প্রেষণকালীন প্রাপ্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা প্রাপ্তির বিধান ২০২৫ । অধ্যয়ন জনিত প্রেষেণে থাকাকালীন কি শ্রান্তি ও বিনোদন সুবিধা পাওয়া যায়?
সরকারি চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ও ভাতা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা। এটি কর্মচারীদের কর্মজীবনের ক্লান্তি দূর করতে এবং নতুন উদ্যমে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করতে দেওয়া হয়।– প্রেষণকালীন প্রাপ্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা প্রাপ্তির বিধান ২০২৫
অধ্যয়ন ছুটিতে থাকলে কি শ্রান্তি বিনোদন পাওয়া যায়? না। জনাব ফরহাদ হোসেন, প্রভাষক (ব্যবস্থাপনা) বিগত 27/08/20২৪ খ্রিঃ তারিখ হতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী ০১ (এক) বছর মেয়াদি অধ্যয়নের নিমিত্তে অনুমোদিত প্রেষণে রয়েছেন। শিক্ষা ছুটির গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষা গ্ৰহণ করতে হবে বলে বিধান রয়েছে (বিএসআরপার্ট ১ এর বিধি ১৯৪)। এক্ষেত্রে তিনি শিক্ষা ছুটিকে প্রেষণ হিসাবে গণ্য করে ছুটি নিয়েছেন। ফলে ছুটিতে থাকা অবস্থায় পুনরায় শ্রান্তি বিনোদন ছুটি গ্রহণ করার সুযোগ নেই।
শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ও ভাতার নিয়ম কি? একজন সরকারি কর্মচারী প্রতি তিন বছর অন্তর ১৫ দিনের শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি প্রাপ্য হন। ভাতা এই ছুটির সাথে তিনি এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকেন। যোগ্যতা এই সুবিধা পেতে হলে একজন কর্মচারীকে অবশ্যই নিরবচ্ছিন্নভাবে তিন বছর সরকারি চাকরি সম্পন্ন করতে হবে। বাংলাদেশ চাকরি (বিনোদন ভাতা) বিধিমালা, ১৯৭৯ (Bangladesh Services (Recreation Allowance) Rules, 1979): এই বিধিমালাটিই শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা প্রদানের প্রধান আইনি ভিত্তি।নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯-এর বিধি ৩(১)(ii): এই বিধি অনুযায়ী ১৫ দিনের ছুটি মঞ্জুর করা হয়। অর্থ বিভাগের স্মারক: অর্থ বিভাগ কর্তৃক জারি করা বিভিন্ন স্মারক (যেমন: ১২/০৭/১৯৯৯ তারিখের ১৭৬ নং স্মারক) এই সুবিধা প্রদানের পদ্ধতি ও নিয়মাবলীকে আরও স্পষ্ট করে।
শুধু ভাতা মঞ্জুর করা যায় কি? না। সাধারণত, কর্মচারী তার দপ্তরের প্রধানের কাছে আবেদন করে এই ছুটি ও ভাতা মঞ্জুর করিয়ে থাকেন। বর্তমানে অনেক সরকারি দপ্তরে অনলাইনে (যেমন: MyGov-মাইগভ প্ল্যাটফর্মে) আবেদন করার সুবিধা রয়েছে। আবেদন করার সময় সাধারণত কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়, যেমন: ছুটির প্রাপ্যতার প্রমাণপত্র এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নথি। এই ছুটি সাধারণত গড় বেতনে (on average pay) মঞ্জুর করা হয়। শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা ছুটির বেতনের অতিরিক্ত হিসেবে দেওয়া হয়। যদি কোনো কর্মচারী সরকারি জরুরি কাজের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে এই ছুটি নিতে না পারেন, তাহলে তিনি পরবর্তীতে যখন ছুটি নেবেন, তখন এই ভাতাটি পেতে পারেন। তবে তার পরবর্তী শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি প্রাপ্যতার তারিখ অপরিবর্তিত থাকবে। এই সুবিধা শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। এই তথ্যগুলো সাধারণত সকল সরকারি কর্মচারীর জন্য প্রযোজ্য। তবে, ক্ষেত্র বিশেষে কিছু নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য নিয়মাবলীতে সামান্য ভিন্নতা থাকতে পারে। তাই, যেকোনো আবেদন করার আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিয়মাবলী ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরি।
শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ও ভাতা সংক্রান্ত মূল বিধিমালা এবং নিয়মাবলী নিচে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো। এই সুবিধাটি মূলত দুটি প্রধান আইনের অধীনে পরিচালিত হয় । নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯ (The Prescribed Leave Rules, 1959) । বাংলাদেশ চাকরি (বিনোদন ভাতা) বিধিমালা, ১৯৭৯ (Bangladesh Services (Recreation Allowance) Rules, 1979)। এই দুটি বিধিমালার সমন্বয় এবং অর্থ বিভাগের বিভিন্ন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ও ভাতার বর্তমান নিয়মাবলী গঠিত হয়েছে।
সরকারি কর্মচারী তার দপ্তর প্রধানের কাছে নির্ধারিত ফরমে ছুটির জন্য আবেদন করবেন। বর্তমানে অনেক দপ্তরে অনলাইনে (যেমন MyGov প্ল্যাটফর্ম) আবেদন করার সুবিধা রয়েছে। দপ্তর প্রধান আবেদনকারীর প্রাপ্যতার হিসাব যাচাই করে ছুটি ও ভাতা মঞ্জুর করবেন। সাধারণত, প্রাপ্যতার তারিখের পর যেকোনো সময় এই ছুটি ও ভাতা নেওয়া যায়। তবে, যদি জরুরি সরকারি কাজের কারণে যথাসময়ে ছুটি নেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে বিশেষ পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে পরবর্তীতেও ছুটি মঞ্জুর হতে পারে।

প্রেষণকালীন প্রাপ্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা প্রাপ্তির বিধান ২০২৫
নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯ (The Prescribed Leave Rules, 1959) । শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ও ভাতা সংক্রান্ত আইন, বিধি এবং নিয়মাবলী মূলত তিনটি প্রধান উৎসের ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
- সময়কাল: একজন স্থায়ী সরকারি কর্মচারী প্রতি তিন বছর পর পর শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ও ভাতা প্রাপ্য হন।
- যোগ্যতা: এই সুবিধা পাওয়ার জন্য কর্মচারীকে অবশ্যই নিরবচ্ছিন্নভাবে তিন বছর সরকারি চাকরি সম্পন্ন করতে হবে।
- ছুটির পরিমাণ: একজন কর্মচারী প্রতি তিন বছর অন্তর ১৫ দিনের গড় বেতনে (on average pay) শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি পান।
- ছুটির উদ্দেশ্য: এই ছুটি কর্মজীবনের ক্লান্তি দূর করতে এবং নতুন উদ্যমে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করতে দেওয়া হয়। এটি অন্যান্য সাধারণ ছুটির (যেমন: অর্জিত ছুটি) অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।
- ছুটি মঞ্জুর: ছুটি মঞ্জুর করার জন্য একজন কর্মচারীকে তার দপ্তরের প্রধানের কাছে আবেদন করতে হয়।
- ভূতাপেক্ষ দাবি: সাধারণত, শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ভূতাপেক্ষ (retrospectively) দাবি করা যায় না। এটি নির্দিষ্ট তিন বছরের মেয়াদের মধ্যে বা পরবর্তী মেয়াদের শুরুর আগে নিতে হয়। তবে, যদি জরুরি সরকারি কাজের কারণে যথাসময়ে ছুটি নেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে বিশেষ পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে পরবর্তীতে ছুটি মঞ্জুর হতে পারে।
- ভাতার পরিমাণ: শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটির সাথে একজন কর্মচারী এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকেন।
- ভাতা প্রদানের নিয়ম: এই ভাতাটি ছুটির বেতনের অতিরিক্ত হিসেবে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, ১৫ দিনের ছুটির জন্য একজন কর্মচারী ১৫ দিনের গড় বেতন এবং তার সাথে এক মাসের মূল বেতন সমান ভাতা পাবেন।
- কোড: এই ভাতা সাধারণত নির্ধারিত কোড (যেমন: 3111328) ব্যবহার করে পরিশোধ করা হয়।
- অব্যবহৃত ছুটি: যদি কোনো কর্মচারী তার প্রাপ্যতার তারিখে ছুটি না নেন, তবে তিনি পরবর্তী প্রাপ্যতার তারিখের পূর্বে যেকোনো সময় এটি নিতে পারেন। তবে এই ক্ষেত্রে তার পরবর্তী শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি প্রাপ্যতার তারিখ অপরিবর্তিত থাকবে।
- অনুমোদন প্রক্রিয়া: ছুটি ও ভাতা মঞ্জুর করার জন্য একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, যেখানে কর্মচারীর আবেদন, ছুটি প্রাপ্যতার হিসাব এবং দপ্তর প্রধানের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। বর্তমানে কিছু কিছু দপ্তরে অনলাইনে (যেমন: MyGov) আবেদন করার সুবিধা চালু হয়েছে। যদি কোনো কর্মচারী নির্ধারিত ছুটির সময় সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং তাই ছুটি নিতে না পারেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে তিনি এই ভাতা ও ছুটি পাবেন। কিন্তু তার পরবর্তী প্রাপ্যতার তারিখের হিসাব আগের মতোই থাকবে।
- এই আইন, বিধি ও স্মারকগুলি সরকারি চাকরির বিধিবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এর মাধ্যমে কর্মচারীদের কর্মজীবনের মানোন্নয়নের চেষ্টা করা হয়।
শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি কি ভূতাপেক্ষ দাবী করা যায়?
সরকারি চাকরির নিয়ম অনুযায়ী, শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি ভূতাপেক্ষ (retrospectively) দাবি করা যায় না। এই ছুটির মূল উদ্দেশ্য হলো কর্মজীবনের ক্লান্তি দূর করা এবং নতুন উদ্যমে কাজ করার জন্য একজন কর্মচারীকে সুযোগ দেওয়া। তাই, ছুটিটি কর্মজীবনে থাকার সময়ই নিতে হয়। তবে, কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। যদি একজন কর্মচারী যথাসময়ে ছুটির আবেদন করেন কিন্তু দাপ্তরিক জটিলতা বা অনুমোদনের বিলম্বের কারণে ছুটি নিতে না পারেন, তাহলে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে ভূতাপেক্ষ ছুটি মঞ্জুর করা যেতে পারে। এটি সাধারণত একটি ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা এবং এর জন্য সুস্পষ্ট কারণ ও অনুমোদন প্রয়োজন।একজন স্থায়ী সরকারি কর্মচারী প্রতি তিন বছর পর পর এই সুবিধাটি প্রাপ্য হন। ছুটির মেয়াদ হলো ১৫ দিন। ভাতা এর সাথে এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ভাতা প্রদান করা হয়। আইন এই সুবিধাটি “বাংলাদেশ সার্ভিসেস (বিনোদন ভাতা) বিধিমালা, ১৯৭৯” এবং “নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯”-এর অধীন পরিচালিত হয়। যদি কোনো কর্মচারী তার প্রাপ্যতার তারিখের মধ্যে ছুটি না নিতে পারেন, তবে তিনি পরবর্তী প্রাপ্যতার তারিখের পূর্বে যেকোনো সময় এটি নিতে পারেন। তবে এর জন্য অবশ্যই কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে। বকেয়া দাবি করার কোনো আইনি সুযোগ নেই, তবে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এর সমাধান হতে পারে।
| ১. নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯ (The Prescribed Leave Rules, 1959) | ২. বাংলাদেশ চাকরি (বিনোদন ভাতা) বিধিমালা, ১৯৭৯ (Bangladesh Services (Recreation Allowance) Rules, 1979) | ৩. অর্থ বিভাগের বিভিন্ন স্মারক ও প্রজ্ঞাপন, বিশেষত ১২/০৭/১৯৯৯ তারিখের ১৭৬ নং স্মারক |




