স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বেতন ভাতাদি ২০২৫ । যেকোনো সময় চাকরি ছাড়লে সার্ভিস বেনিফিন পাওয়া যায়?
স্বায়ত্তশাসিত বা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি নিয়মে চলে এবং বেতন ভাতাদি প্রায় দ্বিগুন সরকারি প্রতিষ্ঠানের চেযে-পার্থক্য শুধু মাসিক পেনশন সুবিধা নাই-অন্যান্য সার্ভিস বেনিফিট এবং ছুটি ছাটা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতই পাওয়া যায়- ও হ্যাঁ, গ্র্যাচুইটির হিসাব কিছুটা ভিন্নি এবং যে কোন সময় চাকরি ছেড়ে দিলেও সার্ভিস বেনিফিট পাওয়া যায়–স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বেতন ভাতাদি ২০২৫
স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান কি? –স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হল এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা তার নিজস্ব নিয়ম-কানুন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাজ করে, যেখানে সরকারের বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ বা হস্তক্ষেপ খুব কম থাকে। অন্যভাবে বলতে গেলে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেমন: বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, ইত্যাদি। এছাড়াও ব্যাংক, আর্থিক সংস্থা, বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা, ইত্যাদি, বিদ্যুৎ কোম্পানি সহ কোল মাইন কোম্পানিগুলো স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। বোর্ড, কর্পোরেশন, লিমিটেড ও সংস্থা লেখা প্রতিষ্ঠান গুলোও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। স্বায়ত্তশাসন বলতে মূলত একটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বশাসিত ক্ষমতা বা অধিকারকে বোঝায়, যা তাকে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে কিছুটা দূরে রাখে। এই স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানকে তার নিজস্ব নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করতে এবং তার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে। এখানে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো: বাংলাদেশ ব্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
নেসকো কি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান? নেসকো (NESCO) বা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি পিএলসি একটি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান. এটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অধীন একটি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা। নেসকো ২০০৫ সালে গঠিত হয়েছিল। এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও, এটি স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালিত হয়। নেসকো পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদ সরকার কর্তৃক মনোনীত পরিচালক দ্বারা গঠিত. পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনা অনুযায়ী, একটি ব্যবস্থাপনা দল দ্বারা কৌশলগত কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যার প্রধান হলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালক। নেসকো উত্তরাঞ্চলের ১৬ টি জেলা ও ৩৯ টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
সার্ভিস বেনিফিট কিভাবে হিসাব করা হয়? স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে (যেখানে পেনশন চালু নাই) চাকুরি করলে আনুতোষিকের সুবিধা পাবেন। ধরি, কারও মূল বেতন ৪৪০১০ টাকা; চাকুরির বয়স ২৮ বছর বা ২৮ বছর ৭ মাস তার আনুতোষিক হবে ( ৪৪০১০ * ২৮ * ২) মোট ২৪,৬৪,৫৬০ টাকা। প্রতিষ্ঠানের মুনাফার অংশ পেয়ে থাকেন চাকুরিকালীন। এ সকল প্রতিষ্ঠানে সাধারণত চেয়ারম্যান বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্যান্য আরও কিছু সুবিধা প্রদান করে থাকেন। ২৭ বছর ৫ মাস ১৭ দিনের চাকরি কে প্রমার্জন করে ২৮ বছর ধরা হয়।
স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে একজন সহকারী প্রকৌশলীর বেতন কত? / ৫১,০০০ টাকা মূল বেতন ছাড়াও বাড়ি ভাড়া, যাতায়াত ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, মোবাইল ভাতা, টিফিন/লাঞ্চ ভাতা, বিদ্যুৎ ব্যবহার ভাতা ও ঝুঁকি ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠানে কোম্পানির লভ্যাংশ হতেও অর্থ প্রদান করা হয়।
যে কোন সময় চাকরি ছাড়লেই গ্র্যাচুইটি, সিপিএফ এবং লাম্পগ্র্যান্ট বা ছুটি বিক্রির টাকা পাওয়া যায়। তবে যে কোন সময় বলতে ঐ প্রতিষ্ঠানের বিধি মোতাবেক চাকরি স্থায়ীকরণ প্রিরিয়ড অর্থাৎ ২-৩ বছর সার্ভিস লেনথ হলেই কেবল কোম্পানি সুবিধা পাওয়া যায়।
Caption: Nesco Recruitment Order pdf Download
স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সুবিধাদি ২০২৫ । এসব প্রতিষ্ঠানে জিপিএফ সুবিধার পরিবর্তে সিপিএফ সুবিধা থাকে
- একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী মূল বেতনের ১০-৩০ শতাংশ ভবিষ্য তহবিলে জমা করতে পারেন, এখানে ব্যাংক কোন অনুদান প্রদান করে না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চাকুরী শেষে তাকে সমুদয় অর্থ মুনাফাসহ প্রদান করে থাকে। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা ভবিষ্য তহবিলে তার মূল বেতনের ১০% জমা রাখতে পারেন; এক্ষেত্রে ব্যাংকও ৮-১০% অর্থ অনুদান হিসেবে প্রদান করে (এবং এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ইন্টারেস্ট মাঝে মাঝেই কমানো হয়!)।
-
একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা সার্ভিস লাইফের দিগুন (২৫ বছর চাকুরী হলে ৫০, ৩০ বছর চাকুরী হলে ৬০) মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ আনুতোষিক বাবদ প্রাপ্ত হবেন। যা একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী কর্মকর্তা তুলনায় অনেক কম। অর্থাৎ একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা ২০-৩০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কম প্রাপ্ত হবেন।
-
একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী তার প্রাপ্ত মাসিক পেনশন যা এককালীন জমা করলে ৪০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রাপ্ত হন। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে পেনশনের কোন সুবিধাই রাখা হয়নি। ফলে একজন সিপিএফ ভোগী ৪০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কম প্রাপ্ত হবেন।
-
একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগীর ক্ষেত্রে সুপার এনুয়্যেশন তহবিলে ৩০% সঞ্চিতি রাখা হয়। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে গ্রাচুইটি তহবিলে ১৫% সঞ্চিতি রাখা হয়। এক্ষেত্রে ১০% অনুদান সহ হিসেব করলে মোট ৫% সঞ্চিতি কম রাখা হয়।
-
সার্বিক বিবেচনায় দেখা যায় যে, একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগীর তুলনায় ২৫-৩০ বছর চাকুরী শেষে দেড়গুণ কম আর্থিক সুবিধা প্রাপ্ত হন যা প্রত্যক্ষ বৈষম্য।
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি শেষে কি কি পাওয়া যায়??
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি শেষ করার পর সাধারণত গ্র্যাচুইটি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পাওয়া যায়। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে পেনশন বা অন্যান্য সুবিধা থাকতে পারে। গ্র্যাচুইটি একটি এককালীন অর্থ যা চাকরি শেষ করার সময় কর্মীকে দেওয়া হয়। গ্র্যাচুইটি হিসাব করার একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে, যেখানে কর্মীর শেষ বেতনের উপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়। প্রভিডেন্ট ফান্ড একটি সঞ্চয় তহবিল, যেখানে কর্মীর বেতন থেকে কিছু অংশ কেটে রাখা হয় এবং প্রতিষ্ঠানও কিছু অর্থ যোগ করে। চাকরি শেষ করার পর এই তহবিলের টাকা কর্মীর হাতে দেওয়া হয়। পেনশন কিছু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেনশন ব্যবস্থা থাকতে পারে, যেখানে চাকরি শেষ করার পর কর্মীকে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়। অন্যান্য সুবিধা কিছু ক্ষেত্রে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্মীর জন্য অন্যান্য সুবিধা যেমন স্বাস্থ্য বীমা বা অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখতে পারে।স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সময় নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১ জুলাইয়ের পর যোগদানকারী কর্মীদের জন্য বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে। তাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হতে হতে পারে।