Pay Scale Implement Movement 2025 । পে স্কেল ও বকেয়া দাবিতে কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা?
দীর্ঘদিন ধরে বেতন বৈষম্য, পদোন্নতি ও নতুন পে স্কেল থেকে বঞ্চিত সরকারি কর্মচারীরা এবার তাদের দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলনের পথে হাঁটছেন। আগামী ১৭ অক্টোবর, রোজ শুক্রবার, ঢাকায় এক আলোচনা সভা ও পদযাত্রার মাধ্যমে এই আন্দোলনের সূচনা হবে।-Pay Scale Implement Movement
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মসূচিতে সকল সরকারি কর্মচারীকে নিজেদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বঞ্চনার অভিযোগ ও অর্থনৈতিক সংকট
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ১০ বছর ধরে সরকারি কর্মচারীরা দুটি পে স্কেল থেকে বঞ্চিত। এছাড়াও ৩টি টাইম স্কেল বাতিল, পদোন্নতি না হওয়া এবং ব্লক পোস্টের গ্রেড পরিবর্তন না হওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক স্বাক্ষরিত এক জরুরি নোটিশে বলা হয়েছে, “দ্রব্যমূল্য এখন আকাশচুম্বী, বেতনের টাকায় মাসের ১৫ দিন ঠিকমতো চলে না। কর্মচারীরা সবাই ঋণে জর্জরিত।” তারা অভিযোগ করেন, ৯ম পে কমিশন গঠনের পর থেকে নানা “তালবাহানা” চলছে।
নির্বাচনের আগেই গেজেট প্রকাশের দাবি
কর্মচারী নেতারা মনে করেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যদি নতুন পে স্কেলের প্রজ্ঞাপন জারি না হয়, তবে পরবর্তী সরকারের আমলে এই পে স্কেল পেতে আরও দীর্ঘ বিলম্ব হতে পারে।
আবদুল মালেক তার নোটিশে বলেন, “আমরা চাই এই সরকারই যাতে ডিসেম্বরে বা নির্বাচনের আগেই পে স্কেলের বৈধতা দিয়ে যান অর্থাৎ গেজেট করে যান।” এটিকেই তারা নিজেদের দাবি আদায়ের ‘শেষ সুযোগ’ হিসেবে দেখছেন।
১৭ অক্টোবর পদযাত্রা ও আলোচনা সভা
দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ১৭ অক্টোবর, শুক্রবার সকাল ১০ ঘটিকায়, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে (প্রেসক্লাবের সামনের প্রধান সড়কের বিপরীতে) আলোচনা সভা ও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কর্মচারীদের প্রতি তীব্র আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, “এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাই আপনারা উপস্থিত হয়ে নিজের দাবি বাস্তবায়ন করুন। আমরা যদি না আসি, তাহলে আগামী ৫ বছর চোখের পানি ফেলতে হবে।” তবে তারা সরকারকে সব রকম সহযোগিতা করেই শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায় করতে চান বলে জানিয়েছেন। এই কর্মসূচিতে সকল স্তরের কর্মচারীর সার্বিক সহযোগিতা ও উপস্থিতি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন।

ইতোপূর্বে ৮ দফা দাবি আদায়ে সরকারি কর্মচারীগণ এত বিশাল মানব বন্ধন করেনি। শুরুতে কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে শুরু করে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছে তারা। তাদের আন্দোলন যে, ন্যায্য এবং যুক্তিসঙ্গত বিভিন্ন জেলায় গড়ে উঠা সংগঠনগুলো তারই প্রমান রেখেছে আজ।

বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিসহ অনেকেই তাদের মূল্যবান বক্তব্য তুলে ধরেছে এবং আগামী ৭ মার্চ উত্থাপিত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে কঠিন থেকে কঠিনতর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১। ২০১৫ সালে প্রদত্ত ৮ম পে-স্কেলের সংশোধনসহ বেতন বৈষম্য নিরসন করে গ্রেড অনুযায়ী বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে। (ILO চুক্তি অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করতে হবে)
২। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩। সকল পদে পদোন্নতি বা ০৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। (ব্লক পোস্ট নিয়মিতকরণ করতে হবে)
৪। টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড পুর্ন:বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা বজায় রাখতে হবে।
৫। সচিবালয়ের ন্যায় পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে।
৬। সকল ভাতা বাজার চাহিদা অনুযায়ী সমন্বয় করতে হবে।
৭। নিম্ন বেতনভোগীদের জন্য রেশন, শতভাগ পেনশন চালুসহ পেনশন গ্র্যাচুইটি হার এক টাকা সমান পাঁচশত টাকা করা
৮. কাজের ধরন অনুযায়ী পদের নাম ও গ্রেট একীভূত করা।
যানবাহন চলাচলে কোন রকম বিঘ্ন না ঘটিয়ে যে, এত বড় মানববন্ধব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে পালন করা যায় তা সরকারি কর্মচারীগণ বুঝিয়ে দিয়েছেন।
সূত্র: ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম



