ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের মধ্যে যাদের একই কর্মস্থলে ০৩ বছরের অধিক কার্যকাল অতিবাহিত হয়েছে, তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন/বদলি নিয়ে কড়া নির্দেশনা জারি করেছে– Govt. Transfer Within 3 Years
৩ বছরের অধিক হলেই বদলি? হ্যাঁ। “তিন বৎসরের অধিককাল কর্মরত কোন কর্মচারীকে কোন অবস্থাতেই একই কর্মস্থলে একই শাখায় পদায়ন না করা উক্ত নির্দেশনার আলোকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কানুনগো, সার্ভেয়ার, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাগণের মধ্যে যে সমস্ত কর্মচারীদের একই কর্মস্থলে তিন বৎসরের অধিককাল অতিবাহিত হয়েছে, তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।
জনদুভোর্গ কমাতে বদলি কতটা কার্যকর হবে? মাঠ পর্যায়ে ভূমি পরিসেবায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং ভূমি পরিসেবায় জনদুর্ভোগ ও হয়রানি পরিহারের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কানুনগো, সার্ভেয়ার, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাগণের মধ্যে যে সকল কর্মচারীগণ একই কর্মস্থলে তিন বৎসরের অধিককাল কর্মরত আছেন, তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন/অন্যত্র বদলি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
স্বচ্ছতা আনতে বদলি? হ্যাঁ। ভূমির বিষয়টি আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সংশ্লিষ্ট। ফলে ভূমি ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব হওয়া জরুরি। এ লক্ষ্যে সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও সেবা প্রদান পদ্ধতি সহজীকরনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। সরকারি কর্মচারীগনের মাধমে এসব সেবা প্রদান করা হচ্ছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কতিপয় কর্মচারী একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত রয়েছেন। এতে কোন কোন কর্মচারীর বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উহা সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম অন্তরায়। ব্যবস্থাপনা ও জরিপ (Management and Settlement) বিভাগে নিয়োজিত কর্মচারীদের একই পদ কিংবা একই কর্মস্থলে তিন বছর মেয়াদ পূর্ণ হলে বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় সাধারণত অন্যত্র বদলি করার রেওয়াজ রয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ০৮-০৭-২০১৫ তারিখের 08.00.0000.013.35.031,2015-১৯১ নম্বর স্মারকে মাঠ পর্যায়ে একই পদে তিন বছরের অধিককাল যাবৎ নিয়োজিত কর্মচারীকে বাস্তব অবস্থাভেদে অন্যত্র বদলি করার নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ২৫/০১/২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ৩১.০০.০০০০.০৪৬.৬৮.০৫৯.১৪-৫৩ নম্বর পরিপত্রেও ৩ (তিন) বছরের অধিককাল একই কর্মস্থলে কর্মরত থাকা যাবে না মর্মে নির্দেশনা রয়েছে। এর পরেও মাঠ পর্যায়ে কোন কোন কর্মচারী বছরের পর বছর একই কর্মস্থলে অবস্থান করছেন যা কাম্য নয়।
ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ের ভূমি রাজস্ব প্রশাসন ও জরিপ অধিদপ্তরের আওতাধীন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদেরকে একই পদ কিংবা কর্মস্থল হতে অন্যত্র বদলির ক্ষেত্রে অনুসৃত নির্দেশনা।
বদলি শুধুমাত্র একটি অস্থায়ী সমাধান। যদি মূল সমস্যা সমাধান না হয়, তাহলে নতুন কর্মচারীও একই কাজ করতে পারে। যদি একটি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির সংস্কৃতি গড়ে উঠে থাকে, তাহলে বদলি একাই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারবে না। যদি বদলি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে হয়, তাহলে তা দুর্নীতির পরিমাণ বাড়াতেও পারে। যদি নতুন কর্মচারী যোগ্য না হয়, তাহলে তা দুর্নীতির পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।
Caption: minland.gov.bd
ভূমি অফিসে বদলির নির্দেশনা ২০২৪ । বদলির ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলি কর্তৃপক্ষকে মাথায় রাখতে হবে
- মাঠ পর্যায়ে ভূমি রাজস্ব প্রশাসন ও জরিপ বিভাগে কর্মরত কর্মচারীদের পর্যায়ক্রমে সকল বিষয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে;
- তিন বৎসরের অধিককালকর্মরত কোন কর্মচারীকেকোন অবস্থাতেই একই কর্মস্থলে একই শাখায় পদায়ন না করা;
- দুর্গম/ প্রতিকূল যোগাযোগসম্পন্ন এলাকায় কর্মরত কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর হলেই তাকে অন্যত্র বদলি করা যাবে;
- শারীরিক অসুস্থতা বা নৈতিক স্খলনজনিত বা সুনির্দিষ্ট / যুক্তিসঙ্গত কারণে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে কোন কর্মচারীকে অন্যত্র/আন্ত:জেলা বদলি করা হলে জেলা প্রশাসক ক্ষেত্রমতে বিভাগীয় কমিশনার বদলির কারণ ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে ভূমি মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবেন এবং
- জনস্বার্থে মন্ত্রণালয় যে কোন সময় যে কোন কর্মচারীকে বদলির ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে বদলি কতটা কার্যকর?
দুর্নীতি প্রতিরোধে বদলি কতটা কার্যকর, এটি একটি জটিল প্রশ্ন যার উত্তর সরল নয়। বদলি নিঃসন্দেহে দুর্নীতি প্রতিরোধের একটি উপায় হতে পারে, কিন্তু একাই এটি সমাধান নয়। নতুন কর্মকর্তার আগমন একটি প্রতিষ্ঠানে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপদ্ধতি আনতে পারে। বদলির ভয় কর্মচারীদের দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে। দীর্ঘদিন একই জায়গায় থাকা কর্মচারীরা প্রায়ই দুর্নীতির জালে জড়িয়ে পড়তে পারে। বদলি এই জাল ভাঙতে সাহায্য করতে পারে। বদলি জনগণের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করতে পারে।