পে-কমিশনে কর্মচারীদের প্রত্যাশা ২০২৫ । ১:৪ পদ্ধতিতে বেতন নির্ধারণ করলে কেমন হবে?
২০২৫ সালের পে-কমিশনের (নবম পে কমিশন) অন্যতম প্রত্যাশা হলো বেতন কাঠামোকে সহজ করা এবং ১:৪ অনুপাতে বেতন নির্ধারণ করা, যেখানে সর্বনিম্ন বেতন ৩৫,০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১,৪০,০০০ টাকা রাখার প্রস্তাব রয়েছে। এই পদ্ধতিতে বেতন নির্ধারণের ফলে ২০টি বিদ্যমান গ্রেড কমে ১২টিতে আসবে, যা প্রশাসনিক জটিলতা কমাবে এবং বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করবে বলে আশা করা হচ্ছে– পে-কমিশনে কর্মচারীদের প্রত্যাশা ২০২৫
১:৪ অনুপাত কেন? সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের লক্ষ্যে গঠিতব্য পে-কমিশনকে ঘিরে দেশজুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও প্রত্যাশার ঢেউ। বিশেষ করে, মুদ্রাস্ফীতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির এই সময়ে ন্যায্য ও টেকসই বেতন কাঠামো প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা। তাদের মূল প্রত্যাশাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ১:৪ পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে এই ব্যবধান কমিয়ে আনার দাবি জোরালো হচ্ছে। বর্তমানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বেতন স্কেল সর্বনিম্ন গ্রেডের কর্মচারীর তুলনায় অনেক বেশি। কর্মচারীদের মতে, এই বিশাল ব্যবধান অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরি করে এবং নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বাধা দেয়। ১:৪ অনুপাত চালু হলে উচ্চ এবং নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে, যা একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে সহায়ক হবে।
দাবী আদায় সংগঠনগুলো কি বলছে? বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন এই প্রস্তাবের পক্ষে তাদের জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেছে। তারা যুক্তি দেখাচ্ছেন যে, এই পদ্ধতি কার্যকর হলে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা, বিশেষ করে যারা চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণির পদে কর্মরত, তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। একই সাথে, এটি তাদের কাজের প্রতি আগ্রহ ও কর্মস্পৃহা বাড়াতেও সাহায্য করবে। তবে, এই প্রস্তাবের বাস্তবায়ন সহজ হবে না। সরকারের আর্থিক সক্ষমতা এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক বিষয়াদি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, কর্মচারীদের সকল দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং পে-কমিশন তার কার্যকারিতা চলাকালীন সময়ে সকল দিক বিবেচনা করে একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করবে। নতুন পে-কমিশনের সম্ভাব্য সুপারিশগুলো নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা ও কৌতূহল তুঙ্গে। ১:৪ অনুপাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো কি এই নতুন বেতন কাঠামোতে স্থান পাবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে কমিশনের চূড়ান্ত ঘোষণার জন্য।
গ্রেড সংখ্যা কমালে কি বেতন বৈষম্য কমবে? জি। বেতন বৈষম্য কমানোর মূল উদ্দেশ্য হলো উচ্চপদস্থ এবং নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের বেতনের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনা। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ২০টির বেশি গ্রেড বিদ্যমান। এই বিশাল সংখ্যক গ্রেডের কারণে প্রতিটি স্তরে বেতনের ব্যবধান তৈরি হয়, যা সামগ্রিকভাবে বৈষম্য বাড়ায়। যখন গ্রেড সংখ্যা কমানো হয়, তখন কয়েকটি কাছাকাছি গ্রেডকে একত্রিত করে একটি নতুন গ্রেড তৈরি করা হয়। গ্রেড একত্রিত হওয়ার কারণে বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীর বেতনের মধ্যকার ব্যবধান কমে আসে। উদাহরণস্বরূপ, যদি গ্রেড ৯, ১০, এবং ১১-কে একটি নতুন গ্রেডে আনা হয়, তবে এই তিনটি গ্রেডের কর্মচারীদের মধ্যে আর আলাদা বেতন থাকবে না, যা বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে। গ্রেড কমানো হলে কর্মচারীদের পদোন্নতির পথ সহজ হতে পারে। একটি নির্দিষ্ট গ্রেডে দীর্ঘ সময় আটকে থাকার পরিবর্তে তারা দ্রুত উপরের গ্রেডে যাওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। কম গ্রেড থাকলে বেতন নির্ধারণ ও পদোন্নতির মতো প্রশাসনিক কাজগুলো সহজ হয়। তবে, গ্রেড কমানোর ফলে কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি নতুন গ্রেডে উচ্চ বেতনের সাথে নিম্ন বেতনের গ্রেডকে একত্রিত করা হয়, তবে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। আবার, যদি দুটি গ্রেডকে একত্রিত করার সময় বেতনের পার্থক্য খুব বেশি হয়, তবে এটি নতুন করে অসন্তোষ তৈরি করতে পারে। সঠিকভাবে গ্রেড কমানো হলে তা অবশ্যই বেতন বৈষম্য কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তবে এই প্রক্রিয়াটি অবশ্যই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করা উচিত।
২০টি গ্রেডের পরিবর্তে ১২টি গ্রেড করার প্রস্তাব বেতন কাঠামোকে অনেক সহজ করবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের মধ্যে অনুপাত ১:৪ নির্ধারণ করা হলে বেতন-ভাতার বৈষম্য কমে আসবে। সম্ভাব্য ১২ গ্রেডের বেতন কাঠামো দেওয়া হলো, যেখানে সর্বনিম্ন বেতন ৩৫,০০০ টাকা এবং ১:৪ অনুপাতে সর্বোচ্চ বেতন নির্ধারিত হবে (অর্থাৎ সর্বোচ্চ বেতন ১,৪০,০০০ টাকা)।
মূল্যস্ফিতি বিবেচনায় বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট কত শতাংশ হওয়া উচিত? মূল্যস্ফীতি (inflation) মাথায় রেখে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট নির্ধারণ করা সরকারের জন্যই নয়, কর্মচারীদের জীবনের বাস্তব চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতনের জন্যও জরুরি। সাম্প্রতিক সরকারি সংখ্যা ও আন্তর্জাতিক মানদন্ড দেখে (BBS/Bangladesh Bank-এর সাম্প্রতিক CPI ও সংবাদ—জুলাই ২০২৫ ~ ৮.৫% এর কাছাকাছি; IMF ২০২৫ এ ১০% তত্ত্বাদি), এটা বলা যৌক্তিক যে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট কমপক্ষে বর্তমান বা গত ১২ মাসের CPI-র সমান হওয়া উচিত — অন্যথায় কর্মচারীদের বাস্তব ক্রয়ক্ষমতা প্রতি বছরে কমে যাবে।
১:৪ অনুপাত বজায় রাখা – সর্বনিম্ন বেতন ৩৫,০০০ এবং সর্বোচ্চ ১,৪০,০০০ । ১২টি গ্রেডে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি – যাতে ন্যায্যতা বজায় থাকে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী সমন্বয়যোগ্য – ভবিষ্যতে মুদ্রাস্ফীতি অনুযায়ী সহজে হালনাগাদ করা যাবে। প্রতিটি গ্রেডে ২০-৩০% ইনক্রিমেন্ট ধাপ – পদোন্নতি বা বার্ষিক বৃদ্ধিতে সুষ্ঠু অগ্রগতি।
প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো (১২ গ্রেডে, ১:৪ অনুপাতে) ২০২৫ । গ্রেড পদবি (উদাহরণ) মূল বেতন (টাকা)
- ১ম- সচিব/সিনিয়র কর্মকর্তা -১,৪০,০০০
- ২য়- অতিরিক্ত সচিব -১,৩০,০০০
- ৩য় -যুগ্ম সচিব- ১,২০,০০০
- ৪র্থ- উপসচিব- ১,১০,০০০
- ৫ম -সিনিয়র সহকারী সচিব / সমমান- ১,০০,০০০
- ৬ষ্ঠ- সহকারী সচিব / সমমান -৯০,০০০
- ৭ম- সিনিয়র কর্মকর্তা / সমমান -৮০,০০০
- ৮ম- কর্মকর্তা / সমমান -৭০,০০০
- ৯ম- জুনিয়র কর্মকর্তা / সমমান -৬২,০০০
- ১০ম- সহকারী / টেকনিক্যাল স্টাফ -৫৫,০০০
- ১১তম -অফিস সহকারী / ক্লারিক্যাল স্টাফ -৪৫,০০০
- ১২তম -অফিস সহায়ক / এমএলএসএস -৩৫,০০০
গ্রেড সংখ্যা কমালেই কি বৈষম্য করবে?
হ্যাঁ। বেতন কাঠামো সহজ হওয়ায় প্রশাসনিক জটিলতাও কমে যাবে, যা সামগ্রিক কর্মপরিবেশের উন্নতি ঘটাবে। কর্মচারীরা একটি সহজবোধ্য ও বাস্তবসম্মত নতুন বেতন কাঠামো আশা করছেন, যা জীবনযাত্রার ব্যয়ভার মেটাতে সক্ষম হবে। ২০টি গ্রেড থেকে কমিয়ে ১২টি গ্রেডে বেতন কাঠামো নির্ধারণের দাবি করা হয়েছে।সর্বনিম্ন বেতন ৩৫,০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১,৪০,০০০ টাকা এবং বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের প্রত্যাশা রয়েছে। সরকার সম্প্রতি নতুন পে কমিশন গঠন করেছে এবং এটি ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। কমিশন পিতা-মাতা সহ ছয় সদস্যের পরিবারের জীবনযাত্রার ব্যয়, বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বিবেচনা করে সুপারিশ প্রণয়ন করবে।
১. বেতন বৈষম্য হ্রাস: বর্তমানে থাকা ২০টির বেশি গ্রেডের বদলে ১২টি গ্রেড করা হলে, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের মধ্যেকার ব্যবধান কমে আসবে। কাছাকাছি গ্রেডগুলোকে একীভূত করার ফলে বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীর বেতনের পার্থক্য কমে যাবে, যা সামগ্রিকভাবে বেতন বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে।
| ২. পদোন্নতি ও কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি: কম গ্রেড থাকলে কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ বাড়তে পারে। একটি নির্দিষ্ট গ্রেডে দীর্ঘ সময় আটকে না থেকে তারা দ্রুত উপরের গ্রেডে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। এটি কর্মচারীদের মধ্যে কাজের প্রতি আগ্রহ এবং ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতে সহায়ক হবে। | ৩. প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস: গ্রেড সংখ্যা কমানোর ফলে বেতন নির্ধারণ, পদোন্নতি এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে যাবে। কম গ্রেড থাকায় নতুন বেতন কাঠামো তৈরি ও পরিচালনা করা সহজ হবে এবং সময়ও কম লাগবে। |
৪. নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য সুবিধা: গ্রেড সংখ্যা ১২টি করা হলে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, উচ্চ গ্রেডগুলোর সাথে তাদের গ্রেড একীভূত হলে তাদের বেতন তুলনামূলকভাবে বেশি বাড়বে। | ৫. চ্যালেঞ্জ এবং অসন্তোষ: গ্রেড কমানোর ফলে কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হতে পারে। যেমন, যদি দুটি গ্রেডকে একত্রিত করার সময় বেতনের পার্থক্য খুব বেশি হয়, তবে তা নতুন করে অসন্তোষ তৈরি করতে পারে। এছাড়াও, কিছু কর্মচারীর মধ্যে পদোন্নতির ধাপ কমে যাওয়ায় হতাশা তৈরি হতে পারে। | |
২০২৫ সাল নতুন প্লে স্কেল, কবে কার্যকর করা হবে,,
2026 সালের প্রথমার্ধে।
আলহামদুলিল্লাহ।
কিন্তু মাস্টার রোলদের তো ২০২৫ এর নীতি মালা বেতন দেওয়া হচ্ছে না।
তাদের ব্যাপারে সরকার সচেতন হলেও বড় কর্মকর্তারা বেতন বাড়াতে ২০২৫ এর নীতিমা মানতে নারাজ। এদিকে অস্থায়ী কর্মচারী হওয়ার কারণে তারা প্রতিবাদ করতে পারছে না। সকলকে বলবো মাস্টারদের সকলকে ২০২৫ নীতি মালার আয়ত্তে আনার জন্য সকল পৌরসভা গুলোর দিকে একটু নজর দিতে। কেন তাদের সাথে এ বৈষম্য হবে।
মাস্টাররোলদের কি হবে?
জানাবেন।
পৌরসভার মাস্টার রোলদের কি কোন দিনই বেতন বাড়বে না। সরকার বাড়ালো সকল সুবিধা দিলেও কর্মকর্তা রা বলে এ সু্যোগ চাইলে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হবে।
সরকার অডিড পাঠালে অডিড টাকা খেয়ে চলে যায়।
আমাকে একটু জানাবেন এ বিষয়ে।
এগুলো সরকারি দপ্তরের অসঙ্গতি।
পেনসনের টাকা নিয়ে কথা বললে উপকার হবে। বরতমানে ৫০% টাকা দিয়ে দেয়। ৫০% মাসিক কিস্তিতে দেয়। মাসিক কিস্তিতে যে টাকা দেয় ৫০% ব্যাংকে জমা রাখলে তার বেশি পাওয়া যায়
জি।