বার্ষিক বর্ধিত বেতনও বাঁচাতে পারেনি টাকার মূল্যমান ২০২৫ । ২০১৫ সালের কর্মীদের টাকার প্রকৃত মূল্য কমেছে ২৮%?
বাংলাদেশে টাকার অঙ্কে বেতন বাড়লেও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারায় ২০১৫ সালে যোগদানকারী কর্মীদের বেতনের প্রকৃত মূল্যমান প্রায় ২৮.০৭% কমে গেছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৫ সালের ২২,০০০/- টাকার বর্তমান মূল্যমান ৪১,৮১৫/- টাকায় পৌঁছালেও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে তাদের ক্রয়ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
বেতন বাড়ল ৯০ শতাংশ, মূল্যমান কমলো ২৮ শতাংশ
প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ২০১৫ সালে যারা ২২,০০০/- টাকা বেতনে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, বর্তমানে তাদের বেতন দাঁড়িয়েছে ৪১,৮১৫/- টাকায়। এই সময়ে বেতনের নিট বৃদ্ধি প্রায় ১৯,৮১৫/- টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৯০.০৭ শতাংশ।
তবে চমকপ্রদ তথ্য হলো, এই প্রায় ৯০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি সত্ত্বেও, কর্মীদের হাতে থাকা টাকার প্রকৃত মূল্য (Purchasing Power) কমেছে ২৮.০৭ শতাংশ। অর্থনীতির ভাষায়, মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে টাকার মূল্যমান এই পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে বর্তমানে ৪১,৮১৫/- টাকা দিয়ে ২০১৫ সালে ২২,০০০/- টাকা দিয়ে যে পরিমাণ পণ্য কেনা যেত, তার চেয়ে ২৮.০৭ শতাংশ কম পণ্য কেনা যাচ্ছে।
ক্রয়ক্ষমতার সংকটে স্থির আয়ের জনগোষ্ঠী
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে যে বেতন কাঠামোতে যে বর্ধিত অর্থ যোগ হয়েছে, তা সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির হারকে স্পর্শ করতে পারেনি। ২০১৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, বেতন বৃদ্ধি সেই তুলনায় যথেষ্ট ছিল না।
যদি বর্তমান ৪১,৮১৫/- টাকার প্রকৃত মূল্য ২৮.০৭ শতাংশ কমে যায়, তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায়, এই বেতন ২০১৫ সালের ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী মাত্র ১৫,৮২৪/- টাকার সমতুল্য (২২,০০০ টাকার ২৮.০৭% কমে যাওয়ায়)। অর্থাৎ, কর্মচারীরা কাগজে-কলমে বর্ধিত বেতন পেলেও কার্যত তাদের আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়েছে।
মুদ্রাস্ফীতির এই হার স্থির আয়ের সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষত খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষাক্ষেত্রে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির মুখে এই বিশাল অঙ্কের প্রকৃত মূল্য হ্রাস তাদের জীবনধারণকে কঠিন করে তুলেছে।
বিশ্লেষণ ও উদ্বেগ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিসংখ্যান দেশের উচ্চ এবং দীর্ঘমেয়াদী মুদ্রাস্ফীতির এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে। যদি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি ক্রমাগতভাবে মুদ্রাস্ফীতির হারের চেয়ে কম হয়, তবে তা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস করে এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ায়।
তারা পরামর্শ দিয়েছেন, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং একইসঙ্গে বেতন ও ভাতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেবল ‘নোমিনাল ইনক্রিমেন্ট’ না দেখে, ‘প্রকৃত মূল্য’ বজায় রাখার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্যথায়, কর্মজীবীদের মধ্যে হতাশা বাড়বে এবং দেশের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতার ওপরও এর প্রভাব পড়বে।

মুদ্রাস্ফীতির (Inflation) হার ব্যবহার করতে হবে, কারণ সময়ের সাথে সাথে টাকার মূল্যমান কমে যায় বা জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। যেহেতু নির্দিষ্টভাবে ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাই এই সময়ের উপর ভিত্তি করে একটি আনুমানিক হিসাব দেওয়া হলো।
গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য: এই হিসাবটি একটি আনুমানিক ধারণা, কারণ এটি মূল্যস্ফীতির সরকারি তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা পণ্যভেদে বা ব্যক্তির জীবনযাত্রার ব্যয়ের ওপর ভিন্ন হতে পারে।
বিশ্লেষণ
১. প্রয়োজনীয় তথ্য:
- আপনি যে নিউজের তথ্য দিয়েছেন, সেখানে বলা হয়েছে: ২০১৫ সালের ২২,০০০/- টাকার বর্তমান মূল্যমান (সম্ভাব্য ২০২৫ সালে) হয়েছে ৪১,৮১৫/- টাকা।
- অর্থাৎ, ২২,০০০ টাকার ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখতে এখন ৪১,৮১৫ টাকা প্রয়োজন।

ফলশ্রুতি
মুদ্রাস্ফীতির কারণে ২০১৫ সালের যে পণ্য আপনি ১০০ টাকা দিয়ে কিনতে পারতেন, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসের আশেপাশে সেই একই পণ্য কিনতে আপনার আনুমানিক প্রায় ১৯০ টাকা থেকে ১৯১ টাকার প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ, আপনার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, ২০১৫ সালের ১০০ টাকার ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখতে ২০২৫ সালে প্রায় ১৯০/- থেকে ১৯১/- টাকা প্রয়োজন।
২০১৫ সালে বেতন ১০,০০০ টাকা হলে এখন কত হওয়ার উচিত?
২০১৫ সালের ১০,০০০/- টাকার ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখতে ২০২৫ সালে কত বেতন হওয়া উচিত, তার একটি হিসাব নিচে দেওয়া হলো:
১. আপনার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার
আপনি প্রথম প্রশ্নে উল্লেখ করেছেন:
- ২০১৫ সালের বেতন: ২২,০০০/- টাকা
- বর্তমান (২০২৫ সালের কাছাকাছি) মূল্যমান: ৪১,৮১৫/- টাকা

সিদ্ধান্ত
আপনার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা যায়:
২০১৫ সালে যদি কারও বেতন ১০,০০০/- টাকা হয়ে থাকে, তবে জীবনযাত্রার ব্যয় বা মূল্যস্ফীতির হার অনুযায়ী ক্রয়ক্ষমতা অপরিবর্তিত রাখার জন্য ২০২৫ সালে তার বেতন হওয়া উচিত আনুমানিক ১৯,০০৭/- টাকা। যদি বর্তমান বেতন এর চেয়ে কম হয়, তার মানে তার প্রকৃত বেতন (Real Income) কমে গেছে।



