EID Mubarak Pic 2025 । ১০টি ঈদ মোবারক গ্রিটিংস কার্ড কোথায় পাবেন?
ঈদ মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। “ঈদ” একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ “উৎসব” বা “আনন্দ”। বছরে মুসলমানরা দুটি প্রধান ঈদ উদযাপন করে থাকেন: ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। এই উৎসব দুটি বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের জন্য আনন্দ, কৃতজ্ঞতা এবং ভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে আসে – EID Mubarak Pic 2025
ঈদুল আজহা কি? ঈদুল আজহা, যা “কোরবানির ঈদ” নামে পরিচিত, ইসলামি ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ মাস জিলহজের দশম তারিখে উদযাপিত হয়। এই ঈদটি হজরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর পুত্র হজরত ইসমাইল (আঃ)-কে আল্লাহর আদেশে কোরবানি করার অবিস্মরণীয় ত্যাগের মহিমাকে স্মরণ করে পালন করা হয়। এই দিনে সামর্থ্যবান মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি করেন। কোরবানির মাংসের একটি অংশ নিজেদের জন্য রাখা হয়, এক অংশ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দেওয়া হয় এবং বাকি অংশ গরিব-দুঃখীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এই ত্যাগের মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের ভেতরের পশুত্বকে বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। ঈদুল ফিতরের মতো এই ঈদেও সকালে নামাজ পড়া হয় এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়। উভয় ঈদই বিশ্ব মুসলিমের জন্য এক মহামিলনের সুযোগ করে দেয়। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলে এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন এবং একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেন। ঈদ সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে এবং মানুষে মানুষে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দেয়।
কোরবানীর ঈদে করণীয় কি? কোরবানীর ঈদ বা ঈদুল আজহা মুসলিমদের জন্য শুধু একটি উৎসবই নয়, বরং এটি ত্যাগ, আত্মসমর্পণ এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের এক মহান সুযোগ। এই দিন এবং এর পূর্বাপর সময়ে একজন মুসলমানের বেশ কিছু করণীয় রয়েছে। ঈদুল আজহার প্রধান করণীয়গুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়: ঈদের দিনের সুন্নত আমল- ঈদের দিন সকালে বেশ কিছু সুন্নত কাজ রয়েছে যা পালন করা উত্তম: গোসল করা: ঈদের দিন সকালে ভালোভাবে গোসল করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া। উত্তম পোশাক পরা: নিজের সাধ্য অনুযায়ী সবচেয়ে সুন্দর ও পরিষ্কার পোশাক পরা। নতুন পোশাক হওয়া আবশ্যক নয়। সুগন্ধি ব্যবহার করা: পুরুষদের জন্য সুগন্ধি বা আতর ব্যবহার করা সুন্নত। নামাজের আগে কিছু না খাওয়া: ঈদুল ফিতরের সুন্নত হলো নামাজের আগে মিষ্টি কিছু খাওয়া, কিন্তু ঈদুল আজহার সুন্নত হলো নামাজের আগে কিছু না খেয়ে কোরবানীর পর নিজের পশুর মাংস দিয়ে প্রথম আহার শুরু করা। ঈদগাহে যাওয়া ও আসা: পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া এবং এক রাস্তা দিয়ে গিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসা সুন্নত। তাকবীর পাঠ করা: ঈদগাহে যাওয়ার সময় উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করা। তাকবীরটি হলো: اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ। অর্থ: আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ, আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, এবং আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ, আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ, আর সকল প্রশংসা আল্লাহরই জন্য। ঈদের নামাজ আদায় করা: ঈদগাহে গিয়ে জামাতের সাথে দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ আদায় করা এবং খুতবা শোনা। শুভেচ্ছা বিনিময়: নামাজ শেষে একে অপরের সাথে “ঈদ মোবারক” বা “তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম” (আল্লাহ আমাদের ও আপনার পক্ষ থেকে কবুল করুন) বলে শুভেচ্ছা বিনিময় করা।
ঈদের দিন করণীয় ২০২৫ / ওয়াজিব হলো এমন একটি বিধান যা পালন করা আবশ্যক এবং এটি ফরজের কাছাকাছি। বিনা কারণে কোনো সামর্থ্যবান ব্যক্তি ওয়াজিব তরক করলে বা ছেড়ে দিলে তিনি গুনাহগার হবেন।
কুরবানী করা কি ফরজ? না, অধিকাংশ ইসলামিক স্কলারদের মতে কুরবানী করা ফরজ নয়, তবে এর হুকুম নিয়ে বিভিন্ন মাযহাবে কিছুটা ভিন্নমত রয়েছে। হানাফী মাযহাব অনুযায়ী, সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ এই উপমহাদেশের অধিকাংশ মুসলমান হানাফী মাযহাব অনুসরণ করেন। তাই এই অঞ্চলে কুরবানীকে একটি আবশ্যকীয় ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়।
Caption: EID Picture Sample
ঈদ শুভেচ্ছা ২০২৫ । ঈদের দিন কি লিখে মেসেজ পাঠাবেন?
- 🌙✨ ঈদ মোবারক! চাঁদের আলোয় মুখরিত হোক তোমার জীবন, গ্রামের পুকুর পাড়ে হোক আনন্দের মিলন! ঈদের এই দিনে হৃদয় ভরে উঠুক ভালোবাসায়।
- 🕌🌾 ঈদের শুভেচ্ছা! নরম হাওয়ায় ভেসে আসুক ঈদের খুশি, মানুষের মুখে ফুটে উঠুক আনন্দের হাসি। সবাইকে জানাই প্রাণঢালা ঈদ মোবারক।
- 🌙🌙🌙 চাঁদ উঠেছে, ঈদ এসেছে! নতুন জামা, সেমাইয়ের গন্ধ, গ্রামের মাঠে হাসিমুখ—সবই একসাথে ঈদের আনন্দ। তোমাকে ও তোমার পরিবারকে ঈদ মোবারক!
- 🌾🏡 ঈদ মানেই ফিরে যাওয়া শেকড়ে… গ্রামের পথে হাঁটা, ছোটবেলার ঈদগাহ, হৃদয়ে জেগে উঠুক সেই মধুর স্মৃতি। ঈদ মোবারক!
- 🌙🕌🎉 আনন্দ, ভালোবাসা ও মিলনের দিন — ঈদ। বন্ধন হোক আরও মজবুত, সব দূরত্ব ঘুঁচিয়ে দিক এই পবিত্র দিনটি। ঈদ মোবারক!
- 🏞️🌙 চলো ঈদের সকালে গ্রামের ঈদগাহে যাই, সবার সাথে একসাথে নামাজ পড়ি, আর হাসিমুখে বলি—ঈদ মোবারক ভাই!
- 🌜🕌 চাঁদের হাসিতে শুরু হোক ঈদের গান, প্রতিটি মুখে থাকুক শান্তির প্রাণ। সবাইকে জানাই হৃদয়ের গভীর থেকে ঈদ মোবারক।
- 🌾🍃 ঈদের দিনে হৃদয় হোক কোমল, গ্রামের খোলা প্রান্তরে ছুটে চলুক আনন্দের ঢল। তোমাকে আর তোমার পরিবারকে জানাই ঈদ মোবারক।
- 🕌🌙👨👩👧👦 পরিবার, বন্ধু আর প্রতিবেশী মিলে হোক ঈদ পূর্ণতা। ভালোবাসা আর ক্ষমায় ভরে উঠুক এই পবিত্র সময়। ঈদ মোবারক!
- 🏡🌅 সূর্যোদয়ের সাথে জেগে উঠুক নতুন আশা, চাঁদনী রাতে ফুটে উঠুক ভালোবাসার ভাষা। গ্রামের পথ ধরে হেঁটে আসুক শান্তি—ঈদ মোবারক!
কোরবানীর বিষয়ে করণীয় কি?
কোরবানীর পশু: কোরবানীর পশু হতে হবে সুস্থ, সবল এবং ত্রুটিমুক্ত। উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা দিয়ে কোরবানী করা যায়। কোরবানীর সময়: ঈদের নামাজের পর থেকে জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত কোরবানী করা যায়। তবে ঈদের দিন নামাজ পড়েই কোরবানী করা উত্তম। কোরবানীদাতা সম্ভব হলে নিজ হাতেই পশু জবাই করবেন। নিজে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে জবাই করানো যাবে, তবে সামনে উপস্থিত থাকা ভালো। জবাই করার সময় ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হবে এবং পশুকে অপ্রয়োজনীয় কষ্ট দেওয়া যাবে না। মাংস বন্টন: কোরবানীর মাংসকে সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করা মুস্তাহাব বা উত্তম: এক ভাগ: নিজের ও পরিবারের জন্য। দ্বিতীয় ভাগ: আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জন্য। তৃতীয় ভাগ: সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জন্য। এই বন্টনের মূল উদ্দেশ্য হলো, ঈদের আনন্দ যেন ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলে মিলে উপভোগ করতে পারে।
কাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব?হানাফী মাযহাব অনুসারে, কোনো মুসলমান যদি ঈদুল আজহার দিনগুলোতে (১০, ১১ ও ১২ই জিলহজ) নিম্নোক্ত শর্তগুলো পূরণ করেন, তবে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব: | নেসাব কী? নেসাব হলো সাড়ে সাত (৭.৫) তোলা/ভরি সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) তোলা/ভরি রুপা, কিংবা এর সমমূল্যের নগদ অর্থ, ব্যবসায়িক পণ্য বা অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। | যার কাছে এই পরিমাণ সম্পদ থাকবে, তাকেই সামর্থ্যবান বা সাহেব-এ-নেসাব ধরা হয় এবং তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়। |