শাস্তি । সাময়িক বরখাস্ত । অপসারণ

দায়িত্বে অবহেলার কারণে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হয়ে গেল।

সরকারি চাকরি পেয়েছেন তো আর যাবে না, এ ধারণা ভুল। আপনি অপরাধ করলে শাস্তি হিসাবে আপনার চাকরি যেতেই পারে। সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা, ১৯৮৫ অনুসারে অসংখ্য মানুষের চাকরি চলে গেছে। এ রকম একটি নজিরই আমি উপস্থাপন করবো।

সরকারি কাজে দায়িত্বে অবহেলার জন্য আপনিও পেতে পারেন শাস্তি বা দন্ড কর্মচারী আচরণ বিধিমালা মোতাবেক।

হাইলাইটস:

  • সরকারি কাজে অবহেলা করলে গুরু দন্ড পেতে পারেন।
  • ১ বছরের জন্য ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • দায়িত্বে সচেতন না হলে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন।

চলুন একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরি যাওয়ার বিষয়টি পরিস্কার হওয়া যাক। 

স্থানীয় সরকার বিভাগের ১৬ মে ২০১৭ তারিখের ৪৬.০৬৭.০০৩.০০.০০.০০৩.২০১৩-৪২৪ নম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরিরর অবসান ঘটানো হয়েছে।

জনাব মো: সৈয়দুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) এলজিইডি, নবীগঞ্জ, জেলা হবিগঞ্জ জেলায় কর্মরত থাকাবস্থায় তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচীর অধীন নবীগঞ্জ উপজেলায় পানিউমদা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ বাস্তাবায়নে যথাযথ দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়:

যেহেতু, উক্ত বিভাগীয় মামলায় তাঁর ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়; এবং যেহেতু উক্ত বিভাগীয় মামলায় তাঁর দাখিলকৃত জবাব এবং ব্যক্তিগত শুনানির প্রদত্ত বক্তব্য সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় বিভাগীয় মামলায় বর্ণিত অভিযোগসমূহ তদন্ত করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়, এবং

যেহেতু, তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিলকৃত প্রতিবেদনে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা ১৯৮৫ এর ৩(বি) ও ৪(২) বিধিতে বর্ণিত অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে এবং

যেহেতু জনাব মো: সৈয়দুর রহমান এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ , তাঁর জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে প্রদত্ত বক্তব্য এবং তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন ও তৎপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তের দ্বিীয় জবাব পর্যালোচনায় জনাব মো: সৈয়দুর রহমান পানিউমদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের  ফুটিং (Footing) নির্মানে দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। তিনি ড্রইং ও ডিজাইন অনুসরণে রড বাইন্ডিং করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করেন নি। ঢালাই এর সময়ে উপস্থিত থাকেন ন। ফলে ঠিকাদার কম রড ব্যবহার করে ঢালাই সম্পন্ন করেছেন। জনাব মো: সৈয়দুর রহমান এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা, ১৯৮৫ এর ৩(বি) বিধিতে বর্ণিত অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

যেহেুত, আনীত অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন এবং অভিযুক্তের সকল জবাব ও দলিলপত্র পর্যালোচনা করে অপরাধের প্রকৃতি বিবেচনায় জনাব মো: সৈয়দুর রহমান উপজেলা প্রকৌশলী (চলিতি দায়িত্ব), এলজিইডি, নবীগঞ্জ, জেলা হবিগঞ্জ এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এর ৪(২) (ই) বিধিতে বর্ণিত লঘু দন্ড হিসেবে তাঁর বেতন স্কেললের নিম্নধাপে অবনমিত রাখার দন্ড ১ (এক) বছরের জন্য আরোপ করা হল। ০১ (এক) বছর পর তিনি বর্তমান স্কেলে (অর্থাৎ দন্ড প্রদানের পূর্বের স্কেলে ) বেতন ও বার্ষিক বর্ধিত বেতনাদি প্রাপ্য হবেন।

এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।  রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সচিব আবদুল মালেক।

প্রশ্নোত্তর পর্ব: 

  • প্রশ্ন:  ইনক্রিমেন্ট কি কর্তৃপক্ষ চাইলেই বন্ধ করে দিতে পারে?
  • উত্তর: না, বিভাগীয় মামলা হতে হয় এবং তদন্ত কমিটির মাধ্যমে লঘু দন্ড প্রদানের মাধ্যমেই ইনক্রিমেন্ট ০১ বা ০২ বছরের জন্য বন্ধ রাখা যাবে।
  • প্রশ্ন:  দায়িত্ব অবহেলায়ই ইনক্রিমেন্ট বন্ধ?
  • উত্তর: হ্যাঁ। লঘু দন্ড হিসাবে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হতে পারে।
  • প্রশ্ন:  দাপ্তরিক দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন না করলে?
  • উত্তর: সরকারি কর্মারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা-২০১৮ মোতাবেক দন্ড প্রাপ্ত হইবেন।

আপনি চাইলে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটির JPG কপি দেখতে পারেন: ডাউনলোড

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *