১০ এপ্রিল, ১৯৭১ তারিখে “স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র” জারি করা হয় এবং ২৬ মার্চ, ১৯৭১ তারিখ হইতে তাহা কার্যকর করা হয়। উক্ত ঘোষণাপত্র দ্বারা রাষ্ট্রপতিকে প্রজাতন্ত্রের সকল নির্বাহী ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়।
উক্ত ক্ষমতাবলে সরকার ও রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি কতিপয় আদেশ জারি করেন। পরবর্তী পর্যায়ে স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ১১ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে বাংলাদেশ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করা হয়।
বাংলাদেশ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারির পর হইতে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে সংবিধান বলবৎ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সরকার ও রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং বাংলাদেশ অস্থায়ী সংবিধান আদেশবলে আরো কতিপয় আদেশ জারি করেন। উক্তরূপভাবে জারিকৃত সকল আদেশই রাষ্ট্রপতির আদেশ হিসাবে অভিহিত এবং এই সকল আদেশ সংসদ প্রণীত আইনের সমতুল্য ও সমমর্যাদা সম্পন্ন।
বিধি অর্থ কোন আইনের অধীনে বা আইনের দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রণীত বিধি এবং কোন আইনের অধীনে বিধি হিসাবে প্রণীত প্রবিধানও ইহার অন্তর্ভূক্ত।
সরকারের ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে প্রণীত বিধানই বিধি। মর্যাদা ও কার্যকারীতার দিক হইতে সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইন ও আদেশ এর পরই বিধির স্থান। সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের প্রয়োগিক ও পদ্ধতিগত দিকসমূহ বিধিতে বর্ণিত থাকে। সাধারণত: আইনে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বিধি প্রণয়ন করা হয়। বিধি প্রণয়নে কোন কর্তৃপক্ষ ক্ষমতাবান তাহাও সংশ্লিষ্ট আইনে উল্লেখ থাকে।
সংবিধানের উক্ত ১৩৩ অনুচ্ছেদের অধীনে সরকারী কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী সংক্রান্ত কোন পূর্নাঙ্গ আইন অদ্যাবধি প্রণীত না হওয়ায় রাষ্ট্রপতি উক্ত অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে চাকরি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিধি ও প্রবিধান প্রণয়ন করিয়াছেন।
আইনের অধীনে বিধি প্রণয়নের ক্ষেত্রে আইনের বিধানসমূহ কার্যকরকরণের পদ্ধতিসমূহ বিধিতে বর্ণিত থাকে। ইহাছাড়া আইনে যে সকল বিষয়ে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়, ঐ সকল বিষয় বিধিতে সন্নিবেশিত থাকে।
বিধিবদ্ধ আইনের অধীনে প্রণীত বিধি আইনের অংশ হিসাবে বিবেচিত এবং তদরূপভাবে প্রয়োগযোগ্য। আইনের বিধিানের অতিরিক্ত বা পরিপন্থী কোন বিধান বিধিতে সন্নিবেশিত করা হইলে তাহা বৈধ হিসাবে বিবেচিত হইবে না।
যে আইনের অধীনে বিধি প্রণীত, উক্ত আইনের সহিত বিধি অবশ্যই সঙ্গতিপূর্ণ হইতে হইবে।
মূল আইনের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ যে কোন বিধিই বাতিল বলিয়া গণ্য। মূল আইনের কোন বিধানকে বিধির বিধান দ্বারা অগ্রাহ্য করা যায় না।
বিধি প্রণয়ন প্রক্রিয়া:
প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়/ বিভাগ কোন বিধি প্রণয়নের প্রয়োজন মনে করিলে বিধির খসড়া প্রণয়ন করিবে এবং উহার সহিত অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগের সংশ্লিষ্টতা থাকিলে কার্য বিধিমালার বিধান অনুসারে উক্ত মন্ত্রণালয়/ বিভাগের সহিত পরামর্শ করিবে। ইহাছাড়া প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং কর্ম কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ করিবে। বিধিটি এস আর ও হিসাবে জারির ক্ষেত্রে অবশ্যই লেজিসলেভি ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং গ্রহণ করিতে হইবে। ভেটিংয়ের জন্য অবশ্যই প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর অনুমোদক্রমে উহার প্রেরণ করিতে হইবে না।