গণকর্মচারী (অবসর) আইন, ১৯৭৪ , ৯(২) ধারা মােতাবেক একজন সরকারী কর্মকর্তাকে চাকুরী পঁচিশ বছর, পূর্তিতে যে কোন সময় অবসর প্রদান সংক্রান্ত সরকারী সিদ্ধান্তের বিষয়ে মতামত সংক্ষেপে বিবৃত করুন।
অবসয় চার প্রকার। যথাঃ-
১। বাধ্যতামূলক অবসর
২। ঐজিক অবসর
৩। শাস্তিমূলক অবসর; এবং
৪। অসমর্থের কারণে অবসর।
বাধ্যতামূলক অবসর
গণকর্মচারী (অবসর) আইন, ১৯৭৪ এর ৯(২) ধারা মোতাবেক পঁচিশ বৎসর চাকুরী পূর্তিতে সরকার কোন সরকারী কর্মচারীকে যে কোন সময় কোনপ্রকার কারণ দর্শানাে ব্যতিরেকে জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ তাহাকে চাকুরী হইতে বাধ্যতামূলক অবসর দান করিতে পারে।
ঐচ্ছিক অবসর
গণকর্মচারী (অবসর) আইন, ১৯৭৪ এর ৯(১) ধারা মােতাবেক পঁচিশ বৎসর চায়ী পূর্তির পর যে কোন সময়ে একজন গণকর্মচারী তাহার অবসর গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করিবার ন্যূনতম ত্রিশ দিন পূর্বে নিয়ােগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত নোটিশ প্রদানপূর্বক অবসর গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ অভিপ্রায় একবার ব্যক্ত করিলে তাহা চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে এবং ইহার কোনরূপ পরিবর্তন বা প্রত্যাহারের অনুমতি প্রদান করা হইবে না।
ব্যাখ্যাঃ কোন সরকারী কর্মচারী যথা নিয়মে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের আবেদন করিলে নিয়ােগকারী কর্তৃপক্ষ তাহা প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবেন না। ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে যেচ্ছায় অবসর গ্রহণের আবেদন করা যাইবে।
শাস্তিমূলক অবসর
সরকারী কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এর বিধি-৪ এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়াদি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হইয়াছে। উক্ত বিধিতে বর্ণিত বিধানাবলী মােতাবেক নিয়ােগকারী কর্তৃপক্ষ কোন সরকারী কর্মচারীকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে চাকুরী হইতে ৪(৩)(বি) বিধি অনুযায়ী বাধ্যতামূলক অবসরদান করিতে পারেন। |
অসমর্থের কারণে অবসর
কোন সরকারী কর্মচারী শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতার কারণে প্রজাতন্ত্রের চাকুরীর জন্য অথবা যে চাকুরীতে নিয়ােজিত আছেন, উক্ত চাকুরীর জন্য স্থায়ীভাবে অক্ষম হইয়া পড়িলে অবসর গ্রহণের আবেদন করতে পারেন। তবে তাহা মেডিক্যাল বাের্ড কর্তৃক সার্টিফিকেট দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হইতে হইবে । [বি.এস,আর, পার্ট-১, বিধি-৩২১ দ্রষ্টব্য। গণকর্মচারী (অবসর) আইন, ১৯৭৪ এর ধারা ৯(২) কর্তৃপক্ষ পঁচিশ বৎসর চাকুরীর বয়স পূর্তির পর যে কোন সরকারী কর্মচারীকে যে কোন সময় কোন কারণ দর্শানাে ব্যতীত চাকুরী হইতে বাধ্যতামূলক অবসর দান করিতে পারেন। উক্ত আইনের ৯(২) ধারা মতে বাধ্যতামূলক অবসরদানের কোন কারণ কর্মচারীকে জানাইবার বিধান এই ধারায় নাই। শুধুমাত্র জনস্বার্থে কথাটির উল্লেখ আছে। জনস্বার্থ বলিতে কি বুঝায় তাহার কোন ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা উক্ত আইনের কোথাও দেওয়া নাই।
তবে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৫ অনুচ্ছেদের (২) (আ) ও (ই) তে বলা আছে যে, “(আ) কোন ব্যক্তিকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনমিত করিবার ক্ষমতা সম্পন্ন কর্তৃপক্ষের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতিয়মান হয় যে, কোন কারণে যাহা উক্ত কর্তৃপক্ষ লিপিবদ্ধ করিবেন- উক্ত ব্যক্তিকে কারণ দর্শাইবার সুযােগদান করা যুক্তিসংগতভাবে সম্ভব নহে; অথবা,
(ই) রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতিয়মান হয় যে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে উক্ত ব্যক্তিকে অনুরূপ সুযােগদান সমীচীন নহে।”
সুতরাং সংবিধানের উক্ত অনুচ্ছেদ পর্যালােচনান্তে দৃষ্ট হয় যে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ বিবেচনা করতঃ কোন কারণ দর্শানাে ব্যতীত পঁচিশ বৎসর চাকুরী পৃর্তির পর যে কোন সরকারী কর্মচারীকে চাকুরী হইতে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা যায়। তবে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখিতে হইবে যে জনস্বার্থে বাধ্যতামূলক অবসরদানের যথাযথ প্রয়ােগ না থাকিলে ন্যায়-বিচার ক্ষতিগ্রস্ত হইবে।
চাকুরী পঁচিশ বছর পূর্তিতে যে কোন সময় অবসর প্রদান সংক্রান্ত সরকারী সিদ্ধান্ত: ডাউনলোড