৯ম গ্রেডের নন-ক্যাডার ও ক্যাডার কর্মচারীদের প্রবেশ পদে যথাক্রমে ৯ম ও ৮ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণে বড় বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যহীন সম্মানজনক বেতন স্কেল নীতির কারণে ১ম শ্রেণি, ২য় শ্রেণি, ৩য় শ্রেণি ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পরিচয় প্রথা বিলোপ করে গ্রেডভিত্তিক কর্মচারী পরিচয়দানের প্রথা প্রবর্তন করা হলেও বৈষম্যহীন সম্মানজনক বেতন স্কেল প্রদানের নীতির প্রতিফলন ঘটেনি।
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন, নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারি কর্মচারিদের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান সহ ৭ দফা দাবিতে ।
আমরা প্রস্তুত, আগামীকাল ঈশ্বরদী উপজেলার মধ্যে এবং এর আশেপাশে যারা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মরত আছেন সকলকে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে দাবি জোরালো করার আহ্বান জানাই,,
সরকারি কর্মচারীদের ৭ দফা দাবী কি কি? । বর্তমানে বাজার মূল্যের সাথে বর্তমান বেতন ভাতা কোনভাবে খাপ খাওয়ানো যাচ্ছে না
- পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করত হবে।
- ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
- সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।
- টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
- আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
- বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
পে স্কেল ঘোষণা কেন জরুরি?
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুখ্য সমন্বয় বলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় বৈষম্য মেনে নেয়া যায় না। দ্রব্য-মূল্যের চরম উর্দ্ধোগতি ও পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার প্রাপ্ত বেতনের অর্থ দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না। ৫ বছর পর পর পে-স্কেল প্রদানের প্রথা চালু থাকলেও ২০১৫ সালের ৮ম পে-স্কেল প্রদানের পর দীর্ঘ ৭ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এ পর্যায়ে কর্মচারিদের ৯ম পে-স্কেলসহ ভাতাদির অসংগতি দূর করা প্রত্যাশিত । অনতিবিলম্বে সকল দপ্তর অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন করে বেতন ও পদবী বৈষম্য দুর করে পূর্বের ন্যায় টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পূনর্বহলসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রশ্নোত্তর পর্ব
প্রশ্ন: পে স্কেলের দাবী কি আদায় হবে?
উত্তর: পে স্কেল না হলেও সংশোধন এবং অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট হবে অথবা মহার্ঘ ভাতা হাসিল করতে হবে।
প্রশ্ন: আন্দোলনে কি দাবী আদায় হয়?
উত্তর: ইতোপূর্বে যতবার আদায় হয়েছে তা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই হয়েছে।