সরকারি কর্মচারীদের মতবিনিময় সভা ২০২৫ । সভা শেষে পে স্কেল নাকি ৫০% মহার্ঘ ভাতার দাবী?
সরকারি কর্মচারীরা সাধারণত চাকরির নিরাপত্তা, ন্যায্য বেতন ও ভাতা, পদোন্নতি, কাজের উপযুক্ত পরিবেশ, প্রশিক্ষণ এবং অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা চেয়ে থাকেন। এছাড়াও, তারা কাজের স্বীকৃতি, সম্মানজনক জীবনযাপন এবং পরিবারের জন্য সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাশা করেন– সরকারি কর্মচারীদের মতবিনিময় সভা ২০২৫
বিশেষ সুবিধা কি দাবী অনুসারে পেয়েছে? না। সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১০-১৫% যে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে তাতে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হউন এবং দ্রব্যমূল্যের সাথে সমন্বয় বিহীন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। একজন কর্মচারীর কত বেতন বাড়ছে চলুন দেখি ১ জুলাই ২০২৫ তারিখে মূল বেতন ১৭,৫২০ টাকা। ১১-২০ গ্রেডে জন্য ১৫% হারে বিশেষ সুবিধা আসে ২,৬২৮ টাকা। পূর্বের প্রাপ্য ১,০০০ টাকা বাদে অবশিষ্ট থাকে ১৬২৮ টাকা। মোট বিশেষ সুবিধা বৃদ্ধি ১,৬২৮ টাকা। ১০% টিকল কি? চলুন দেখি ১৭,৫২০*১০% = ১,৭২০ টাকা অর্থাৎ বিশেষ সুবিধা বা প্রনোদনা ১০% বৃদ্ধি পেল না।
কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈষম্য এতে বেড়েছে? হ্যাঁ। একজন সরকারি কর্মকর্তার মূল বেতন ৭১,২০০ টাকা। সে হিসেবে ৭১,২০০*১০% = ৭,১২০ টাকা। সেখানে যদি পূর্বে ৭১,২০০*৫% = ৩,৫৬০ টাকা। পূর্বে প্রনোদনা বা বিশেষ সুবিধা সমন্বয় করলে উচ্চ গ্রেডের বা ৪র্থ গ্রেডের একজন কর্মকর্তার বিশেষ সুবিধা বাড়বে ৭,১২০-৩,৫৬০ = ৩৫৬০ টাকা বাড়বে। শুধু তাই নয়, কর্মকর্তাদের প্রতি বছর বেতন বৃদ্ধি পেলে ইনক্রিমেন্টও বাড়বে এবং বিশেষ সুবিধাও বাড়বে।
পে স্কেল কেন দরকার? একটু মাথাটা খাটান প্লিজ। ১ম গ্রেডে ৭৮,০০০ টাকা কিন্তু ২০ তম গ্রেডে মাত্র ৮,২৫০ টাকা। এছাড়াও ১ম গ্রেডের উপরে আরও দুটি গ্রেড রয়েছে। গ্রেড ১- ১০ নং এর মোট পার্থক্য- ৬৫,৫০০ টাকা অপরদিকে গ্রেড ১১-২০ নং এর পার্থক্য মাত্র- ৪,২৫০ টাকা, বৈষম্য ৬৫,৫০০- ৪,২৫০= ৬১,২৫০ টাকা। সকল ডিপার্টমেন্টের সকল পদের কর্মচারীদের পদন্নোতি থাকতে হবে, পদোন্নতির পদ না থাকলে ৫ (পাঁচ) বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। ২০টা গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে ১২ টা গ্রেড করা হোক। টিফিন ভাতা উল্লেখ করে মাসে ২০০/- টাকা পেয়ে থাকি, ২০০/- টাকায় কয়দিন টিফিন খাওয়া যায়? প্রশ্নটি রইল নীতি নির্ধারকদের কাছে।
বিশেষ সুবিধা ও চাকরি অধ্যাদেশ দিনে দিনে বৈষম্য বাড়াচ্ছে? / চাকরি আইন সংশোধন, পে কমিশন গঠন ও ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান এখন সময়ের দাবী । ১০-১৫ বিশেষ সুবিধায় কর্মচারীগণ খুশি নয়।
বেতন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখার সমাধান কোথায়? ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে। এখন এ বিষয়ে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে নি।
Caption: Staff Seminar For Government. Staff Claim
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারি ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ এর মতবিনিময় সভা ২০২৫ । বারবার বৈষম্য দূর করার বিষয়ে দাবী উঠলেও কোন সূরাহা হয়নি
- সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রত্যাহার দাবী উঠেছে।
- কর্মচারীদের দেয়া ১৫% বিশেষ সুবিধা প্রজ্ঞাপন বাতিল করা দাবী করা হয়েছে।
- বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল প্রদানের লক্ষ্যে পে-কমিশন গঠনে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
- অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদানের দাবী উত্থাপিত হয়েছে।
- বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি অব্যাহত পদক্ষেপ নেয়ার দাবী করা হয়েছে।
পে কমিশন গঠন করলে সকল সমস্যা সমাধান হবে?
পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করত হবে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে। সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে। টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
আমার জুনিয়র আমার থেকে ১৮০০/- বিশেষ সুবিধার টাকা বেশি পাবে! এটা কিভাবে মেনে নিবো?
এসব মেনে নেয়া কঠিন। জুনিয়র বেশি সুবিধা পাবে। নতুন পে স্কেল ঘোষণা না করা পর্যন্ত এসব সমস্যার সমাধান হবে না।
১০ থেকে ২০ তম গ্রেডে কিছু সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করা দরকার, গ্রেড ভিত্তিতে যানবাহন ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা প্রদান, মেডিকেল ভাতা৫০০০/-, শিক্ষা ভাতা ৫০০০/-, টিফিন ভাতা ১০০০/- করা এখন সময়ের দাবী