বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

মহার্ঘ ভাতা সর্বশেষ খবর ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীগণ ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চায়?

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম গত বুধবার (১৮ জুন) সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের নিচে মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে আন্দোলন চলাকালে এ দাবি করেন।তার ভাষ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সচিবালয়ের ৪ নম্বর ভবনের সামনে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ হবে-সমাবেশ থেকে বিক্ষোভকারীরা জানান, আজকের (১৮ জুন) মধ্যে দাবি মেনে নিয়ে সংশোধিত অধ্যাদেশ বাতিল না করা হলে রবিবার (২২ জুন) থেকে লাগাতার ও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে-মহার্ঘ ভাতা সর্বশেষ খবর ২০২৫

কেন আবার মহার্ঘ ভাতা চাইছে? সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১০-১৫% যে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে তাতে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হউন এবং দ্রব্যমূল্যের সাথে সমন্বয় বিহীন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সচিবালয়ের আন্দোলনে দেশের সব সরকারি কর্মচারীদের সম্পৃক্ত করে কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আট বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। আলোচনার নামে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আস্থা ভঙ্গ করেছেন, বিশ্বাস নষ্ট করেছেন। আমরা চাই, আমাদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। এ ছাড়া যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলা রয়েছেন, তাদের তাড়াতে হবে।

তাদের মূল মন্তব্য ও কর্মসূচি কি? নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই, আমাদের ৫০ % মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক” এবং যদি মাত্রাতিরিক্ত অধ্যাদেশ না বাতিল করা হয়, তাহলে আগামী ২২ জুন থেকে কঠোর আন্দোলনে যাবেন। নিয়মিতভাবে তাদের কর্মসূচিতে উপস্হিত হওয়া কর্মচারীরা মনে করেন, দ্রব্যমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ৫০ % মহার্ঘ ভাতা একান্ত প্রয়োজন। ১১–২০ গ্রেডের কর্মচারীরা ৭ দফা দাবির অংশ হিসেবে ৫০ % মহার্ঘ ভাতা সহ নবম পে‑স্কেল বাস্তবায়নও দাবি করেছেন।

বর্তমান সরকারি সিদ্ধান্ত কি কর্মচারীরা নিতে চাচ্ছেনা না? না। তবে ৩ জুন অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যেখানে জানানো হয়েছে আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরে মহার্ঘ ভাতা না দিয়ে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রদান হবে। গ্রেড ১–৯ পর্যন্ত ১০ % এবং গ্রেড ১০–২০ পর্যন্ত ১৫ % উপবেতন প্রণোদনা হিসেবে পাবে, সর্বনিম্ন ১,০০০ টাকা (পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা) অর্থাৎ যে স্কিম আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে, তা ভিন্ন এবং ৫০ % দাবি মেনে নেওয়া হয়নি।

সরকার কেন পে স্কেল দিতে চায় না? পে স্কেলে অনেক অসংগতি রয়েছে। টাইমস্কেল বহাল করা উচিত। গ্রেড ব্যবধান ঠিক করা উচিত। পদোন্নতি ক্ষেত্রেও বৈষম্য রয়েছে। এসব বৈষম্য একটি ঠিক করতে গেলে আরেকটির সাথে সম্পর্কযুক্ত হওয়ার কারণে অন্যটিও ঠিক করতে হবে। মোট কথা পে স্কেল দেওয়া মানে পে কমিশন গঠন করা এবং অনেক ধরনের বিষয় পরিবর্তন করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় কম তাই তারা পে স্কেলের মত বড় ঝামেলায় যেতে চায় না। হ্যাঁ। তারা কিছু সংস্কার বা পরিবর্তন করে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন এবং তারা যে বাজে অবস্থার মধ্যে দিন পার করছেন তা সরকার জানে।

মহার্ঘ্য ভাতার সর্বশেষ আপডেট ২০২৫ । অর্থ বিভাগ হতে মহার্ঘ ভাতা নিয়ে কমিটি গঠন করা হলেও দেয়া হয়েছে প্রনোদনা।

হ্যাঁ, সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন ৫০ % মহার্ঘ ভাতার দাবি তুলেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা–কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো‑চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম গত ১৮ জুন সচিবালয়ের সামনে এই দাবি সর্বোচ্চ জোরে তুলে ধরেন

 

সূত্র: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব মহোদয় ও যমুনা টিভি

ইতোপূর্বে মহার্ঘ ভাতা কত দেওয়া হয়েছিল?

সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যকে অন্তর্ভর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে তাদের মূল বেতনের ২০% (বিশ শতাংশ) হারে মাসিক সর্বনিম্ন ১,৫০০/- (এক হাজার পাঁচশত টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬,০০০/- (ছয় হাজার) টাকা মহার্ঘ ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মূলত নিয়োগকারী বা মালিক (Employer) কর্তৃক নিয়োগকৃত কর্মচারীদেরকে (Employees) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ার সাথে জীবনযাপনে কুলিয়ে ওঠার জন্য যে বিশেষ ভাতা প্রদান করে তা-ই মহার্ঘ ভাতা । মূল বেতনের নির্দিষ্ট শতকরা অংশ বেতনের সাথে অতিরিক্ত প্রদান করা হয় । এটি প্রতি মাসেই দেয়া হয়ে থাকে । যেমন কারও মাসিক বেতন ১০,০০০ টাকা, আর মহার্ঘ ভাতা যদি হয় ২০% তাহলে তার বেতন দাঁড়াবে ২,০০০ টাকা । সরকারি বা বেসরকারি উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানে মহার্ঘ ভাতা দেয়া হয়। সরকার এখন আবার নতুন করে চিন্তা করছে। তবে এভাবে নতুন মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করলে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা খুব একটা আর্থিক সুবিধা ভোগ করবে না।

প্রনোদনা বাদ দিয়ে মহার্ঘ ভাতা চাইছে?

হ্যাঁ। সারাক্ষণিক মূল্যায়ন ও প্রেক্ষাপট দাবি করা হারে ৫০ % ভাতা না পেলে সরকারি কর্মচারীরা আরও কঠোর আন্দোলন শুরু করতে পারে—টেকনিক্যালি এই দাবি যেটি তুলে ধরা হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে সেটি গ্রহণযোগ্য হয়নি। বিশেষ প্রণোদনা স্কিম সরকারি এক ঢিল হিসেবে চালু হচ্ছে, কিন্তু তা কর্মচারীদের দাবির চেয়ে অনেকটা কম। সংক্ষেপে বলা যায় সরকারি কর্মচারীরা ৫০ % মহার্ঘ ভাতার দাবি তুলেছেন, তবে সরকার ১০–১৫ % “বিশেষ প্রণোদনা” দেবার সিদ্ধান্ত দিয়েছে, দিনাজ্য ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। যদি আপনার প্রশ্ন ‘সরকারি কর্মচারীরা ৫০ % ভাতা চাচ্ছে কি না’—উত্তর: হ্যাঁ, তারা দাবি করছে। কিন্তু সরকার সে দাবি মেনে নেয়নি।

সংক্ষেপে তুলনা

দিক

কর্মচারীদের দাবি

সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ব্যবস্থা

সুবিধার হার

৫০ % মহার্ঘ ভাতা

গ্রেড ১–৯: ১০ %, গ্রেড ১০–২০: ১৫ %

কার্যকর হওয়ার তারিখ

১ জুলাই ২০২৫

ন্যূনতম পরিমাণ

কর্মচারীদের জন্য ১,০০০ টাকা; পেনশনভোগীদের ৫০০ টাকা

সচিবালয়ে কি শুধু মহার্ঘ ভাতা নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে?

সচিবালয়ে চলা আন্দোলনের মুখ্য বিষয় হলো শুধু ৫০ % মহার্ঘ ভাতা নয়। আসলে এর মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবি। এই অধ্যাদেশে সরকারি কর্মচারীদের চার ধরনের আচরণকে অসদাচরণ হিসেবে ঘোষণা করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে। কর্মচারীরা একে “কালো আইন” ও “ফ্যাসিবাদী কালো আইন” বলে অভিহিত করেছে এবং এর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার দাবি করে চলেছে। কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি স্মারকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভের পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, প্রতিবাদ মেনে না নিলে আগামী ২২ জুন থেকে অথবা রবিবার থেকে “লাগাতার ও কঠোর আন্দোলন” চালাবে। দলবদ্ধ কর্মসূচি ও স্মারকলিপি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা একত্রে সচিবালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে: যেমন ২৪, ২৫, তারা ভূমি, আইন, বিদ্যুৎসহ একাধিক উপদেষ্টার কাছে শেষ পর্যন্ত পৌঁছেছে । ঐক্য ফোরাম জানিয়েছে, অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেবে। মূল দাবি ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করা এবং সহযোগী পদক্ষেপ স্মারকলিপি, বিক্ষোভ, মিছিল, কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা (২২ জুন বা রবিবার থেকে)। সহিত বহুদলীয় কর্মসূচি একাধিক মন্ত্রণালয় অংশগ্রহণ করেছে। আগামী দিনে জাতীয় স্তরে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি–কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। সচিবালয় কর্মচারীদের আন্দোলন এখন একটি সামগ্রিক ও রাজনৈতিক স্বরূপ ধারণ করেছে; মহার্ঘ ভাতা এই দাবির একটি মাত্র অংশ। তবে মূল চাকা গুটি হচ্ছে অধ্যাদেশ বাতিল ও শ্রেণিবদ্ধ ব্যবস্থা সম্পর্কে সরকারের আপত্তি। তাঁরা বলছেন–এখনই সেটা না হলে সংহত ও দীর্ঘমেয়াদী সমগ্র আন্দোলন চলবে।

বিশেষ সুবিধা প্রজ্ঞাপন ২০২৫ । একজন কর্মচারীর মোট বেতন বাড়বে ৫০০-২০০০ টাকা?

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে পোস্টের নিচে কমেন্টে করুন অথবা alaminmia.tangail@gmail.com ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

10 thoughts on “মহার্ঘ ভাতা সর্বশেষ খবর ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীগণ ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চায়?

  • চুক্তি ভিত্তিক যারা আছেন তারা কি মহার্ঘভাতা পাবেন?? জানাবেন ta hoke

  • মনে হয় না। পূর্বের আদেশে এ রকম ছিল না।

  • সবুজ

    মহার্ঘ কি ফেব্রুয়ারিতে হচ্ছে।

  • অবস্থার প্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে না ফেব্রুয়ারিতে হবে।

  • SM PREUL HASAN

    মহাঘ্য ভাতা সরকার বাহাদুর ঘোষনা দিলে।বাবা মাও পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু খানি ভালো থাকা যেতো।

  • এমপিও ভুক্ত চাকুরীজীবিরা কি মহার্ঘ ভাতা পাবে??

  • ১৭ তম স্কেল চাকুরীজিবীরা পাশাপাশী ডেন্টাল চেম্বার চালাতে পারবে যেহেতু চাকুরীর আগে ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেওয়া৷ বিডিএস ডাক্তার বসানোআছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *