চিকিৎসা । আর্থিক সহায়তা

সকল সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযােদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত।

বীর মুক্তিযােদ্ধাগণের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থ বছরের শুরুতেই হাট-বাজারের ইজারালব্ধ আয়ের ৪% অর্থ হতে সংশ্লিষ্ট সকল হাসপাতালের অনুকূলে মুক্তিযােদ্ধার সংখ্যানুপাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে অর্থ বরাদ্দ করা হবে। বরাদ্দকৃত অর্থের ৭৫% ব্যয় হবার পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মন্ত্রণালয়কে চাহিদা প্রদান করা হলে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রাপ্য হবে। তহবিল সংকট বা অন্য কোন অজুহাতে অসুস্থ বীর মুক্তিযােদ্ধার চিকিৎসা সেবা প্রদান কোনভাবেই ব্যহত করা যাবে না।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

হিসাব অধিশাখা সচিবালয় সংযােগ সড়ক, ঢাকা। 

www.molwa.gov.bd

স্মারক নং-৪৮.০০.০০০০.০১০.৩৩.০২৯.২১-১২৯ তারিখ : ৯ জানুয়ারি ২০২২ খ্রি:

পরিপত্র

বিষয়ঃ সকল সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযােদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযােদ্ধাগণ জীবন সায়াহ্নে বিভিন্ন জটিল রােগে আক্রান্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে দেশের উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অবস্থিত সকল পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে বা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বা বিশেষায়িত হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের নিমিত্ত সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝােতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে প্রদত্ত নিয়মিত সরকারি বরাদ্দের বাইরে বীর মুক্তিযােদ্ধার চিকিৎসার প্রয়ােজনে অর্থ বছরের শুরুতে এ মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হবে এবং উক্ত অর্থ থেকে চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা হবে। বীর মুক্তিযােদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘বীর মুক্তিযােদ্ধাগণের কল্যাণে সরকারি হাট-বাজারসমূহের ইজারালব্ধ আয়ের ৪% অর্থ ব্যয় নীতিমালা, ২০২১’ এর আওতায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলাে:

০২। হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট www.molwa.gov.bd এ প্রকাশিত সমন্বিত তালিকাসহ খেতাবপ্রাপ্ত গেজেট বা যুদ্ধাহত গেজেটভূক্ত বীর মুক্তিযােদ্ধাগণ বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা পাবেন। উপজেলা, জেলা ও বিভাগ শহরের হাসপাতালে মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে সমন্বিত তালিকাসহ খেতাবপ্রাপ্ত গেজেট বা যুদ্ধাহত গেজেটভূক্ত বীর মুক্তিযােদ্ধাগণ ভর্তি হতে পারবেন। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় শহরে অবস্থিত সরকারি হাসপাতাল বা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান সম্ভব না হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সুপারিশে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে। তবে জরুরি চিকিৎসার প্রয়ােজন হলে বা বিশেষ প্রেক্ষাপটে যে কোন বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালে সরাসরি ভর্তি হওয়া যাবে। বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে নিমােক্ত হাসপাতালসমূহ বিবেচিত হবে:

(১) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, শাহবাগ, ঢাকা।

(২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা

(৩) শহীদ সােহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।

(৪) স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা।

(৫) জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা।

(৬) জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুর্নবাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকা।

(৭) জাতীয় কিডনী ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।

(৮) জাতীয় হৃদরােগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।

(৯) জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, শেরে বাংলা নগর ঢাকা।

(১০) জাতীয় বক্ষব্যধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা।

(১১) ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরােসাইন্স ও হাসপাতাল, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।

(১২) জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটও হাসপাতাল, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।

(১৩) শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, খুলনা।

(১৪) শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, গােপালগঞ্জ।

(১৫) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম।

(১৬) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ময়মনসিংহ।

(১৭) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী।

(১৮) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর।

(১৯) এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট।

(২০) শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল।

(২১) জাতীয় হৃদরােগ ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং গবেষণা ইনস্টিটিউট, মিরপুর, ঢাকা।

(২২) বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, শাহবাগ, ঢাকা।

উল্লেখ্য যে, আরও কোন নতুন সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতাল হলে উক্ত হাসপাতাল উল্লিখিত বিশেষায়িত হাসপাতালের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।

০৩। বীর মুক্তিযােদ্ধার চিকিৎসায় জনপ্রতি উপজেলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০,০০০/- টাকা, জেলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০,০০০/- টাকা, বিভাগীয় হাসপাতালের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫,০০০/- টাকা খরচ করা যাবে। বিশেষ ক্ষেত্রে সিভিল সার্জন বা পরিচালকের অনুমােদনক্রমে অতিরিক্ত ১০,০০০/- টাকা ব্যয় করা যাবে। জটিল রােগীর ক্ষেত্রে আয়ন-ব্যয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে উপজেলা বা জেলায় ৩০,০০০/- টাকা পর্যন্ত খরচ করা যাবে।

০৪। ভর্তিকালীন চিকিৎসার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রয়ােজনে নির্ধারিত এক বা একাধিক ঔষধের দোকান থেকে ঔষধ নেওয়া যাবে। মাসিক ভিত্তিক যাচাই করে বিল পরিশােধ করা যাবে। ঔষধের মূল্যে কোন ক্রমেই খুচড়া মূল্যের বেশী হবে না। ক্ষেত্র মতে হাসপাতাল ত্যাগের সময় ১৫ দিনের ঔষধ আগাম বীর মুক্তিযােদ্ধাদের ক্রয় করে দেওয়া যাবে। শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট www.molwa.gov.bd এ প্রকাশিত সমন্বিত তালিকাসহ খেতাবপ্রাপ্ত গেজেট বা যুদ্ধাহত গেজেটভূক্ত সকল জীবিত বীর মুক্তিযােদ্ধা বিনা পয়সায় সেবা পাবার অধিকারী হবেন।

০৫। চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ: বীর মুক্তিযােদ্ধাগণের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থ বছরের শুরুতেই হাট-বাজারের ইজারালব্ধ আয়ের ৪% অর্থ হতে সংশ্লিষ্ট সকল হাসপাতালের অনুকূলে মুক্তিযােদ্ধার সংখ্যানুপাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে অর্থ বরাদ্দ করা হবে। বরাদ্দকৃত অর্থের ৭৫% ব্যয় হবার পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মন্ত্রণালয়কে চাহিদা প্রদান করা হলে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রাপ্য হবে। তহবিল সংকট বা অন্য কোন অজুহাতে অসুস্থ বীর মুক্তিযােদ্ধার চিকিৎসা সেবা প্রদান কোনভাবেই ব্যহত করা যাবে না।

০৬। চিকিৎসা সেবার মান ও ব্যয় যাচাই: হাসপাতালে বীর মুক্তিযােদ্ধাকে সর্বোত্তমভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে কিনা বা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ বিধি বিধান অনুসরণ পূর্বক সঠিকভাবে ব্যয় করা হচ্ছে কিনা তা যাচাই বা নিরীক্ষা করা হবে। এ লক্ষ্যে উপজেলা, জেলা বা বিভাগীয় পর্যায়ে নিম্নরুপ কমিটি গঠন করা হলাে। উক্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা প্রদান এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা যাচাই পূর্বক এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে। প্রতি ৩(তিন) মাসে সভা বাধ্যতামূলক এবং বিশেষ কারনে ও যে কোন সময় সদস্য সচিব সভাপতির সাথে আলােচনা ক্রমে সভা আহবান করতে পারবে। 

০৮। আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা: বীর মুক্তিযােদ্ধাদের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ। নিম্নোক্ত ছকে বর্ণিত কর্মকর্তা আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন:

৯। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমােদনক্রমে এ পরিপত্র জারি করা হলাে।

(মাে: জাহাঙ্গীর আলম)

উপসচিব (হিসাব)

ফোন: ০২-২২৩৩৫৮৭৮৮

সকল সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযােদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত: ডাউনলোড

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *