বাংলাদেশে একটি সময় কোটা ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রেখেছে এবং বর্তমানে তা কমিয়ে আনা এখন সময়ের দাবী- ছাত্র -ছাত্রীগণ বা চাকরি প্রত্যাশীরা কোটা ব্যবস্থা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য রাজপথে আন্দোলন করছে-Total Quota for Govt. Staff 14-20 Grade
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ২০% পোষ্য কোটা প্রযোজ্য। এই কোটা সরকারি চাকরিজীবী বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এর সন্তানদের জন্য। পোষ্য কোটায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ, বাংলাদেশ রেলওয়ে, অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বা নিয়োগ পাওয়া যায়।
পোষ্য কোটা পাওয়ার যোগ্যতা কি? প্রার্থীর পিতা/মাতা সরকারি চাকরিজীবী বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হতে হবে। চাকরিজীবী পিতা/মাতার মৃত্যুর পরও সন্তানরা পোষ্য কোটার সুযোগ পেতে পারে। নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ করতে হবে। অনেকে মনে করেন পোষ্য কোটার মাধ্যমে মেধাবী প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়। কোটা সুযোগ নিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। কোটা ব্যবস্থার বিরোধীরা মনে করেন এটি বৈষম্য সৃষ্টি করে।
চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা কেন? বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে কোটা ব্যবস্থা প্রচলিত। মুক্তিযোদ্ধা, জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, নারী – এসব ক্ষেত্র থেকে নির্দিষ্ট শতাংশ পদ সংরক্ষণ করে রাখা হয় তাদের জন্য। কোটা ব্যবস্থার পক্ষে ও বিপক্ষে বিতর্ক চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ঐতিহাসিকভাবে বঞ্চিত, নিপীড়িত জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। দারিদ্র্য, বৈষম্য দূরীকরণে ভূমিকা রাখে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা রাষ্ট্রের প্রতি তাদের অবদানের স্বীকৃতি ও তাদের পরিবারের প্রতি নিরাপত্তাবোধ বৃদ্ধি করে।
জেনারেল চাকরিতে ৫৬% কোটা এবং প্রাইমারী ও অন্যান্য কিছু চাকরিতে ৮০% পর্যন্ত কোটা সংরক্ষিত । ফলে মেধাবীদের চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে
প্রতিবন্ধী কোটা কি বাড়তে পারে? পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে বেড়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ২০১৮ ও ২০২০ সালের নিয়োগ পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়া কেন অবৈধ হবে না এবং ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
Caption: info source
২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা । তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর চাকরির ক্ষেত্রে এখনও এই ৫৬% ই বহাল আছে শুধু দ্বিতীয় ও প্রথম শ্রেণীর চাকরির ক্ষেত্রে বাতিল করা হয়েছিল
- বীর মুক্তিযোদ্ধা (পরে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি) কোটা এর মধ্যে ৩০ শতাংশ।
- নারী কোটা ১০ শতাংশ।
- জেলা কোটা ১০ শতাংশ।
- ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ
- প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ১ শতাংশ পদ দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়।
- সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে কিন্তু ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর চাকরিতে এখনও বহাল রয়েছে।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৮০% কোটা?
হ্যাঁ। সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ এ বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষক পদে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা। এই তিন কোটার প্রতিটি ক্যাটাগরিতে অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ এর চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৩ বিধি ৭(ক) অনুযায়ী কোনো একটি উপজেলার মোট পদের ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পোষ্য ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা নির্ধারিত থাকে।আবার বিধি ৭(খ) অনুযায়ী নারী, পোষ্য ও পুরুষ- এই তিন ধরনের কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আবার চার ধরনের কোটা অনুসরণ করা হয়। এগুলো হলো- এতিমখানা নিবাসী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ৩০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৫ শতাংশ এবং আনসার ও ভিডিপি সদস্য ১০ শতাংশ। নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটায় এই চার ধরনের কোটা অনুসরণের পর প্রতিটিতে অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ মেধা কোটা থেকে পূরণ করার নিয়ম রয়েছে।
সরাসরি নিয়োগে এক নজরে বিভিন্ন কোটার হার।